উঠোনে উঠে এসেছে কপোতাক্ষ নদ!



রফিকুল ইসলাম মন্টু, স্পেশালিস্ট রাইটার
ডুবন্ত গ্রাম লেবুবুনিয়া/ ছবি: র, ই, মন্টু

ডুবন্ত গ্রাম লেবুবুনিয়া/ ছবি: র, ই, মন্টু

  • Font increase
  • Font Decrease

‘সতত, হে নদ, তুমি পড় মোর মনে! সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।’ কবির সেই বিখ্যাত কবিতাখানির মতোই লেবুবুনিয়ার মানুষের মনে সতত কপোতাক্ষ নদ। তবে কাব্যে নয়, প্রলয়ে। কপোতাক্ষ নদ যেন মহাপ্রলয় নিয়ে উঠে এসেছে বাড়ির উঠোনে। পুকুর, ডোবা, খোলা মাঠ, চলার পথ, পানির কল— সব ডুবিয়ে নদ উঁকি দিয়েছে ঘরের চৌকাঠে। থই থই জলরাশি ঘরের চারিদিকে। চৌকাঠ পেরিয়ে ঘরের বাইরে বেরোলে এতটুকু শুকনো জায়গা পাওয়া মুসকিল। হাঁটু কাদাপানি পেরিয়ে যেতে হয় এক ঘর থেকে অন্য ঘরে। আর বাইরে কোথাও যেতে হলে একমাত্র ভরসা নৌকা।

ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকোর গলুই ধাক্কা খেল লেবুবুনিয়া গ্রামের আবদুল জলিল গাজীর উঠোনে। ঠিক নদী পেরিয়েই উঠোন। তবে সবকিছু পানিতে ডুবে থাকায় বোঝার উপায় নেই কোথায় কী! উঠোন জুড়ে শেকড়শুদ্ধ রেইনট্রি গাছ উপড়ে পড়ে আছে। শূন্য ভিটের ওপর তিনটি ছাগল কতগুলো পাতা চিবোচ্ছে। খাবারের অভাবে তারাও যেন কঙ্কালসার। খানিক দূরে ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে জলিল গাজীর স্ত্রী হাকিমা বেগম। প্যান্ট পরা, ক্যামেরাওয়ালা লোকদের এ গ্রামের আসার উদ্দেশ্য তখনও বুঝতে পারেননি জলিল গাজী। তার কথা জড়িয়ে যায়; হাঁটতেও কষ্ট হচ্ছে। তিনি প্যালাইসিস রোগী। এগিয়ে আসেন মাওলাবক্স গাজীর ছেলে আজগর আলী গাজী। জানা শোনা মানুষ। উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বলতে থাকেন একের পর এক। না, তেমন কোনো সাহায্য সহযোগিতা এখানে এখনও আসেনি। 

এটা পশ্চিম উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ঘূর্ণিঝড় আম্পান বিধ্বস্ত লেবুবুনিয়ার গল্প। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতের পর লেবুবুনিয়া গ্রামটি আলোচনায় আসে; ঠিক যেমন ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার পরে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় উঠে এসেছিল গাবুরা ইউনিয়নের নাম। কিন্তু আালোচনার কেন্দ্রে নাম উঠে এলে কী হবে! অবস্থা তো আর বদলায় না। বরং এইসব ঝুঁকির স্থানগুলো এক সময় কিছু মানুষের পুঁজি হয়ে দাঁড়ায়। আম্পানের আঘাতের পর লেবুবুনিয়ার নাম আলোচনায় এলেও কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। উল্টো অবনতি ঘটেছে। সরেজমিনে ঘুরে চোখে পড়েছে বিপন্নতার অন্য এক রূপ।

লবণ পানিতে ঘরকন্যার কাজে ব্যস্ত হালিমা বেগম/ ছবি: র, ই, মন্টু

প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় আম্পান প্রলয় তছনছ করে দিয়ে গেছে লেবুবুনিয়ার ভেতর বাহির। এটা এখন আর মূল ভূখন্ডের কোনো গ্রাম নয়; পরিণত হয়েছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপে। দিনে রাতে দু’বার জোয়ারের পানিতে ভাসে এ গ্রাম। ঘূর্ণিঝড়ের সিগন্যাল পেয়েও গ্রামবাসী কোথাও আশ্রয়ে যেতে পারেনি; কেননা গ্রামে নেই আশ্রয়কেন্দ্র। পানি পেরিয়ে দূরের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগও থাকে না। ১৯৮৮ সালের ঝড়ের ওলটপালটের মধ্যদিয়ে অন্য স্থান থেকে কতগুলো পরিবার এসে এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। সে বছরের দুর্যোগ এদের সব কেড়ে নিয়েছিল। হারিয়েছিল বাড়িঘর, এমনকি ভিটে। দুর্যোগের বিপদ থেকে এখানে এলেও বিপদ পিছু ছাড়ে না এদের। ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালের আইলা, ২০১৯ সালের ফণী, বুলবুল- সবই পিষে গেছে লেবুবুনিয়াকে। এবার আম্পান ভাসিয়ে গেল।

গ্রামটির দক্ষিণে কপোতাক্ষের গা ঘেঁসে আবদুল জলিল গাজীর ঘর। তার স্ত্রী হাকিমা বেগম বলছিলেন ১৯৮৮ সালের ঝড়ের পর দূরের গ্রাম থেকে উঁচু স্থান দেখে লেবুবুনিয়া গ্রামে আসেন। সে বহু বছর আগের কথা। কিন্তু এই উঁচু স্থানটিও যে পানিতে ডুবে যাবে; তা ভাবতে পারেননি কেউই। স্বামীর অসুস্থতায় হাকিমা বেগম হারিয়ে ফেলেছেন উচ্ছলতা। সন্তান ধারণ করতে না পারায় তার সে কষ্টটা যেন আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এর ওপর এইসব দুর্যোগ জীবনকেই যেন বিষিয়ে তুলেছে। লুৎফর গাজী (৫০), আজগর গাজী (৪৫), মাওলা গাজী (৭০), রুহুল কুদ্দুস (৪২), আকবর গাজী (৪৫), শহীদুল হক গাজী (৬৫), ফরিদ গাজী (৩৫), করিম গাজী (৭০), ফারুক গাজী (৪২), মোস্তফা গাজী (৬০), এমদাদুল হক (৩৫) সহ এই গ্রামের আরও অনেকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারি এখানকার বিপন্নতার চিত্র।

বাসিন্দারা জানালেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান এদের জীবন এলোমেলো করে দিয়েছে। একে তো করোনার সময়। কোনো কাজকর্ম নেই। গ্রামের প্রায় সকল মানুষই কর্মহীন। এর ওপর এ ধরনের প্রলয়ংকরী দুর্যোগের বিপদের ভার তারা সইতে পারছেন না। এখানকার প্রায় সকল মানুষ নদীতে মাছ ধরে, বনে কাজে যায়। এখন সব কাজই বন্ধ। ফলে আয় রোজগার নেই। ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। ঘরের সামনে পানিতে ডুবে থাকা আঙ্গিনায় দাঁড়িয়ে সূর্য বিবি (৫৫) বলছিলেন, ঘরের চারিদিকে পানি। বড় জোয়ার এলে ঘরেও উঠে যায় পানি। আমরা কোথাও যেতে পারি না। ১৯৮৮ সাল থেকে একের পর এক দুর্যোগের বিপদে আছি। আমাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না। সূর্য বিবি’র কথার সূত্র ধরে নছিরন বিবি (৪০) যোগ করেন, নদীর কাছ থেকে দূরে উঁচু জায়গা দেখে ঘর করেছিলাম। এখানেও রক্ষা পেলাম না।

শূন্য ভিটেয় আবদুল জলিল গাজী/ ছবি: র, ই, মন্টু

কথা বলতে বলতে আজগর আলী গাজীর ঘরের সামনে ভিড়ল একটি ডিঙি। কিছু মালামাল, পানির ড্রাম, মাছধরার উপকরণ, কিছু সদায়পাতি এবং কয়েকজন মানুষ নামল। এখন এটাই তাদের যাতায়াতের ভরসা। এক সময় লবণ পানি ছিল না। রাস্তাঘাট ছিল। চলাচলে, যাতায়াতে বেশ শান্তি ছিল। সেই শান্তি কোথায় গেল, কথার মাঝে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন হালিমা বেগম। পাশে এক হাঁটু কাদার ভেতরে দাঁড়ানো জাকিয়া বেগম বলেন, আমাগো দিকে কেউ তাকায় না। আম্পানের পর আমরা তেমন কিছুই পাইনি। জরুরি সহায়তা হিসেবে দিয়েছে সামান্য চাল। বেঁচে থাকতে হলে তো আরও অনেক কিছু লাগে!

জলবায়ু পরিবর্তনে উপকূলে জনপদ বিচ্ছিন্ন হওয়ার দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে লেবুবুনিয়া গ্রামটি। ২০০৯ সালে আইলার প্রলয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল এ গ্রামের। এরপর ২০১৯ সালের বুলবুল আর ফণীতেও কম ক্ষতি হয়নি। তবে আইলার পরেও এ গ্রামটি বেশ ভালোই ছিল। আমার ২০১৪ সালের ফটোফোল্ডারে গাবুরার ছবিতে যে শিশু মুক্তাদিরকে দোলনায় দোল খেতে দেখেছিলাম, সে এখন গ্রামের কাদাপানি মাড়িয়ে হাঁটছে। পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। দুর্যোগের বিপদ প্রজন্মের ওপর ফেলছে বাড়তি চাপ। শিশুদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। পানি বাড়লে স্কুলে যাওয়া বন্ধ থাকছে। আছে পানিবাহিত রোগবালাইয়ের প্রকোপ। কিন্তু মুক্তাদিরের মত শিশুদের তো সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশেই বড় হওয়ার অধিকার রয়েছে। সে অধিকার কী শিশু অধিকার সনদের ধারায়ই ব্র্যাকেটবন্দি থাকবে! প্রশ্ন নিজের কাছেই।

গাবুরার আরেক গ্রাম পারশেমারী-টেকেরহাট। ছড়ানো ছিটানো ঘর। পাশে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ। ভর দুপুরে তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন। তবুও কিছু মানুষের কাজের তাড়া। ভাঙা বেড়িবাঁধের পাশের ছোট্ট ঘরের ভেতর থেকে মাথা নিচু করে রাস্তায় বেরিয়ে এলেন মোশাররফ হোসেন। ঘূর্ণিঝড় আম্পান তার ক্ষতি করেছে ব্যাপক। ঘরের মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। জানালেন, আম্পানের সিগন্যাল পেয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। আম্পানের পর ঘরের আশপাশে পানি থাকায় ঘরে উঠতে সময় লেগেছে। আম্পানের সিগন্যাল পাওয়ার পরই মোশাররফ হোসেনের মনে পড়েছিল আইলার প্রলয়ে ছোট ভাই আসাদুল হককে হারানোর কথা। আইলায় প্রাণ হারানো ১১ জনের তালিকায় নাম রয়েছে আসাদুলের। ছোট ভাইয়ের কথা মনে করে আম্পানের সিগন্যালে কেউই ঘরে থাকেননি। জীবন বাঁচাতে ছুটেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। নাজুক বাঁধ তাদের আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ এলাকায় বাঁধের একাংশ ধসে গিয়েছিল।

 ঘরের সামনে হাকিমা বেগম/ ছবি: র, ই, মন্টু

শুধু পারশেমারী আর লেবুবুনিয়া নয়, গাবুরা ইউনিয়নের অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। কেন এ অবস্থা, জানতে চাইলে পরিষদ চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম বলেন, ইউনিয়নের চারপাশ ঘিরে আছে ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ষাটের দশকে এ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সিডর, আইলাসহ বিভিন্ন সময়ের ঘূর্ণিঝড়ের এ বাঁধ তছনছ হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও বাঁধ মজবুত করতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। এরফলে বাঁধ ক্রমেই নাজুক হয়েছে। আম্পানের ধাক্কায় ইউনিয়নের পাঁচ স্থানে বাঁধ ধ্বসে পানি ঢুকেছে। বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় মানুষের স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবেড়ি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন প্রয়োজন শক্ত করে বাঁধ দেওয়া।

এই নাজুক বেড়িবাঁধের ফলে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে জনজীবনে, জানতে চাইলে মাসুদুল আলম বলেন, প্রভাব তো স্পষ্ট। বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। জমি কমে গেছে। বিগত ২৫ বছরে প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি পানির তলায় চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে চিংড়ির ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। কৃষি জমির মালিকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। আইলার পর থেকে এই এলাকা থেকে অন্তত দুই হাজার মানুষ ভিটে ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ফিরে এলেও অধিকাংশই আর ফিরতে পারেনি।

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব এসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুল হক। গাবুরার বাঁধ প্রসঙ্গে তিনি বলছিলেন, শক্ত করে বাঁধ দেওয়ার জন্য যে বরাদ্দ প্রয়োজন, তা পাওয়া যায় না। বার্ষিক বরাদ্দ হিসেবে যেটা পাওয়া যায়, তা ঝুঁকি সামলানোর কাজে ব্যয় হয়। গাবুরাসহ এই এলাকার বাঁধগুলো মজবুত করতে হলে ব্লক ফেলে শক্ত করে বাঁধ দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সেজন্য প্রয়োজন হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে বরাদ্দ।

কপোতাক্ষ নদে ভাটার টান। লেবুবুনিয়া গ্রামটি ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। চারিদিকে জলরাশির মাঝে একখণ্ড ছোট্ট গ্রাম। কিছুক্ষণ আগে জোয়ারের সময় ডুবে থাকা পানির কল, পায়খানার রিং স্লাব, ভাঙন প্রতিরোধী বাঁশের পাইলিং, উঠোন, চলার পথ, কিছুটা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বেলা গড়িয়ে পড়েছে; তবুও কারো ঘরে তখনও দুপুরের খাওয়া হয়নি। সকলেই জোয়ারের পানি কমে যাওয়ার অপেক্ষায়। আর আমাদের অপেক্ষা ঘাটে ফেরার। উজানে ঢেউয়ের বিপরীতে চলে জহিরুল ইসলামের ছোট্ট ইঞ্জিন ডিঙ্গি। কপোতাক্ষ থেকে খোলপেটুয়া। সুন্দরবনের গা ঘেঁসে ট্রলারের গন্তব্য নীলডুমুর ঘাট।

 
   

নওগাঁয় চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার, গ্রেফতার ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
নওগাঁয় চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

নওগাঁয় চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার পুরাতন কাঠহাটি এলাকা থেকে জানালার লোহার গ্রিল কেটে চুরি হয়ে যাওয়া স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে, এদিন সকালে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার সরল শিকারপুর গ্রামের মৃত খোকা মন্ডলের ছেলে শামীম হৃদয় (২৪), নিরব সাজেদুর (২৭) ও আরজি নওগাঁ মধ্যপাড়ার কালু বাবুর ছেলে সরল হোসেন (২০)।

জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় পুরাতন কাঠহাটি এলাকায় মাহবুবুর রহমানের বাড়িতে জানালার লোহার গ্রিল কেটে চোরের দল ঘরে ঢুকে এক জোড়া স্বর্ণের ঝুমকা, একটি স্বর্ণের কণ্ঠমালা, এক জোড়া স্বর্ণের পাশা এবং এক জোড়া ব্রোঞ্জ ও স্বর্ণের সমন্বয়ে নক্সা মুখবালা চুরি করে নিয়ে যায়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঘটনার পর পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এরপর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হকের দিক নির্দেশনায় নওগাঁ সদর থানা-পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত থাকায় শামীম, সাজেদুর ও সরল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া সকল স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।

;

সূর্যের প্রখরতায় জনজীবনে অস্বস্তি, ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশাখের শুরু থেকেই সারাদেশে সূর্যের প্রখরতা বাড়ছে। সূর্য উদয় থেকেই তেজদীপ্ততা শুরু হয়, সেই থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তীব্র তাপদাহে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে জনজীবন। শুধু তাই নয় রাতেও ভ্যাপসা গরমে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। এতে জনজীবনে বাড়ছে অস্বস্তি। দেশের এমন পরিস্থিতি আগামী তিন দিনের জন্য সতর্কতামূলক হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক এ সতর্কবার্তা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপ প্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে।

এদিকে বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।

এদিকে আজ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।

 

;

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিজিপির আরও ১১ সদস্য বাংলাদেশে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২৪ ঘণ্টা না পেরোতে আবারো ১১ জন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্য আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় তারা। এ নিয়ে বর্তমানে ২৮৫ জন মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্য আশ্রয় গ্রহণ করে বাংলাদেশে অবস্থান গ্রহণ করছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) নতুন করে টেকনাফের জীম্বংখালী সীমান্ত দিয়ে ৩ জন এবং হাতিমারাঝিরি ৮ জন বিজিপি সদস্য আশ্রয় গ্রহণ করেন। 

এর আগে গতকাল রাতে টেকনাফের নাফ নদী পার হয়ে কোস্ট গার্ডের কাছে ১৩ জন বিজিপি সদস্য আত্মসমর্পণ করে। পরে কোস্টগার্ড বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবি'র নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নে (১১ বিজিবি) হস্তান্তর করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবির গণসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গতকাল ১৩ জন এবং আজকে ১১ জন বিজিপি সদস্য টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সর্বমোট ২৮৫ জন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। তারা সবাই বিজিবি হেফাজতে আছে।   

;

ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১৩ জন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। তবে এসময় কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এ নিয়ে চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৯৫২ জন।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) চার জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সাতজন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুই জন রয়েছেন।

২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট সাতজন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, চলতি বছরে মোট এক হাজার ৮২৬ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।

চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২৪ জন। মৃতদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ এবং জন ১৩ জন নারী।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

;