বগুড়ায় হাটে দাম বেশি, কৃষক খাদ্য বিভাগে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা
বগুড়ার হাট বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধান কিনতে পারছেন না খাদ্য বিভাগ। আর এ কারণে চুক্তিবদ্ধ মিলাররাও চাল সরবরাহ করতে পারছেন না খাদ্য বিভাগের কাছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্য বিভাগের ধান-চাল ক্রয় অভিযান চলছে ধীরগতিতে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ২৫ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে ৭১ হাজার ৮৪৮ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ৩৫ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন আতপ চাল ক্রয় করা হবে। কিন্তু গত এক মাসে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে ৮০০ টন এবং চাল সংগ্রহ করা হয়েছে ৭ হাজার টন। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার জন্য খাদ্য বিভাগ প্রতিটি উপজেলায় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করেছেন। কিন্তু সেই নির্বাচিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে আসছেন না খাদ্য বিভাগের কাছে।
এর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, খাদ্য বিভাগ ধান কিনছেন ২৬ টাকা কেজি দরে অর্থাৎ ১০৪০ টাকা মণ দরে। অথচ বগুড়ার হাট বাজারে ৯৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। নন্দীগ্রাম উপজেলার রিধইল গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন তিনি ২০ বিঘা জমিতে মিনিকেট ও কাটারী ধান আবাদ করেছেন। তিনি ১১০০ টাকা মণ দরে হাটে ধান বিক্রি করেছে। এই এলাকার কয়েকজন কৃষক জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলায় কেউ মোটা ধান চাষ করেন না। এ কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিতে আগ্রহী না।
গাবতলী উপজেলার জামিরবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সুব্রত ঘোষ জানান, বিআর ২৮ প্রজাতির ধান বিক্রি করেছেন ৯৫০ টাকা মণ দরে। ধানের দাম আরো বাড়বে উল্লেখ করে কৃষক বলছেন, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে অনেকেই বাড়িতেই ধান মজুত করছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া হাটে কেউ ধান বিক্রি করছেন না। খাদ্য বিভাগের সাথে যেসকল মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চাল সরবরাহের জন্য তারাও হাটে পর্যাপ্ত ধান পাচ্ছেন না। আবার ধানের দাম বেশি হওয়ায় ধান কিনে চাল আকারে খাদ্য বিভাগে সরবরাহ করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন দুপচাচিয়া উপজেলার কয়েকজন মিল মালিক।
গাবতলী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুনার রশিদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকরা আসছেন না ধান বিক্রি করতে। তিনি বলেন বিকল্প সিদ্ধান্ত ছাড়া ধান চাল ক্রয়ের টার্গেট পূরণ হবে না।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ধান দিতে ব্যর্থ হলে অপেক্ষামান কৃষকের তালিকা থেকে ধান কেনা হবে।
তিনি আরো বলেন, আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় আছে। এরমধ্যে লক্ষমাত্রা অর্জিত না হলে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।