লকডাউন নিয়ে লক্ষ্মীপুরে প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা, ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনকে ঘিরে লক্ষ্মীপুরে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা চলছে। এ নিয়ে রোববার (১৪ জুন) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সেই সঙ্গে ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়— জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) মধ্যে রোববার সমন্বয়হীনতা প্রকাশ্যে এসেছে। আগামী ১৬ জুন থেকে পুরো জেলা লকডাউন থাকবে উল্লেখ করে ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রস্তুতি থাকলেও এমন কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে রোববার রাতে জেলা সিভিল সার্জন আবদুল গফ্ফার বলেন, ‘রেড জোন হওয়ায় লক্ষ্মীপুরকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকাল থেকে পুরো জেলা লকডাউন থাকবে।’
কিন্তু এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জন চন্দ্র পাল দিয়েছেন পুরো উল্টো বক্তব্য। রাত ১০টায় তিনি দাবি করেন, লক্ষ্মীপুরকে লকডাউনে রাখার ঘোষণা এখনও হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকেও কোনো নির্দেশনা আসেনি। যদি মন্ত্রণালয় থেকে লক্ষ্মীপুরকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে প্রজ্ঞাপন জারি হয়, তাহলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে লকডাউন রাখার মতো সব প্রস্তুতি আছে।
ফেসবুকে জানানো হচ্ছে, ১৬ জুন থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলাগুলো লকডাউন থাকবে। এমন প্রচারণার ব্যাপারে ডিসির কথা, নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) কেনো উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করছেন তা জানা নেই তার। এ ধরনের প্রচারণার বিষয়েও তিনি অবগত নন।
এদিকে কমলনগর উপজলা সোমবার (১৫ জুন) সকাল থেকে লকডাউন থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা মোবারক হোসেন। রামগঞ্জ, রামগতি ও রায়পুর মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকাল থেকে লকডাউন রাখার ঘোষণা দেন নির্বাহী কর্মকর্তারা। তবে রামগতিতে প্রথমে সোমবার সকাল থেকে লকডাউন রাখার কথা থাকলেও পরে রোববার সন্ধ্যায় পুনরায় তারিখ পরিবর্তন করেন নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মোমিন।
অন্যদিকে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরীন চৌধুরী এক চিঠিতে লকডাউনে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ফার্মেসি বন্ধ রাখতে বলেছেন। এ কারণে বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এসেছে। কারফিউ কিংবা জরুরি অবস্থায় ওষুধের দোকান খোলা থাকে, কিন্তু লকডাউনে তা বন্ধের আদেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অনেকে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৩৯ জনের শরীরের করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এছাড়া ৮ জন মৃত ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৮২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।