আশুগঞ্জ শহরে রাস্তায় মাছ ধরছে শিশুরা, বইছে সমালোচনার ঝড়
অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশন হওয়া এবং পানি নিষ্কাশনের নালার মুখ বন্ধ করে দেয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিল্প ও বন্দর নগরী হিসেবে পরিচিত আশুগঞ্জ বাজার। ফলে পানি ঢুকে পড়ে শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হওয়াসহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) বৃষ্টির কারণে আশুগঞ্জ বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শহরের ড্রেনের ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে একাকার হয়ে গেছে সেখানকার রাস্তা-ঘাট।
আর এই বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে ছোট ছোট মাছ ধরছে শিশুরা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে।
ইসতিয়াক আসিক নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে জাদুর শহর আশুগঞ্জ নামে একটি গ্রুপে শিশুদের মাছ ধরার ছবি পোস্ট করেন। আর এরপর থেকেই পানি নিষ্কাশনের বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। নামজুল দেওয়ান নামে এক আইডি থেকে ওই পোস্টের নিচে কমেন্ট করা হয়েছে ‘জনপ্রতিনিধিদের যদি এবার একটু লজ্জা হয়’।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিল্প ও নদী বন্দর হিসেবে পরিচিত আশুগঞ্জ বাজার। আগে এই বাজার এলাকার রেলওয়ে পুকুর দিয়ে শহরের পানি প্রবাহিত হয়ে নালা দিয়ে মেঘনা নদীতে গিয়ে নিষ্কাশন হতো। কিন্তু সম্প্রতি নালাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় পুরো শহর। বিগত কয়েক বছর যাবৎ এই জায়গায় পানি জমে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে। বন্দরে পরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় দিন দিন এ দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
আশুগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. পারভেজ বার্তা২৪.কমকে জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই আশুগঞ্জ বাজারে হাটু পানি লেগে থাকে। পানি নিষ্কাশনের জায়গা না থাকায় এই সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টির সমাধানে দ্রুত জনপ্রতিনিধিদের নজর দেয়া দরকার।
আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন বার্তা২৪.কমকে জানান, অপরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণের কারণেই এমনটি হচ্ছে। সরকারি কোনো বাজেট না থাকায় পরিকল্পিতভাবে এই পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পানি নিষ্কাশনের জন্য কাজ করছেন তিনি। এ বিষয়ের সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিমুল হায়দার বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জন্য ইতোমধ্যেই একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। খুব দ্রুতই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আশা করি কাজটি শেষ হলে আর সমস্যা থাকবে না। তবে নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সবাইকে আরও আন্তরিক হতে হবে।’