বড় সাজা হলে এমপি পদ হারাতে পারেন পাপুল



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল, ছবি: সংগৃহীত

কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানব পাচারের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেফতার হয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল। একাদশ জাতীয় সংসদের এ আইন প্রণেতা নিজেই অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন।

দেশের বাইরে গ্রেফতার হওয়ায় তার বিষয়ে দেশের আদালতে কিছুই করা যাচ্ছে না। জামিন নিতেও কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না এ আইন প্রণেতা। গ্রেফতার হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, একজন আইন প্রণেতা যখন মানব পাচারের মতো অপরাধ করেন, তার সংসদ সদস্য পদ থাকে কি করে?

আসলে কি হতে পারে, এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আইনি ব্যাখা জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, একজন সংসদ সদস্য গ্রেফতার হলে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই।

আইনি ব্যাখা তুলে ধরে ডেপুটি স্পিকার বলেন, একজন সংসদ সদস্য যদি কোনো মামলায় দুই বছর বা তার বেশি সময়ের সাজাপ্রাপ্ত হন এবং সে সাজা যদি নৈতিকস্খলন হয়, আর সে বিষয়টি সরকার বা কোনো কর্তৃপক্ষ সংসদকে যদি অবহিত করে যে আপনার ওই আসনের অমুক এমপি এ মামলায় এ ধারায় এতো বছরের কারাদণ্ড হয়েছে এবং সেটাকে আমরা নৈতিকস্খলন বলে বিবেচনা করি, তখন সংসদ সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করে কাগজপত্র দেখে তাকে তখন ‘ডিজমেম্বার’ (সংসদ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার) করতে পারে। তার আগে দেখভাল করার কোনো সুযোগ সংসদের নেই।

অন্যদিকে কার্যপ্রাণালী বিধির ১৭২ বিধি অনুযায়ী, কোনো সদস্য ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার হলে কিংবা কোনো আদালত কর্তৃক কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে বা কোনো নির্বাহী আদেশক্রমে আটক হলে ক্ষেত্রমত গ্রেফতারকারী বা দণ্ডদানকারী বা আটককারী কর্তৃপক্ষ বা জজ বা ম্যাজিস্ট্রেট বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ তৃতীয় তফসিলে প্রদত্ত যথাযথ ফরমে অনুরূপ গ্রেফতার, দণ্ডাদেশ বা আটকের কারণ বর্ণনাপূর্বক অবিলম্বে অনুরূপ ঘটনা স্পিকারকে জানাবেন।

এরপর কার্যপ্রণালী বিধির ১৭২ বিধি মোতাবেক পত্র পাওয়ার পর কার্যপ্রণালী বিধির ১৭৬ বিধি অনুযায়ী স্পিকার যত দ্রুত সম্ভব সংসদ অধিবেশনে থাকলে সংসদে তা পাঠ করবেন, কিংবা সংসদ অধিবেশন না চললে সদস্যদের অবগতির জন্য তা প্রচার করার নির্দেশ দেবেন।

তবে শর্ত হচ্ছে কোন সদস্যের জামিনে বা আপিলে খালাস হওয়ার সংবাদ যদি মূল গ্রেফতার সংসদকে জানানোর আগে পাওয়া যায়, তাহলে অনুরূপ গ্রেফতার বা পরবর্তী মুক্তি বা খালাসের সংবাদ স্পিকার সংসদকে না জানালেও চলবে।

সংসদ সদস্য কাজী শহীদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে গ্রেফতার হওয়ার বিষয়টি অফিশিয়ালি স্পিকারকে অবহিত করা হলে, তখন হয়তো তিনি সংসদ অধিবেশনে অবহিত করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, মানবপাচার ও অর্থপাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৭ জুন কুয়েত ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এমপি পাপুলকে আটক করে। তাকে দেশটির সিআইডি রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কুয়েত সিআইডি এসব অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে। এছাড়া পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ইতোমধ্যে কুয়েতের তিনজন সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে কুয়েতের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, কাজী শহীদ ইসলামের বিরুদ্ধে মানবপাচার, অতিরিক্ত ভিসা নবায়ন ফি আদায়, কুয়েতের সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে কুয়েত সিআইডি। তার বিরুদ্ধে ১১ জন বাংলাদেশি সাক্ষিও দিয়েছেন।

এছাড়া পাপুলের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের চেকবই জব্দ করেছে সিআইডি। একই সঙ্গে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৬ জুলাই। সে কারণে আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত তাকে আটকই থাকতে হবে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, একজন গ্রেফতার হলেই তার এমপি পদ বাতিল করা যায় না। আগে তার সাজা হতে হবে। সেখানে সাজার বিষয়ে দুই বছরের কথা বলা আছে। তাছাড়া আইনগতভাবে এখন কিছু করার সুযোগ নেই।

পাপুলের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অতীতে এ রকম ঘটনা আমাদের এমপিদের ক্ষেত্রে হয় নাই। তবে বর্তমান সংসদে এ ধরনের ফৌজদারি অপরাধের (ক্রিমিনাল অফেন্স) সঙ্গে অনেক ব্যবসায়ী জড়িত আছেন। কারণ এখন সংসদ হয়েছে ব্যবসায়ী নির্ভর আর ওইসব ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত। কাজেই সরকারের সর্তক হওয়া দরকার। এ ধরনের ব্যবসায়ী, যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের যেন সংসদে না আনা হয়। এ রকম হলে ভবিষ্যতে মানি লন্ডারিংসহ অন্যান্য অনেক অপরাধের সঙ্গে অনেক এমপি জড়িয়ে যাবেন।

এজকন এমপি হিসেবে পাপুল দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র যদি এখনই সর্তক না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আরো ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। সাজা না হওয়া পর্যন্ত তার সদস্য পদ বাতিল করার কোনো এখতিয়ার নেই। তবে সরকারের উচিত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া। একজন ক্রিমিনাল অফেন্সের সাথে জড়িত, যা অনৈতিকই না শুধু, এটা রাষ্ট্রের সাথে মারত্মক শৃঙ্খলা পরিপন্থি, ইথিকসের বাইরে সবকিছুই ঘটেছে এমপি পাপুলের বেলায়। প্রকৃত রাজনীতিবিদরা এ ধরনের অপরাধ করেন না। যারা করছেন, তারা প্রত্যেকেই ব্যবসায়ী কাম রাজনীতিবিদ। কাজেই রাষ্ট্রের আরো সতর্ক হওয়া দরকার, না হলে সব সময় রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এভাবে ক্ষুণ্ন হতে পারে। আর একটা বিষয় আছে, কোনো এমপি টানা ৯০ কার্য দিবস অনুপস্থিত থাকলে স্পিকার চাইলে তার সদস্য পদ বাতিল করতে পারেন।

এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা এখনো কুয়েতের কাছ থেকে সরকারিভাবে কোনো তথ্য পাইনি। পত্রিকায় যেসব তথ্য পেয়েছি, সরকারিভাবে কুয়েতের কাছ থেকে এসব তথ্য পেলে আইন অনুযায়ী অবশ্যই তার বিচার হবে। তথ্য না পেলে তো আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

   

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;

পটিয়ায় বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের পটিয়াতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে বাস-অটোরিকশা মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার চেয়ারম্যান ঘাটা নাকম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসরিফ (১৫) ও কক্সবাজারের রামুর নুরুল আলম (২৮)। তিনি চন্দনাইশের এলেহাবাদ এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামমূখী মারসা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে একটি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাকী একজনের নাম জানা যায়নি। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।

ওই অটোরিকশায় চালকসহ মোট ৪ আরোহী ছিলেন। তবে দুর্ঘটনার সাথে সাথে এক যাত্রী লাফ দিয়ে সরে পড়ে। তাই তিনি তেমন আঘাত পাইনি বলে যোগ করেন ওসি। 

;