লঞ্চ যাত্রায় বেড়েছে ভীতি
রাজধানী ঢাকার ফরাশগঞ্জে লঞ্চের ধাক্কায় মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চগুলোর চাপ সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও একে নিছক অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা হিসেবে দেখা হলেও লঞ্চের সাথে পণ্যবাহী কার্গো ও বাল্কহেডের ধাক্কার ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। ফলে নৌ পথে ছোট লঞ্চগুলোতে আরোহন কতটা নিরাপদ তা এখন অন্যতম আলোচনার বিষয়।
মূলত সড়ক পথে দুর্ঘটনা ও ভাঙা রাস্তার ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিকল্প ভ্রমণের তালিকায় থাকে নৌযান। তবে অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং ফিটনেস বিহীন লঞ্চের চলাচলের যাত্রীদের নিরাপত্তার ঝুঁকিও থাকে যথেষ্ট। দীর্ঘ ৩ বছরে নৌ পথে সচেতনতা বাড়ায় লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেনি। এবার এক দুর্ঘটনায় একসাথে ৩০ এর বেশি প্রাণ কেড়ে নেয়ায় মানুষের মাঝে শঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
মঙ্গলবার সরজমিনে নারায়ণগঞ্জের লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ টার্মিনাল হতে ছেড়ে যাওয়া অধিকাংশ লঞ্চের অবস্থা সুবিধাজনক নয়। ঘাটে মেসার্স মুন্সিগঞ্জের একটি লঞ্চের ভাঙাচোরা ও জোড়া লাগানো লঞ্চের পাটাতনের চিত্র। জং ধরে আছে সিলিং, বেঁকে আছে বাইরের রেলিং। যাত্রী সেবার বেহাল দশার অধিকাংশ লঞ্চই মুন্সিগঞ্জ রুটে চলাচল করে। মাঝে মাঝে লঞ্চগুলোকে নতুন রঙ আর ঝালাই করে চকচকে করলেও বাইরের কাঠামো দেখেই বোঝা যায় ভেতরের হাল হকিকত।
মুন্সিগঞ্জগামী লঞ্চের যাত্রী হান্নান বলেন, লঞ্চ এইগুলা দেখতে খারাপ হইলেও উপায় নাই তো আমাগো। সবাই যায় সাথে আমরাও যাই আল্লাহ-বিল্লাহ কইরা। প্রতিদিনই তো কত লঞ্চ ছাইড়া যাইতাছে। বিপদ দেয়ার মালিক আল্লাহ, রক্ষা উনিই করব।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নারায়ণগঞ্জ জোনের প্রেসিডেন্ট মোঃ বদিউজ্জামান বাদল বলেন, গত ৩ বছরের লঞ্চ দুর্ঘটনার কোন ঘটনা ঘটেনি। যেই লঞ্চটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে সেটি ৬৫ ফিটের মত। আর যেই লঞ্চ ধাক্কা দিয়েছে সেটি ২৫০ ফিট। ট্রাক যদি ভ্যানগাড়িকে ধাক্কা দেয় তাতে দুর্ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক।
তবে লঞ্চে চলাচলরত যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জানতে চাইলে বলেন, শিপিং ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব হচ্ছে লঞ্চের মাস্টার ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্স দেয়া। তারা যদি কঠোরভাবে বিষয়গুলো দেখভাল করে তাহলে এমন দুর্ঘটনা হবার কথা না। এখানে তাদের কিছুটা গাফলতি আছে বলে আমি মনে করি।