লকডাউনে ‘নাখোশ’ ওয়ারীবাসী
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসকরোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রাজধানীর ওয়ারী এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে ২১ দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এলাকা থেকে কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষ যারা বিভিন্ন অফিসে কর্মরত এবং ব্যবসায়ের সাথে জড়িত তারা লকডাউন মানতে রাজি নয়। তারা বলছেন, রেড জোন ঘোষণা করা ওয়ারী এখনও লকডাউন করার মতো অবস্থায় আসেনি।
শনিবার (৪ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় প্রশাসন কার্যকর করেছে ওয়ারী এলাকার লকডাউন।
এলাকার লোকজন বিভিন্ন অজুহাতে লকডাউন না মেনে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যরা তাদেরকে বাধা দিচ্ছেন। বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু মানতে নারাজ অনেকেই। এসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের সাথে এলাকার কয়েকজনকে বাকবিতণ্ডায় জড়াতেও দেখা যায়।
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এলাকায় এমন সংক্রমণ নেই যে এখনই লকডাউন করতে হবে। আবার অনেকের দাবি লকডাউন করলে দেশের প্রত্যেকটি স্থানকেই লকডাউন করতে হবে। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, বড় বড় সুপারসপগুলোর যোগসাজশে তাদের ব্যবসা বাড়াতেই লকডাউন করা হয়েছে এই এলাকা।
এলাকার বাসিন্দা বই ব্যবসায়ী এহসান বলেন, ২১ দিন আমরা ব্যবসা বন্ধ রাখলে চলবো কীভাবে। ঈদের দুই-তিন দিন আগে শেষ হবে লকডাউন। ব্যবসা করব কয়দিন আর কর্মী-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিব কীভাবে। আমি মনে করি এখনো সময় আসেনি এই এলাকা লকডাউন করার।
অপর একজন ডাক্তার দেখানোর নাম করে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তাকেও বাধার মুখে পড়তে হয়। তেমন কোনো সমস্যা না থাকায় তাকে পরবর্তীতে যাওয়ার কথা বলা হয়। তিনিও স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, আমরা পুরো এলাকা পরিদর্শন করেছি কিন্তু কোনো ত্রুটি এখন পর্যন্ত দেখিনি। তবে প্রথম দিন বিধায় কিছু সমস্যা থাকতে পারে পরে তা ফাইন্ড আউট করে আমরা ব্যবস্থা নিব। এই ২১ দিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
এলাকার বাসিন্দাদের লকডাউন মানতে না চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা লকডাউন করেছি। নিজেদের স্বার্থে তাদের মানা উচিত।
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান আলো বলেন, এলাকায় প্রত্যেকদিন অন্তত ৫০ জন বাসিন্দাকে করোনা টেস্ট করা হবে। এবং লকডাউন থাকাকালীন সময়ে এলাকাবাসীর সুবিধার্থে সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য ওয়ারীর ১৭টি প্রবেশ মুখের মধ্যে ১৫টি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দুটি পথ দিয়ে বের ও প্রবেশ করতে পারবেন বাসিন্দারা। তবে, সর্বসাধারণকে এলাকা থেকে প্রবেশ ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না। শুধু মাত্র স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ও রোগীরা নাম লিপিবদ্ধ করে বের ও প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব দোকান-পাট। তবে খোলা রয়েছে ওষুধের দোকান। এছাড়া যেকোনো প্রয়োজনে নির্ধারিত নম্বরে কল করে সেবা নিতে পারবেন লকডাউনভুক্ত বাসিন্দরা।