অনলাইনে কোরবানির পশু মিলবে কুষ্টিয়ায়
আর মাত্র সপ্তাহ তিনেক পরেই ঈদুল আজহা। সে লক্ষ্যেই ইতোমধ্যে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়ে গেছে। আর এ বছর কুষ্টিয়ায় অনলাইনে কোরবানির পশু মিলবে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে করোনাকালীন হাটে না গিয়ে ঘরে বসে অনলাইনে কোরবানির পশুর হাট চালু করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। কোরবানির পশুর হাট কুষ্টিয়া নামে ফেসবুকে একটি পেজ খোলা হয়েছে। মূলত সেখানে খামারিদের বিক্রয়যোগ্য পশুর ছবি, সম্ভাব্য ওজন, বিক্রেতার নাম-ঠিকানাসহ পোস্ট করার অনুরোধ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, কুষ্টিয়ার ৬ উপজেলায় ৩৮ হাজার গরু-ছাগলের খামার রয়েছে। এসব খামারে ১ লাখ ৫ হাজার গরু, ৭০ হাজার ছাগল এবং ২ হাজার ভেড়াসহ অন্যান্য পশু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। এ জেলায় মোট ১৫টি পশুর হাট রয়েছে। এসব হাট ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই পশু বিক্রি করা হবে। অনলাইনেও চলবে এই পশু বিক্রির কার্যক্রম।
এদিকে, গেল বছরে জেলার খামারিরা কোরবানির পশু বিক্রি করে বেশি লাভ করেছিল। তাই এবার আরও বেশি পরিমাণ গরু পালন করা হয়েছে।
সরেজমিনে মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের হাজরাহাটী গ্রামের আলী হোসেনের গরুর খামারে গিয়ে দেখা গেছে, খামারে ৮০টি গরু আছে। ৩ জন শ্রমিক সেখানে গরু পরিচর্যা করছে। তবে কোরবানির জন্য ৫০টি মাঝারি সাইজের গরু প্রস্তুত করা হয়েছে।
খামারি আলী হোসেন জানান, গত বছরে ৬৫টি গরু ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। তাতে করে বেশ ভালোই লাভ হয়েছিল। এ বছর ইতোমধ্যে কিছু গরু ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে এবার করোনার কারণে গরু বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
মিরপুর উপজেলার গৌড়দহ গ্রামের খামারি ফিরোজ বলেন, ‘প্রায় বছর খানেক আগে এক সঙ্গে ১৮টি দেশি গরু কিনেছিলাম। কিন্তু বর্তমানে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই লোকসানের আশঙ্কা করছি। এছাড়া করোনার ছোবল তো রয়েছেই।’
একই এলাকার শফিকুল মণ্ডলের স্ত্রী জানান, দিশা সংস্থা থেকে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করতে ঋণ নিয়েছিলাম। ৩টা গরু প্রায় এক বছর লালনপালন করেছি। গরু ৩টির দাম প্রায় আড়াই থেকে ৩ লাখ টাকা হবে। এখন বিক্রি নিয়ে ভয়ে আছি।’
কুষ্টিয়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে হৃষ্টপুষ্ট করায় কুষ্টিয়ার গরুর ভালো চাহিদা রয়েছে। এসব গরু কুষ্টিয়ার মানুষের ৩০ শতাংশ চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, করোনার সময়ে এবার কিছু কিছু খামারি অনলাইনে গরু বিক্রির কার্যক্রম চালাবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, কোরবানিকে টার্গেট করে কুষ্টিয়াতে ব্যাপক গবাদিপশু লালনপালন করা হয়ে থাকে। এই করোনার সময়ে হাটে না গিয়ে ঘরে বসে গরু কিনতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনলাইনে কোরবানির পশুর হাট নামে একটি পেজ খোলা হয়েছে। এর মাধ্যমে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করা হবে।