সরকারি বিলে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগ
রংপুরের তারাগঞ্জে সরকারি বিলের মধ্যে জালের (নেট) ঘেরা দিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি ওই বিল ইজারা নেওয়া মাছচাষিদের হয়রানি করাসহ বিলের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে মৎস খামার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর হাতঘোপা বিলে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে বিলটির ইজারা নেওয়া মাছচাষিরা। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, সরকারি জলমহাল ইজারা নীতিমালা অনুসারে গত বছর হাতঘোপা বিলের ৩৫ দশমিক ২৩ একর জমি নিলাম দেওয়া হয়। বিলটি ৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা দিয়ে তিন বছরের জন্য ইজারা নেন ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎসজীবী সমবায় সমিতি। কিন্তু ইজারা নেওয়ার পর থেকে বিভিন্নভাবে স্থানীয় কিছু লোকজন ওই মৎসজীবীদের হয়রানি করে আসছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ উঠেছে, বিলের মধ্যে জালের (নেট) তৈরি ঘেরা দিয়ে জমি দখলে রেখে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে মাছ ধরছেন খিয়ার চরাডাঙ্গা গ্রামের মহসীন আলী ও তার লোকেরা। এনিয়ে গত সোমবার (২৯ জুন) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎসজীবী সমবায় সমিতির চাষিরা।
আলমগীর কবির লিটন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, হাতঘোপা বিলটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলে আসছে। গতবছর ইজারা হবার পরও অনেকে প্রভাব খাটিয়ে বিলের পাশে মৎস খামার গড়ে তুলেছে। এনিয়ে দুপক্ষের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সুরাহা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ওই ব্যক্তি।
এদিকে অবৈধভাবে ঘেরা দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি অস্বীকার করে মহসীন আলী বলেন, আমরা পনেরজন মিলে প্রায় ৪ একর জমিতে জালের ঘেরা দিয়ে মাছ চাষ করছি। আমরা নেটের ঘেরা দিয়েছি সুবিধার জন্য। এতে সরকারি বিলের জমি দখল করা হয়নি। বরং আমরা নিজস্ব ও লিজ নেওয়া জমিতে মাছ চাষ করছি।
অন্যদিকে ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ও হাতঘোপা বিলের ইজারাদার দেবাশীষ রায় জানান, নির্ধারিত বিলের জায়গার মধ্যে নেটের ঘেরা দিয়ে কৌশলে পোনা ও মা মাছ শিকার করছে খিয়ার চড়াডাঙ্গা গ্রামের মহসীন আলীসহ বেশ কয়েকজন। তারা সেখানে মাছের খামারও গড়ে তুলেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবগত করার পরও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহ আগে ওই বিলের ইজারদার ও মাছচাষিরা একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তিনি বিষয়টি মৎস কর্মকর্তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, এর আগেও বিলটি নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। আমি খোঁজখবর রাখছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।