টিএন্ডটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেটবিহীন ডিজিটাল পাঠদান চালু

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে বিটিসিএল পরিচালিত টিএন্ডটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ইন্টারনেটবিহীন ডিজিটাল  পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এই পদ্ধতিটি চালু হওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের বই খাতা, কলম কিংবা চক-ডাস্টার পদ্ধতিতে প্রচলিত পাঠদান পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো। 

বিটিসিএল  পরিচালনাধীন ৮টি টিএন্ডটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে প্রাথমিকভাবে প্রি-স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত এই শিক্ষাকার্যক্রম চালু করা হচ্ছে।  এই পদ্ধতিতে মোবাইল বা ট্যাবে বোর্ডের পাঠ্যসূচি  ডিজিটাল এনিমেশনের মাধ্যমে তৈরি করা সফটওয়্যারে পাঠদান করা হবে। এর ফলে খেলার ছলে  ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে সহজে এবং আগ্রহের সাথে পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (০৮ জুলাই) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার  ডিজিটাল পাঠদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

বিটিসিএল, হুয়াওয়ে এবং বিজয় ডিজিটাল এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জুম ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য দীর্ঘ তিন যুগ ব্যাপী কাজ করে যাচ্ছি।  ১৯৯৯ সালে গাজীপুরে ১৩জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই স্বপ্ল বাস্তবায়নের যাত্রা শুরু করি।  অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী সেটি উদ্বোধন করেছিলেন, যা বর্তমানে বেড়ে ৩২টিতে উন্নীত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারে মন্ত্রী তাঁর দীর্ঘ পথ চলার চ্যালেঞ্জ সমূহ তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিবন্ধকতা হলো ডিভাইস এবং কনটেন্ট।  গত ১১ বছরে বিজয় ডিজিটালের সিইও জেসমিন জুই কনটেন্ট  বিষয়ক চ্যালেঞ্জটি তার ২০জন দক্ষ সহযোদ্ধাকে নিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছেন। প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্ট তৈরি করে  শিক্ষার্থীদের হাতে তিনি তুলে দিতে পেরেছেন।  বিনা টাকায় করোনাকালে  শিক্ষার্থীরা এই কনটেন্টটি এখন পাচ্ছেন।  অন-লাইন থেকে শিক্ষক ও অভিভাবকরা ডাউনলোড করে তাদের সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। টিএন্ডটি স্কুল সমূহেও বিনামূল্যে বিজয় সফটওয়্যারটি সরবরাহ করা হচ্ছে। 

কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, শিক্ষা জীবনে প্রাথমিক স্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  আর আগামী দিনটা হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তির দিন।  এই পদ্ধতিতে শিশুদের কম্পিউটার শিক্ষার কাজটিও যেমন এগিয়ে যাচ্ছে পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহও তেমনি বাড়ছে। 

তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শুরু হয়ে গেছে। বিপ্লবের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলে নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হবে।  প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি বিদ্যমান শিল্পযুগের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরি করতে পারবে না।  ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতিই  বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকার একমাত্র পথ।

প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকার বনানীতে টিএন্ডটি বয়েজ হাইস্কুলে কার্যক্রমটি শুরু করা হয়। পর্যায়ক্রমে দুই বছরের মধ্যে টিন্ডটির আরও ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক হাজার ৯শত ৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী জিটাল শিক্ষার আওতায় আসবে। বিটিসিএল এর ব্রিজিং দ্য ডিজিটাল এডুকেশন ডিভাইড টু রিডিউস দ্যা গ্যাপ প্রকল্প এই কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করছে।

বাংলাদেশের জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে উদ্ভাবিত সফটওয়্যার শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করবে বিজয় ডিজিটাল অ্যাপ।  শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে হুয়াওয়ে ট্যাব সরবরাহ করবে। সরবরাহকৃত ট্যাবে বিজয় ডিজিটাল অ্যাপটি আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকবে।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো: নূর-উর-রহমান, বিটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর হেড অব অফিস বিয়্যাট্রিস কালদুন, বিজয় ডিজিটাল এর প্রধান নির্বাহী জেসমিন জুই, হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা  ঝাং ঝেংজুন, বনানীর টিএন্ডটি  বয়েজ হাইস্কুলের অধ্যক্ষ হালিমা বেগম ,শিশু শিক্ষার্থী লিমন খান এবং অভিভাবক লাকী বেগম বক্তৃতা করেন।