সতেরোর ভেতর চৌদ্দই দখল
ফুটপাতে মোটরসাইকেল রাখা নারায়ণগঞ্জ শহরে অত্যন্ত পরিচিত বিষয়। ক’দিন পর পরেই চাষাঢ়া মার্ক টাওয়ারের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী মোটরসাইকেল মেলার ছবি উঠে আসে পত্রিকার পাতায়। সাবেক এসপি হারুনের সময়কালে পুলিশের একটি দল এসে দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেলগুলি শুইয়ে দিয়েছিলেন। কনক্রিটের বিছানা থেকে সেগুলো দাঁড় করাতে আরোহীদের বেশ বেগ পেতে হওয়ায় পরবর্তী এক মাস মেলা আর বসেনি। তবে স্বভাব যায় না মরলেও। তাই মার্ক টাওয়ারে কর্মরত দুইজন নিরাপত্তারক্ষীর হাতে ১০ টাকা গুজে দিলেই ইচ্ছেমত প্রদর্শন করা যাবে আপনার মোটসাইকেলটি।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) মার্ক টাওয়ারের অস্থায়ী মোটরসাইকেল মেলায় ঘুরতে গিয়ে দেখা যায় নানা ব্র্যান্ডের ১৪/১৫টি মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে আছে। তবে এসব ক্রয়ের সুযোগ নেই। শুধু চোখ বুলিয়ে দেখা আর স্পর্শ করলে অ্যালার্মের আওয়াজ শোনার সুব্যবস্থা আছে। ফুটপাতে কেবল হকাররাই দখল করে না, অস্থায়ী মোটরসাইকেল মেলাও হকারদের দখলদারিত্বের সহযোগী ভূমিকা পালন করছে।
মার্ক টাওয়ারের সামনে মানুষের হাঁটাচলার জন্য ১৭ ফুট জায়গা রাখা হয়েছে। তবে সেটি কেবল পুলিশ এসে একটু হাঁকডাঁক করলেই পুরোটা খুলে দেয়া হয়। স্বাভাবিক সময়ে পথচারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ৩ ফুট। বাকি ১৪ ফুট মোটরসাইকেল মেলা আর জীবাণুনাশক টানেল দখল করে নিয়েছে। মেলার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষীর কাছে কারণ জানতে চাইলে তার ভাবখানা এমন ৩ ফুট হাঁটার জায়গা দেয়া হয়েছে এইতো বেশি!
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্থায়ী এই মেলার নাকি কোন অনুমোদন নেই! আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাকি প্রায়ই তাদের তাড়িয়ে দেন। কিন্তু চলে গেলেই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে মার্ক টাওয়ারের সামনে ফুটপাতের চিত্র। পথচারীরা এই মেলায় অংশ নিতে না চাইলেও জোড়পূর্বক তাদের দর্শনার্থী হতে হয়। করোনা কালে দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরার কথা বার বার বলা হলেও এখানে দূরত্ব বজায় রাখার একেবারেই সুযোগ নেই।
অনিচ্ছা স্বত্বেও ঘুরতে আসা মেলার এক দর্শনার্থী বলেন, আমি তো মার্ক টাওয়ারের সামনে হাটতে পারিনা। মূল সড়কে নেমে জায়গাটি পার হই। মোটরসাইকেল আর টানেলে পুরোটাই দখল হয়ে আছে। অথচ পাশেই পেট্রোল পাম্প। সেখানে জায়গা নিয়ে অনায়াসেই এসব মোটরসাইকেল রাখা যেত। মানুষ অন্যের অসুবিধা কখনই অনুভব করতে চায় না।
এভাবে বেশ কয়েকজনের মন্তব্য জানতে চাইলে সকলের মাঝেই একই উত্তর পাওয়া যায় যে, তারা কেউই মার্ক টাওয়ারের সামনে ১৪/১৫ জনের মোটরসাইকেলে বিরক্ত হতে চান না। অস্থায়ী এই মেলা দ্রুত উঠিয়ে দিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত হবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।