পানি বাড়ছে পদ্মায়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। জেলার তিনটি পয়েন্টেই পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া গেইজ পয়েন্টের বিপদসীমার দশমিক ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তবে অন্য দুটি পয়েন্ট পাংশার সেনগ্রাম ও সদরের মহেন্দ্রপুরে পানি বাড়লেও তা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

তারা জানান, সোমবার (১৩ জুলাই) সকালের পরিমাপকৃত তথ্য অনুযায়ী রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীর পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। যা রোববার থেকে দশমিক ৪ সেন্টিমিটার বেশি।

অন্যদিকে সদরের মহেন্দ্রপুরে বেড়েছে দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। যা গতকালের থেকে দশমিক ২ সেন্টিমিটার বেশি এবং গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পয়েন্টে বেড়েছে দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার। যা গতকালের থেকে দশমিক ৩ সেন্টিমিটার।

পানি বৃদ্ধি পেলেও তিনটি পয়েন্টের মধ্যে সেনগ্রামে দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার ও মহেন্দ্রপুরে ১ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চ ঘাট এবং গোয়ালন্দের দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার পরিবার।

   

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুদের গড়ে তুলতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুদের গড়ে তুলতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শিশুদের গড়ে তুলতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে শিশুদের গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদ আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনাসভা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন এবং একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তিনি শিশুদের অত্যাধিক ভালবাসতেন বলে তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর আদর্শ ধারণ করে প্রত্যেকটি শিশুকে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার মনোভাব নিয়ে বড় হতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দু’জনেই আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। তাই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবং তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার উদ্যোগের জন্য তিনি শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠানে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক নাসিম প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া, ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস হাসান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সাজ্জাদ হায়দার, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের দৌহিত্র ও সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, চিত্রনায়িকা মেহজাবিনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনাসভার শেষে মন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের পক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ঈদ উপহার তুলে দেন।

;

প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার, ভাই-বোন আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সময় কানে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে নকল করার দায়ে এক পরীক্ষার্থীসহ দুইজনকে আটক করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন- পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার ও তার ভাই আব্দুল জলিল। তারা জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর এলাকার আব্দুল মালেক মিয়ার সন্তান।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশের মত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় কেন্দ্রের ১০১ নম্বর কক্ষে পরীক্ষার্থী ছিলেন রিনা আক্তার। পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় আধা ঘণ্টা পেরোলেও প্রশ্নের উত্তরপত্রে কোনো কিছু না লিখে বসে ছিলেন তিনি। তখন পরীক্ষাকেন্দ্রে ডিউটিরত কেন্দ্র পরিদর্শকের সন্দেহ হলে রিনার দেহ তল্লাশি চালায়। এতে কানের ভেতরে লুকিয়ে রাখা খুব ছোট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ খবর দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ও তার ভাই আব্দুল আজিজকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, পরীক্ষার্থী রিনা আক্তার তার কানে ডিভাইস লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেই ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী হয়তো পরীক্ষার শেষ সময়ের দশ মিনিট পূর্বে উত্তর লেখার চেষ্টা করতেন। এটি করতে তার ভাই সাহায্য করেছেন। পরে তার ভাইকেও আটক করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার মাধ্যমে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আর কেউ থাকলে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।

;

রংপুরে বরাদ্দ নেই নতুন ট্রেন, ঈদ যাত্রার ভোগান্তির শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪,কম, রংপুর
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নতুন ৮ জোড়া ট্রেন বরাদ্দ হলেও রংপুর বিভাগে নেই একটিও। এ নিয়ে রংপুরের ট্রেন যাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এদিকে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ছাড়ছে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে। ফলে ঈদযাত্রায় নতুন করে ভোগান্তির সঙ্গে বাড়বে শিডিউল বিপর্যয়।

পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলের লালমনিরহাট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট বিভাগ থেকে ১০ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করে। এগুলো হচ্ছে রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, বুড়িমারী এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা, দ্রুতযান, দোলনচাঁপা, করতোয়া এক্সপ্রেস ও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস। প্রতিদিন এসব ট্রেনে ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রীর সংখ্যা দুই-তিন গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। যাত্রীদের চাপ কমাতে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বরাদ্দের বেলায় রংপুর বরাবরই উপেক্ষিত।

এদিকে ঈদের আগেই রংপুর বিভাগে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর শিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ রংপুর এক্সপ্রেস, লালমনিরহাট এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো প্রতিদিনই প্রায় ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে ছাড়ছে। ফলে ট্রেন যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে।

রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, রংপুর অঞ্চলের সঙ্গে সরকারের যে বিমাতাসুলভ মনোভাব ছিল তা এখনও যায়নি। ২৮২ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী রংপুর জেলা হলেও এখানে রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। রংপুর বিভাগ থেকে সারা দেশে ধান, আলু, কয়লা, কঠিন শিলা রপ্তানি হয়। লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করছে। কিন্তু তাদের যাতায়াতের জন্য কোনো বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ নেই।

এদিকে রংপুর রেলস্টেশনের সুপার শংকর গাঙ্গুলী বলেন, রংপুর এক্সপ্রেসসহ অন্য ট্রেন কিছুটা দেরিতে ছাড়লেও শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা নেই।

;

ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগের অপর নাম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ঈদ-উল ফিতরে সারাদেশের সাথে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কে বড়ধরনের বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ নিয়ে শংকিত পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। ঘরমুখী এবং  ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী মানুষের বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ নিয়ে শঙ্কায় সবাই। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হবার পর বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকার সাথে রাজধানীসহ প্রায় সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটিতে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে। কিন্তু ঢাকা থেকে ছয় লেনের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পদ্মা সেতু পার হয়ে ৬৫ কিলোমিটার দূরে ভাঙ্গায় পৌঁছানোর পর বরিশাল পর্যন্ত ২৪ ফুট প্রশস্ত ৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে তীব্র যানজট ও দুর্ঘটনা এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

জানা গেছে, ১৯৬০ থেকে ’৬৬ সালের মধ্যে মাত্র পাঁচ টন বহনক্ষম এ মহাসড়কটি দুই যুগ আগে জাতীয় মহাসড়কের মর্যাদা লাভ করলেও ১২ ফুট থেকে ২৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু বহন ক্ষমতা আর বাড়েনি। উপরন্তু দুই পাশের নানা অবৈধ স্থাপনা মহাসড়কটিকে গলা টিপে ধরেছে। পাশাপাশি বাড়তি ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে মহাসড়কের অবৈধ যানবাহনের আধিক্য। এতে করে বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনার সংখ্যা।

সড়ক অধিদপ্তর ও হাইওয়ে পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কে এখন প্রতিদিন গড়ে ১৮ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করছে যা ছয় লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় সমান। এ অবস্থায় বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটি সিঙ্গেল লেনের হওয়ায় প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি করে দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ২০ মার্চ পূর্ববর্তী ছয় মাসে এ মহাসড়কে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো দুই শতাধিক। এসব দুর্ঘটনাজনিত কারণ ছাড়াও নিত্যদিনের যানজটে প্রতিদিন নাকাল হচ্ছেন এ মহাসড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার যাত্রীরা। এসব দুর্ঘটনা ও যানজটে এ মহাসড়ক ব্যবহারকারী পণ্য পরিরবহনেও দীর্ঘসময় ব্যয় হচ্ছে। 

সূত্রমতে, ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর, টেকেরহাট, ভাঙ্গা, তালমামোড়, গৌরনদী, বাটাজোর, ভূরঘাটা, বরিশাল মহানগরীর নথুল্লাবাদ, নবগ্রাম রোড, চৌমুহনী, আমতলা মোড়, রূপাতলী ও বাকেরগঞ্জে যানজট এখন নিয়মিত ঘটনা। যেকারণে পদ্মা সেতু চালু হবার পর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতেই এখন বিভিন্ন যানবাহনের প্রায় তিন ঘণ্টা সময় চলে যাচ্ছে। ফলে সেতু চালুর পরে দ্রুত সময়ে ঢাকা ও সন্নিহিত এলাকায় পৌঁছানোর যে আশা করা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। 

বরিশালের গৌরনদী হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে মাদারীপুর সীমানার ভুরঘাটা পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩২ কিলোমিটারেই ২৭টি ব্ল্যাক স্পট বা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছেন। দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো হলো- ভুরঘাটা, ইল্লা, বার্থী, তারাকুপি, কটকস্থল, সাউদের খালপাড়, নীলখোলা, টরকী, গয়নাঘাটা, গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, আশোকাঠী, কাসেমাবাদ, বেজহার, মাহিলাড়া, বাটাজোর, বামরাইল, সানুহার, জয়শ্রী, সোনার বাংলা, ইচলাদী, শিকারপুর-দোয়ারিকা টোল প্লাজা, মেজর এমএ জলিল সেতুর ঢাল, নতুনহাট, রহমতপুর ব্রিজের ঢাল, রেইনট্রিতলা ও কাশিপুর ব্র্যাক অফিসের মোড়। এসব স্পটগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ, অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাধারণ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু জায়গায় সতর্কতামূলক চিহ্ন বসানো হচ্ছে।

ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলরত সাউদিয়া পরিবহনের সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর বদৌলতে যানবাহন কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় অপ্রশস্ত মহাসড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা এখন খুবই জরুরি।

সড়ক অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে ২০১৫ সাল থেকে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটি সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে যা ২০১৮ সালে শেষ হয়। এমনকি সমীক্ষার পথনকশা অনুযায়ী প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণে ১৮শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে একটি আলাদা প্রকল্পও অনুমোদন করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পরেও ভূমি অধিগ্রহণ কাজের অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। তবে ওইসব জমির বর্তমান বাজার মূল্য দ্বিগুণেরও বেশী বৃদ্ধি, নতুন পথনকশা অনুযায়ী বাড়তি প্রায় দু‘শ হেক্টরসহ জমির মূল্য পরিশোধে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে।

বাস্তবতার আলোকে ইতিমধ্যে বরিশাল মহানগরীর পরিবর্তে প্রায় ১৬ কিলোমিটার বাইপাস নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পটুয়াখালীতেও পথ-নকশার কিছু পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে এ দুটি স্থানে আরো অন্তত দু‘শ হেক্টর বাড়তি ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে। এজন্য ইতিমধ্যে সংশোধিত ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’ তৈরীর কথাও জানিয়েছে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল।

অপরদিকে মহাড়কটির বরিশাল বিমানবন্দর ও ফরিদপুরে একটি প্রতিববন্ধী স্কুলের কাছে এলাইনমেন্ট নিয়েও কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ দুটি স্থানের এলাইনমেন্ট নিয়ে মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হতে পারে ।

সূত্রের দাবি, অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি চূড়ান্ত না হলে এডিবি ছাড়া আরো কয়েকটি দাতা সংস্থার সাথে প্রকল্পটির অর্থায়ন নিয়ে কথা চলছে। অপরদিকে ২০১৫ সাল থেকে ’১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা, সমীক্ষা ও পথনকশা অনুযায়ী ২১১ কিলোমিটার মহাসড়কটির জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ২১ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও ভূমি অধিগ্রহণেই অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হতে পারে। যার পুরোটাই দিতে হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। 

বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান বলেন, অনন্ত ঈদ-উল ফিতরের আগে ও পরে মহাসড়কে চলাচলরত পরিবহনগুলো যেন বেপরোয়াগতিতে এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব পরিহার করে ওভারটেকিং করতে না পারে। স্ব-স্ব এলাকার হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে সকল দুশ্চিন্তার অবসান ঘটবে। এতে করে ঈদ মৌসুমে সড়ক দূর্ঘটনা জিরোতে নামানো সম্ভব হবে। তবে হাইওয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বরিশাল অফিসের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখাসহ সময়নুযায়ী প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, এজন্য বরিশালে পুলিশ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। হাইওয়ে পুলিশের সাথে সমন্বয় করে ভুরঘাটা থেকে বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মহাসড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দূর্ঘটনা প্রবন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং যানজটের সৃষ্টি হতে পারে এমন সব এলাকায় ট্রাফিক পরিদর্শকদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে ঈদে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে ভাঙ্গা পর্যন্ত ছয়লেনের এক্সপ্রেসওয়ে পৌঁছলেও সেখান থেকে ৯১ কিলোমিটার দক্ষিণে বরিশাল, ৩০ কিলোমিটার উত্তরে ফরিদপুর শহর এবং ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও ২০৩ কিলোমিটার দক্ষিণে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পৌঁছানোর মহাসড়কের কোনটিই মানসম্মত নয়। এসব মহাসড়ক এখনো মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থ। ফলে  আসন্ন  ঈদ-উল ফিতরের আগে ও পরে দেশের ৮ নম্বর বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কে সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন ।

;