অবিলম্বে চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও বাগান রক্ষার দাবিতে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামের টিকেট কাউন্টারের সামনে ফেডারেশনের উদ্যোগে লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া, দলদলিসহ এনটিসি’র সকল বাগানের শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও বাগান রক্ষার দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সিলেট জেলা সভাপতি বীরেন সিং’র সভাপতিত্বে ও সদস্য শিপন পালের পরিচালনায় সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক,উজ্জ্বল রায়, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান সফিক, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন, সিলেট এর সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, সাংবাদিক দেবাশীষ দেবু, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলন,কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক, হৃদেশ মুদি, হিলুয়াছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি মদন গঞ্জু, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মুখলেছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ রুদ্র।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ ৩ মাস যাবত লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া, দলদলি সহ ন্যাশনাল টি কোম্পানির চা শ্রমিকরা মজুরি থেকে বঞ্চিত। মজুরি না পেয়ে চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত ৫ আগষ্ট সরকারের পতনের পর থেকে অচলাবস্থা শুরু হয়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে, স্বাভাবিক ভাবে মানুষ আশা করেছিল বৈষম্যের অবসান হবে, কিন্তু সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে শ্রমিকরা। গত দুর্গাপূজার সময় থেকে আন্দোলন চলছে, আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বোনাস প্রদান করলেও নিয়মিত মজুরি দেয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান ও নানা প্রতিবাদের মুখে আশ্বাস দেয়া ছাড়া কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না, শুধু আশ্বাসে শ্রমিকের পেট চলে না সন্তান সন্ততিসহ অসহায় হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা, দোকানে বাকিও মিলছে না।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বকেয়া মজুরি পরিশোধ করে বাগানের স্বাভাবিক কর্ম পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। অন্যথায় আন্দোলন জোরদার করা হবে। মজুরি না পেয়ে প্রতিবাদে দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশি সময় কর্মবিরতি পালন করছেন। দীর্ঘদিন কর্মবিরতি চললে বাগানেরও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতি হবে, যা কোন ভাবে সুফল বয়ে আনবে না।
সিলেটের নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ আরও উল্লেখ করেন, সিলেট অঞ্চল চা বাগান অধ্যুষিত, সিলেটের অর্থনীতির জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া চা বাগানকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। সারাদেশের মানুষ চা বাগানের সৌন্দর্য দেখতে আসে। এই শিল্প ধ্বংস হলে সিলেটের মানুষও অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এজন্য সিলেটের সকল মানুষকে এ আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, অবিলম্বে যদি মজুরি পরিশোধ করে বাগান চালু করার উদ্যোগ নেয়া না হয়, তাহলে সিলেটের ২২ বাগানসহ সকল বাগানে কর্মবিরতি ও বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।