মানিকগঞ্জে যমুনার পানি কমলেও প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল
২৪ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি কমেছে যমুনা নদীর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা পয়েন্টে। তবে যমুনা নদীতে পানি কমলেও বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল-বিলের উপচে পড়া পানিতে প্লাবিত হচ্ছে জেলার পাঁচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাগুলো।
জেলার হরিরামপুর, দৌলতপুর, ঘিওর, সাটুরিয়া এবং শিবালয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে বেশ কিছু রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সামগ্রীর অভাব রয়েছে এসব এলাকায়।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, জেলার পাঁচটি উপজেলার ২৩১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ১৩ হাজার ৫৩৯ হেক্টর ফসলি জমি। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯২৪ টি পরিবার। আর পানিবন্দি রয়েছে সাত হাজার ২৮৬ জন মানুষ।
তবে সরেজমিনে বন্যার চিত্র আরও ভয়াবহ বলে দাবি স্থানীয়দের। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দৌলতপুর, হরিরামপুর এবং শিবালয় উপজেলার চরাঞ্চলের কয়েক হাজার বাসিন্দা। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার বেশির ভাগ রাস্তাঘাট। পানিবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
দৌলতপুরের জিয়নপুর ইউনিয়নের জহিরুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ইউনিয়নের বেশ কিছু রাস্তাঘাট। সড়কপথে অনেকটাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। এসব বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সহায়তার অভাব রয়েছে বলে জানান তিনি।
হরিরামপুর উপজেলার চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, পদ্মার পানিতে ডুবে উপজেলা পরিষদে যাতায়াতের প্রধান রাস্তা।উপজেলা পরিষদ চত্বরে বন্যার পানি। চরাঞ্চলের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ঘর থেকে বেরুলেই প্রয়োজন নৌকার। এসব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
সোমবার সকাল ৯ টার দিকে পর্যন্ত যমুনা নদীতে ১০ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যেখানে পানির বিপৎসীমা হচ্ছে ৯ দশামিক ৪০ সেন্টিমিটার। রোববার সকাল ৯ টায় যমুনা নদীতে পানি ছিল ১০ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার।
অর্থাৎ, গেলো ২৪ ঘণ্টায় ৬ সেন্টিমিটার পানি কমেছে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার যমুনা নদীর আরিচা পয়েন্টে। তবে এখনো বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান মানিকগঞ্জ পানি বিজ্ঞান শাখা পানির পরিমাপক মো. ফারুক আহম্মেদ।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার জন্য ১৩০ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার ৭০০ শুকনা খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও শিশুখাদ্য এবং গো-খাদ্যের জন্যও নগদ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সবশেষ তথ্যানুযায়ী বন্যা কবলিত এলাকায় এখনো কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।