শেষ হাটেও পশু বিক্রি নেই নাটোরে

  • ডিস্ট্রিক্ট করেস্পন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,নাটোরে
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শেষ হাটেও পশু বিক্রি নেই নাটোরে

শেষ হাটেও পশু বিক্রি নেই নাটোরে

 

উত্তরাঞ্চলের অন্যতম কোরবানির পশুর হাট নাটোরের তেবাড়িয়া হাটে পশু আমদানি ও বিক্রি দুটোই কম। ঈদের আগে সাপ্তাহিক শেষ হাটেও হয়নি কাঙ্ক্ষিত বেচা-কেনা। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজারে ক্রেতাসমাগম কম। এতে শেষ হাটে এসেও লাভ-লোকসানের হিসেব মেলাতে পারছেন না ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২৬ জুলাই) দুপুরের পর হাটে গিয়ে দেখা যায়, নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের দুই পাশে বসেছে গরুর ও খাসির হাট। ঈদের শেষ হাটে গত সপ্তাহের চেয়ে ক্রেতা সমাগম কিছুটা বাড়লেও নেই বেচা-বিক্রি। গরুর চেয়ে খাসির হাটে ক্রেতাদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে। ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে অধিকাংশ খাসি বিক্রি হতে দেখা গেছে। হাটে মাঝারি খাসির চাহিদা বেশি। যেসব ব্যবসায়ীরা বড় খাসি এনেছেন সেসব খাসির বিক্রি তুলনামূলক কম।

অপরদিকে, আজকের হাটেও বড় সাইজের গরুগুলো বেশি এনেছেন ব্যাপারীরা। তবে বিক্রি প্রায় নেই বললেই চলে। বড় গরুগুলোর দাম এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত চাইলেও হাতেগোনা কিছু ক্রেতা ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দাম কম বলছেন। মাঝারি সাইজের গরুগুলোর দাম ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা চাইলেও ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কম বলছেন ক্রেতারা।

বিজ্ঞাপন

পাবনার ঈশ্বরদী থেকে তিনটি গরু তেবাড়িয়া হাটে এনে একটিও বিক্রি করতে পারেননি খামারি বলাই ঘোষ। তিনি বলেন, 'কোরবানির সময় বিক্রির জন্য ৫টি গরু মোটাতাজা করেছিলাম। দুইটি নিজ এলাকায় বিক্রি করেছি। বাকী তিনটি গরু নিয়ে বিভিন্ন হাটে যাচ্ছি। খামারে পালন করায় দাম এক লাখ ৩০ হাজার টাকা চাইলেও কোনো ক্রেতা এখনও লাখের উপর উঠছেন না।'

সিংড়ার কৈগ্রামের গরু ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বলেন, 'ছয় মাস আগে ৫৫ হাজার টাকায় গরু কিনে মোটাতাজা করেছিলাম। এখন এক লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। কিন্ত ৬০ হাজারের বেশি দাম ওঠেনি এখনও। এই দামে গরু বেচলে লাভ তো দূরের কথা খরচই উঠবে না।'

উত্তরাঞ্চলের অন্যতম কোরবানির পশুর হাট নাটোরের তেবাড়িয়া হাটে পশু আমদানি ও বিক্রি দুটোই কম

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার কয়ামাজমপুর গ্রামের গরু বিক্রেতা আব্দুস সামাদ বলেন, 'গত পরশু শুক্রবার স্থানীয় তাহেরপুর হাটে ৪টি গরু তুলে ৮০ হাজার টাকা করে দাম চেয়েছিলাম। একটা গরু বিক্রি করেছি ৭০ হাজার টাকায়। তিনটা গরু এই হাটে এনেছি। দাম না পেলে কাল সোমবার আবারও তাহেরপুর হাটেই তুলতে হবে গরু। এবার লোকসান প্রায় নিশ্চিত।'

খাসি বিক্রেতা শাহীন আলী বলেন, 'এবার খাসির চাহিদা বেশি। খাসি বিক্রিও বেশ ভালো। সরবরাহ বেশি থাকায় দাম বাড়েনি।'

হাটের ইজারাদার মোস্তারুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'শেষ হাটেও কোরবানির পশু বিক্রি আশাব্যঞ্জক নয়। বড় গরু বেশি এলেও চাহিদা নেই। মানুষ খাসি বেশি কিনছে। হাট ইজারা নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। লোকসান কাটাতে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত হাট চালু রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

বিকেলে হাট পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন,'করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে হাটে পশু সরবরাহ কম। অনলাইনে হাট চালু হওয়ায় অনেককেই পশু কিনতে হাটে আসতে হচ্ছে না। আমরা হাটে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনে দিয়েছি।'