'কোরিয়ার সহযোগিতায় কর্ণফুলী নদীর উপর ব্রিজ হবে'
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, 'কোরিয়ার সাথে আমাদের বন্ধুত্ব অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। এর আগে কোরিয়া থেকে আমরা দশটি লোকোমোটিভ নিয়েছি সেটা খুব শীঘ্রই পেয়ে যাব। একই সাথে কোরিয়ার সহযোগিতায় কর্ণফুলী নদীর উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করতে পারব। আমাদের রেলওয়ের সিগনালিং উন্নয়নেও তারা যথেষ্ট সহযোগিতা করছে।'
বুধবার (২৯ জুলাই) দুপুরে রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে দ. কোরিয়া হতে ১৫০টি যাত্রীবাহী মিটারগেজ কোচ ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। চুক্তিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্রকল্প পরিচালক মো. হাসান মনসুর এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন কান্ট্রি ম্যানেজার, পসকো ইন্টারন্যাশনাল।
মন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রেল বিভাগকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করার জন্য ইতিমধ্যে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করেছি। আমাদের নিজস্ব যে সামর্থ্য সেটাও যেন ধীরে ধীরে আমরা গড়ে তুলতে পারি। রেলের অবকাঠামোগত উন্নয়নও জরুরী।'
তিনি আরো বলেন, 'রেলের অবকাঠামো তৈরিতেও কোরিয়া যেন আমাদের ভবিষ্যতেও কারিগরি, অর্থনীতিসহ সবদিক থেকেই সহযোগিতা করে। আমরা আশা করি এই দুই দেশের মধ্যে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে। একইসাথে দুই দেশের জনগণ উপকৃত হবে।'
নতুন চুক্তিটির কথা উল্লেখ্য করে মন্ত্রী বলে, 'যে কোম্পানির সাথে আজ আমরা চুক্তি করতে যাচ্ছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই কোচগুলো সাপ্লাই করতে পারবে। একই সাথে তারা তাদের কাজের মান বজায় রেখে এক বছরের মধ্যে সমস্ত মিটারগেজ কোচগুলো সাপ্লাই করবে।'
এ সময় মন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, এ যাত্রীবাহী ক্যারেজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্টেইনলেস স্টিল বডি, বায়ো-টয়লেট যুক্ত থাকবে, স্বয়ংক্রিয় এয়ার ব্রেক ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় স্লাইডিং ডোরসহ আধুনিক সুবিধাযুক্ত থাকবে। ১৫০টি কোচের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপিং বার্থ ৩০টি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কোচ ৩৮টি, শোভন চেয়ার মোট ৪৪টি খাবার গাড়ীসহ শোভন চেয়ার কোচ ১৬টি, পাওয়ার গাড়ীসহ শোভন চেয়ারকোচ ১২টি, রাষ্ট্রীয় পরিদর্শনের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ী ১টি, খাবার গাড়ী ১টি পাওয়ার গাড়ী ১টি এবং পরিদর্শনকারী ১টি।
কোচ সংগ্রহ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে অতি পুরাতন ১৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ প্রতিস্থাপন এবং মিটারগেজ ও ডুয়েলগেজ সেকশনে যাত্রীবাহী ক্যারেজ এর স্বল্পতা দূরীভূত করা, আধুনিক, নিরাপদ ও উন্নত যাত্রীবাহী ক্যারেজের মাধ্যমে যাত্রী সেবা নিশ্চিত করা, বর্ধিত যাত্রী চাহিদা মিটানোর জন্য নতুন ট্রেন চালু করা, বাংলাদেশ রেলওয়েতে মিটারগেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা, বাংলাদেশ রেলওয়ের মিটারগেজ ও ডুয়েলগেজ সেকশনে নিরাপদ ও উন্নত ট্রেন পরিসেবা নিশ্চিত করা,বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা এবং ক্রমবর্ধমান যাত্রী ও মালামাল পরিবহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিসেবা বৃদ্ধি করা।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেকে।