খুব কষ্টে আছে কুড়িগ্রামের বন্যা দুর্গতরা
নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করায় কুড়িগ্রামের সাবিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে। তবে বন্যা দুর্গত প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
করোনা পরিস্থিতির পাশাপাশি বন্যায় কর্মহীন হয়ে পড়া এসব মানুষেরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে।
বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এছাড়া নদী ভাঙন ও বন্যায় ভেসে গেছে দুই হাজারেরও বেশি পরিবারের ঘর-বাড়ি। তারা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। হাতে টাকা না থাকার কারণে ভাঙা ঘর-বাড়ি মেরামত করতে পারছে না।
এ অবস্থায় কোরবানির ঈদের আনন্দ মলিন হয়ে গেছে জেলার প্রায় ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের বন্যা দুর্গত মানুষের।
সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার গারুহারা চরের মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমরা দিনমজুরের কাজ করে খাই। করোনা ও বন্যার কারণে কাজ নেই। ৭ জনের পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে রয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত এক মাসের বন্যায় মাত্র ১০ কেজি চাল পেয়েছি। তাও শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় কীভাবে ঈদের কথা ভাবতে পারি? আমাদের কোনো ঈদ নেই।’
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের হাজেরা বেগম বলেন, ‘৪ মাস ধরে আমার স্বামীর হাতে কোনো কাজ নেই। ঘরে খাবার নেই। ঈদ আসলেও ছেলে-মেয়েদের মাংস খাওয়ানোর কোনো উপায় নাই।’
উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আমিন ও সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, তাদের ইউনিয়নের মানুষজন দীর্ঘদিন ধরে বন্যা কবলিত হয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছে। এদের জন্য আরও সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার দরকার। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। যা দিয়ে তারা ঈদের দিন খেতে পারবে।’
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। ঈদের আগে জেলার ৪ লাখ ২৮ হাজার ৫২৫ পরিবারকে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী আরও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।