‘ফিলিস্তিন ইস্যুতে নীরবতা, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ট্রাম্প-প্রীতি’
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের নীরবতার প্রসঙ্গ ধরে সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সমালোচনা করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ফিলিস্তিনের পক্ষে কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পরিকল্পনা ফিলিস্তিনের ওপর আঘাত হানবে বলে উল্লেখ করেন রাশেদ খান মেনন। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতার কথা তুলে ধরে সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ড. মোমেনের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ট্রাম্প প্রীতির কারণে কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চুপ?
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ কথা বলেন রাশেদ খান মেনন।
তিনি বলেন, প্যালেস্টাইন সমস্যা দীর্ঘদিনের এবং প্যালেস্টাইন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে প্যালেস্টাইনের সংগ্রামে সমর্থন করা। সম্প্রতি দেখলাম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে সামনে নিয়ে একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন প্যালেস্টাইন সম্পর্কে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব স্বীকৃত চুক্তি সম্পূর্ণভাবে নস্যাৎ করে প্যালেস্টাইনকে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে—প্যালেস্টাইনের কোনো আর্মি থাকতে পারবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের নিরস্ত্র করতে হবে। এই প্যালেস্টাইনের পক্ষে বাংলাদেশ সবসময় দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যখন দেশের রজতজয়ন্তী উৎসব পালনের ব্যবস্থা করেন তখন যে তিনজনকে ডেকেছিলেন তার মধ্যে একজন ছিলেন ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত। কিন্তু অবাক হচ্ছি ইসরায়েলের এই পরিকল্পনার ব্যাপারে একটি শব্দও তারা (বাংলাদেশ সরকার) উচ্চারণ করেনি।
তিনি আরও বলেন, খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছি, শুনেছি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ওআইসি করবে। বাংলাদেশ চিরকাল প্যালেস্টাইনের পক্ষে। প্যালেস্টাইনের জনগণ ওই পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যাখ্যান করেছে, ওআইসি প্রত্যাখ্যান করেছে তারপরেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে পরিপূর্ণভাবে নিশ্চুপ। এটা ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহেবের ভয়ে কিনা, আমার জানা নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প ক’দিন পর ভারত যাবেন, সেখানে মোদী সাহেবের সঙ্গে মিলে এই অঞ্চলের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। সেখানে বাংলাদেশ কোন অবস্থানে থাকবে?
সাবকে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দিন আগে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন, সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয় নিয়ে কথা বলেছেন, পররাষ্ট্র সম্পর্কে কিছু বলেননি। প্যালেস্টাইনের সমস্যার কথা দেখিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। রোহিঙ্গাদের সুদূর ভবিষত নিয়ে কথা বলেছেন। তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) প্যালেস্টইন সম্পর্কে নীরবতা আমি বুঝি না ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি প্রীতি থেকে কি না? এটা কোন ধরনের পররাষ্ট্রনীতি? আমি ৩০০ বিধিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছি।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, সময়ের সমস্যার কারণে আমি শুধু এটুক বলব— প্যালেস্টাইন সম্পর্কে আমাদের নীতি আজও বলবৎ। সেদিন ওআইসি’র সভায় আবারও বলেছি। সুতরাং এ নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই।