আগামী বছর থেকে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা
জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: আগামী বছর থেকে বুয়েট, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, সমন্বিত শিক্ষা আইন দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, সেটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদের নিয়ে যেতে পারব।
আমাদের উচ্চ শিক্ষার অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করেছি। সেখানে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স কারিকুলাম থেকে শুরু করে সব সাবজেক্টের মান যেন সঠিক রাখা যায়।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফের্ম ওয়ার্ক সেটিও চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য প্লান ২০১৮ ও ২০৩০ প্রণয়ন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা উচিত তারও একটি নির্দেশিকা প্রণয়ন করছি।
তিনি বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার দাবি দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা এবং যারা আর্থিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে আছেন তাদের সারা দেশে ঘুরে ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়া সেটি অত্যন্ত কষ্টকর। তার মধ্যে দিয়ে অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। সেটি যেন না হয় সেজন্য সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে। আগামী বছর থেকে আশা করছি অন্যান্য সকল ক্লাস্টারে অর্থাৎ সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের ক্লাস্টারগুলোতেও সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারব।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা গবেষণাগার করব। উদ্ভাবনী ল্যাব করব। অর্থাৎ একাডেমি এবং শিল্পের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যোগ্য লোক পাচ্ছে না আবার অনেক শিক্ষিতরা বেকার রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিল্প আর সমন্বয়ের মাধ্যমে কর্মজগতের চাহিদা অনুযায়ী কোর্স কারিকুলাম করার জন্য কাজ করছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যোগ্য আধুনিক বিজ্ঞানমনষ্ক সুস্থ সবল জাতি গঠনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা চাই জ্ঞান বিজ্ঞানে অগ্রগামী, চিন্তা চেতনায় প্রগতিশীল, সততা মানবিকতা ও দেশপ্রেমে উদ্ভুদ্ধ, শরীর মনে সুস্থ ও কর্মে উদ্যমী প্রজন্ম গড়ে তুলতে।
এমপিওভুক্তি নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, এমপিও ভুক্তির যে নীতিমালা হয়েছিল সেই অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এখন যাচাই বাছাই চলছে। সেখানে কারো হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ ছিল না। প্রতিবছরই এই প্রক্রিয়ায় এমপিওভুক্তি করব। যারা আবেদন করেছিলেন সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে সেখান থেকে এমপিও ভুক্তির তালিকা করা হয়েছে। এখন যাচাই বাছাইয়ে যদি কারো ভুল তথ্য ধরা পরে তাহলে তালিকা থেকে সেগুলো বাদ পড়বে, অবশ্যই বাদ দেওয়া হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপি নেতাদের দাবির জবাবে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করা হচ্ছে। আমি বুঝি না একজন দুর্নীতির দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তাকে সরকার কিভাবে মুক্তি দেবে? তার সাজা হয়েছে আদালতে, সরকারের কাছে আবেদনের তো কোনো বিষয় না। আদলত দণ্ড দিয়েছে আদালত চাইলে মুক্তি দিতে পারে। আর তারা যদি দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করে সেটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার।