খাদ্য অধিদপ্তরের এক পদের জন্য লড়বেন ১১৮৩ জন
দেশে শিক্ষিত বেকারের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। প্রতিটি সরকারি নিয়োগে কী হারে আবেদন জমা হয় তার চিত্র দেখলেই অনুমান করা যায় দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কত। বেশ আগে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৭ পদে ১ হাজার ১৬৬টি পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই ২৭টি পদের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৩ জন। অর্থাৎ একটি পদের জন্য লড়াই করবেন প্রায় ১১৮৩ জন।
রোববার (১৫ মার্চ) সংসদ ভবনে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়। এসময় খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনস্থ বিভিন্ন পদে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা নিয়োগ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য তাগিদ দেয় সংসদীয় কমিটি।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ২৭টি পদে মোট ১ হাজার ১৬৬টি পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এই দুই গ্রেডে চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৩ জন। খাদ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রথম পর্যায়ে ১৪ ক্যাটাগরির ১৩১টি পদের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে ৬ হাজার ৭৮ জন প্রার্থীর লিখিত পরীক্ষা আগামী ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো, বিদ্যমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে রোববার (১৫ মার্চ) সেই পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এদিকে কমিটির সভায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আগামী জুনের মধ্যে সবগুলো পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
বৈঠকে জানানো হয়, আসন্ন বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ৬৪টি জেলায় অ্যাপস এর মাধ্যমে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও যেসব জায়গায় কাঁচামাল উৎপাদিত হয় সেগুলো সরকারিভাবে সরাসরি ক্রয় এবং মনিটরিং করার সুপারিশ করা হয়।
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিগম আমন সংগ্রহ ২০১৯-২০২০ মৌসুমে প্রাথমিকভাবে ৬ লাখ মেট্রিক টন ধান, ৪ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
সে অনুযায়ী জেলা উপজেলা অনুযায়ী বিভাজন করা হয়। কিন্তু কয়েকটি জেলার অনুকূলে বরাদ্দকৃত সিদ্ধ/আপত চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি বলে ১৮ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন চালকে ধানে রূপান্তরিত করে লক্ষ্যমাত্রায় ধান ৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৮ মেট্রিক টন এবং আতপ চাল ৪৩ হাজার ৯০০ মেট্রিক নির্ধারণ করা হয়। সংগ্রহ মূল্য প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা, সিদ্ধ চাল ৩৬ টাকা, ও আতপ চাল ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ধান সংগ্রহের সময় শুরু হয় ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর, চাল ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে সেই সময় সময়সীমা ৫ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সে মোতাবেক গত ৫ মার্চ পর্যন্ত ৬ লাখ ২৬ হাজার ৬৫৭ মেট্রিক টন ধান, ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪০৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৪৩ হাজার ৪০১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১০ লাখ ৮ হাজার ৫০৯ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ লাখ ৭ হাজার ৪৬৫ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য সংগৃহীত হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ।
এছাড়া আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে ভেজালরোধে ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশ করে।
বৈঠকে জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি, ২০২০ (খসড়া) সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কৃষি, স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র ও আনুষঙ্গিক মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিতভাবে পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়।
কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাজী মো. সেলিম, মো. আব্দুল হাই এবং আঞ্জুম সুলতানা অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।