অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমায় সংসদে বাজেট পাস

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠে নতুন আলোর পথের সন্ধানে জাতীয় সংসদে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) দুপুর দেড়টার পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২০ সংসদে প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এরপর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ভোটে দিলে তা কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এরমধ্য দিয়ে পাস হলো ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বাজেট। এবারের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। আগামীকাল ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থ বছর।

বিজ্ঞাপন

এরপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মাজিদ মাহমুদ হুমায়ুনসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যগণ টেবিল চাপড়িয়ে অভিনন্দন জানান।

প্রসঙ্গত গত ১১ জুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০-২১ অর্থবছরের ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এবার করোনা সংকটের কারণে বাংলাদেশের সংসদের ইতিহাসের সবচাইতে কম সময়ে বাজেট পাস করা হলো। মাত্র দুই দিন বাজেটের ওপর কয়েক ঘণ্টা আলোচনা শেষে এই বাজেট পাস হয়। এর আগে সাধারণত ৪০ ঘণ্টার অধিক আলোচনা করে বাজেট পাস করা হলেও এবার করোনা মহামারির কারণে সীমিত আকারে সংসদ অধিবেশন চলে।

বিজ্ঞাপন

বিরতি দিয়ে দিয়ে অধিবেশন চলতে থাকায়। গত ১০ জুন অধিবেশন শুরু হলেও ৩০ জুন পর্যন্ত মাত্র ৭ কার্যদিবস সংসদ চলে। এরমধ্যে ১৫ জুন সম্পূরক বাজেট পাস হয়। আর ২৯ জুন অর্থবিল-২০২০ পাস করা হয়। এরপর সংসদের বৈঠক আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। ওই দিন সংসদ চলার পর ৮ম অধিবেশন তথা বাজেট অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটতে পারে।

এবারের বাজেটের স্লোগান ছিল ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ পরিক্রমা’। অর্থমন্ত্রী গতকাল ২৯ জুন অর্থবিল পাস করার সময় বলেছেন এবারও বাজেট বাস্তবায়ন করবোই ইনশাল্লাহ। বাজেট বাস্তবায়নে দেশের সকল জনগণ এগিয়ে আসবেন বলেও প্রত্যাশা করেন অর্থমন্ত্রী।

নির্দিষ্টকরণ বিল পাস:

আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের বাইরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সংযুক্ত দায় মিলিয়ে মোট ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ কোটি ৪৪ লাখ ২১ হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে।

এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের ভোটে গৃহীত অর্থের পরিমাণ ৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৪ কোটি ২৪ লাখ ৭ হাজার টাকা এবং সংযুক্ত তহবিলের ওপর দায় ২ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৮ কোটি ২০ লাখ ১৪ হাজার টাকা।

সংযুক্ত তহবিলের দায়ের মধ্যে ট্রেজারি বিলের দায় পরিশোধ, হাইকোর্টের বিচারপতি ও মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বেতনও অন্তর্ভুক্ত।

মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব:

আগামী অর্থবছরের বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিএনপির সংসদ সদস্যরা ৪২২টি বিভিন্ন ধরনের ছাঁটাই প্রস্তাব আনেন।

এর মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বিরোধী দলের আলোচনার পর সবগুলো প্রস্তাব কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।

জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবল হক চুন্নু, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ এবং রুমিন ফারহানা ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো এনেছিলেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তাদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত মঞ্জুরি দাবি সংসদে তোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।