‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যার নজীরবিহীন কালো অধ্যায়’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ ফাইল ছবি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর/ ফাইল ছবি

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যার এক নজীরবিহীন কালো অধ্যায় বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে তিনটায় দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল ও জনদাবীকে অগ্রাহ্য করে একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকে কালো অধ্যায় হিসেবে আখ্যায়িত করে এ বিবৃতি দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৫ জানুয়ারি ২০১৪ গণতন্ত্র হত্যার এক নজীরবিহীন কালো অধ্যায়। ঐদিন নির্লজ্জ একতরফা নির্বাচন করার উদ্দেশ্যই ছিল ৭৫ এর একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করার পথে অগ্রসর হওয়া। ৭৫ এর ২৫ জানুয়ারি গঠিত যে একদলীয় বাকশালী সরকার ব্যবস্থা ব্যর্থ হয় সেই ব্যর্থতার জন্য আওয়ামী লীগারদের মনোবেদনা পুঞ্জীভূত থাকে। সেই ব্যর্থতার গ্লানি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যই বর্তমান অবৈধ সরকার ভিন্ন আঙ্গিকে জনসমর্থনহীন একটি তামাশার নির্বাচনে সেই একদলীয় বাকশালের নবসংস্করণ তৈরি করেছে।’

ফখরুল বলেন, ‘জনমতকে তোয়াক্কা না করে, এ্যামিরাস কিউরিদের মতামতকে উপেক্ষা করে এমনকি নিজ দলীয় সংসদ সদস্যদের মতামতকেও উপেক্ষাসহ সকল বিরোধী দলের দাবিকে অগ্রাহ্যের মাধ্যমে শুধুমাত্র এক ব্যক্তির ইচ্ছায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। স্ববিরোধীতার এক নিকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। যারা জ্বালাও-পোড়াও এর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আন্দোলন করেছিল তারাই আজীবন ক্ষমতায় থাকার লালসায় সেই ব্যবস্থাটি সংবিধান থেকে মুছে দেয়। আর এটি করতে গিয়ে রক্তের অজস্র স্রোতধারায় অর্জিত গণতন্ত্রকে সমাহিত করতে বাংলাদেশের বহুদলীয় বহুমাত্রিক পরিচয়কে মুছে দেয় তারা। গণতন্ত্রের পথচলাকে থমকে দেয়া হয়। দেশে দেশে নিষ্ঠুর একনায়কদের একদলীয় ব্যবস্থার ন্যায় নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রিত তথাকথিত হাইব্রিড গণতন্ত্রকে জেঁকে বসানো হয়েছে জনগণের কাঁধের ওপর। মূলত: এটি নাৎসীবাদের বাংলাদেশি সংস্করণ। দেশে এক ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজমান। অবরুদ্ধ জাতির সাফোকেশন ভেন্টিলেট যাতে করা সম্ভব না হয় সেজন্য সকল ছিদ্র বন্ধ করে দেয় তারা।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধী কণ্ঠ, মত ও পথকে নিশ্চিহ্ন করে বেপরোয়া দেশশাসন করতে গিয়ে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি,  বিদ্যূৎ, পানি ও গ্যাসের ভুতুড়ে বিলে স্বল্প আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। আর এসব নিয়ে যাতে কোন প্রতিবাদ না হয় সেজন্য গণতন্ত্রকে রাষ্ট্র ও সমাজ থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন প্রতিদিন নির্মম নিষ্ঠুরতায় বিরোধী দলের কর্মসূচিকে বানচাল করতে সাজানো প্রশাসনকে বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এর মধ্য দিয়েই তারা মানুষের বাক-ব্যক্তি ও বিবেকের স্বাধীনতাকে কঠিন লৌহ শৃঙ্খলে বন্দী করে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মুখে গণতন্ত্রের কথা বলার অর্থই হলো মানুষের নাগরিক স্বাধীনতার দিকে বিপজ্জনক বার্তা।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও কখনো স্থান পায়নি। এরা কথার বাগাড়ম্বর দিয়ে ক্ষমতায় এসে প্রথমেই গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরে। এরা আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার শত্রু। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ এর নির্বাচন ছিল ‘৭৫ এর ব্যর্থ বাকশালকে পুণপ্রতিষ্ঠার যাত্রাপথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ঐ নির্বাচন স্বাধীনতার মূল চেতনা, গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। দেশের আপামর নির্যাতিত জনগণ এখন গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। জনগণের উদ্বেল অভিযাত্রা যেকোন মূহূর্তে রাজপথে প্রবল স্রোত তৈরি করবে।’