খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে লুকোচুরি খেলবেন না: নানক
বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার অসুস্থতা নিয়ে লুকোচুরি খেলার কোনো কারণ নেই মির্জা ফকরুল সাহেব। তার আসলে কি অবস্থা হয়েছে, কি অবস্থায় আছেন দেশবাসী অবশ্যই তা জানার অধিকার রাখে। সেটি নিয়ে লুকোচুরি করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শনিবার (০৮ মে) বিকেলে বনানী এরশাদ স্কুল মাঠে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নির্দেশে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
১৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাউন্সিলর মফিজুর রহমপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি,আওয়ামী লীগ নেতা পলয় সমাদ্দর বাপ্পী ও মেহেরুন নেছা মেরী।
বক্তব্যে শেষে ২৫০০ পরিবারের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার তুলে দেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বেগম খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার পরেও আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা মানবতার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী ক্ষমতাবলে ছয় মাসের জন্য অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়ে তাকে তার বাড়িতে রেখেছিলেন। সেই অন্তবর্তীকালীন জামিন তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই খালেদা জিয়া-তারেক ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল আমাদের নেত্রীকে। এরপরেও তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ হয়েছেন, তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহানুভূতিশীল। কিন্তু সেই সহানুভূতি কে তারা কি কাজে লাগাচ্ছে বিএনপি? বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে লুকোচুরি খেললো।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একবার বলেন উনি (খালেদা জিয়া) পরিপূর্ণ সুস্থ,পরের দিন আবার বলেন উনি সুস্থ না অনেক অসুস্থ। আবার বলে ওনার করোনা হয়েছে, আবার বলে করানো হয় নাই। একি লুকোচুরি? একি ভাওতাবাজি?
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে অসুস্থ হয়েছে, তার সুস্থতা আমরা কামনা করি। তেমনি ভাবে বিএনপি নামক দলটি এই দেশে রাজনীতি করুক, সুস্থ পথে রাজনীতি করুক। বিএনপিও তার অসুস্থতা থেকে বেরিয়ে এসে সুস্থ ধারায় রাজনীতি করুক আমরা সেটা চাই।
করোনা সংক্রমণে সরকারের কার্যক্রম নিয়ে নানক বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত দিল্লি তছনছ হয়ে যাচ্ছে। লাশের গন্ধে দিল্লি কলকাতার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে গেছে । আর আল্লাহর অসীম কৃপায় এবং রহমতে বাংলাদেশ সেই অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। একদিকে আল্লাহ তাআলার রহমত আরেকদিকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা, সাহসিকতার কারণে, সততার কারণে আজকে বাংলাদেশে আমরা এইভাবে বসে কথা বলতে পারি।
এ সময় মির্জা আজম বলেন, উন্নত দেশের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী যখন দিশেহারা হয়ে আসমানের দিকে তাকিয়ে আছে নিরুপায় হয়ে। তখন আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে আসেন বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে তিনি সাহস দিচ্ছেন, অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন এবং দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের পক্ষ থেকে গত ১৪ মাসে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে লক্ষ কোটি টাকার ত্রাণ সামগ্রী সহ সহযোগিতা তিনি দিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই।
আজ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি এমন মানবিক প্রধানমন্ত্রী দুঃসময়ে বিভিন্ন সময়ে যারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলে ছিল তখন ২১ আগস্টে তাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছিল সেই হামলার টার্গেট ছিল আমাদের নেত্রী। আওয়ামী লীগের সমস্ত জাতীয় নেতাদেরকে হত্যা করতে চেয়েছিল। চারদলীয় জোট বেগম খালেদা জিয়া-তারেক রহমান ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এক বার দুই বার না অনেকবার চেষ্টা করেছেন। আজকে সেই বেগম খালেদা জিয়া যখন জেলখানায় ছিলেন মানবিক কারণে শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা বলে জেলখানাতে খালেদা জিয়ার জন্য তার সহযোগিতা করার জন্য এক মহিলাকে দিয়ে দেন। যেটা আইনে নাই। আজকে খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাকে জামিন দিয়েছেন অসুস্থ অবস্থায়। তাকে সুচিকিৎসা দেয়ার জন্য শেখ হাসিনার কাছে আবেদন করেছেন তার পরিবার আজকে প্রধানমন্ত্রী সেটা বিবেচনা করছেন।