রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সকলকেই প্রয়োজন: নানক
একটি গাড়ি যেমনিভাবে শুধু একটি ইঞ্জিনে চলে না, গাড়িটির টায়ার-টিউব ছাড়া যেমন গাড়ি সম্ভব নয়, ঠিক তেমনিভাবে গাড়ির আরও বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ রয়েছে; যেগুলি ছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ গাড়ি চলতে পারে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন ঠিক রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে সকলকেই প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল স্তর, সকল অঙ্গ প্রতিষ্ঠান একযোগে-একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। এখানে দ্বান্দ্বিকতার কোন সুযোগ নাই। এখানে সাংঘর্ষিক কোন বিষয় নেই।
বুধবার (৩০ জুন) সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত করোনা ভাইরাস সংক্রমিত সীমান্তবর্তী জেলা-উপজেলায় সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, গত বছরের মার্চ থেকে সারাবিশ্ব যখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, বাংলাদেশও তার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল না। বাংলাদেশও এই মরণব্যাধি করোনায় আক্রান্ত হয়। কিন্তু মাননীয় নেত্রী সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশে জীবন এবং জীবিকা উভয়কে একইসাথে পরিচালনা করে, সঠিক ভূমিকা পালন করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আজকে বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাক্কালে আগামীকাল থেকে দেশ আবার একটি কঠিন লকডাইন শুরু হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেমনিভাবে গত বছরের মধ্য মার্চ থেকে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে এবং দলের সংসদ সদস্যরা চুপ করে বসে থাকেননি। এই দলের জাতীয় নেতৃতবৃন্দ করোনা মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ঝাঁপিয়ে পড়ার কারণে এই একমাত্র দল যার জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দকে আমাদের হারাতে হয়েছে।
এসময় জাহাঙ্গীর কবির নানক করোনা আক্রান্ত হয়ে দলের জাতীয় নেতা, সংসদ সদস্যসহ অনেকের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অন্যান্য দলের মতো ঘরে বসে থাকেনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল করোনায় মোকাবিলায়। বিশেষ করে লকডাউনের সময় মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত, যারা মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না, রাতের অন্ধকারে গিয়ে তাদের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। এই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগসহ সকলে। এই পার্টি, এই দল একমাত্র জাতির যেকোন প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে।
তাই বাংলাদেশে আগামীকাল থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। এই লকডাউনের পূর্ব মুহূর্তে আজকের যে আয়োজন যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের লকডাউনে মানবতার সেবায় পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল থেকে যে লকডাউনে সেই লকডাউনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে, অসহায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে এবং যারা মৃত্যু বরণ করবে, তাদের দাফন-কাফনের গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে। মানুষের পাশে থেকে মানুষকে বেশি বেশি করে মাস্ক পরিধান করাকে নিশ্চিত করতে হবে।
জাহাঙ্গীর কবির নানকের সভাপতিত্বে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক সামছুন্নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীমসহ ত্রাণ উপকমিটির সদস্যরা।
পরে প্রায় ৩০টি জেলা-উপজেলায় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।