সহিংসতা করে অর্জন নষ্ট করতে চাইলে দাঁতভাঙা জবাব, বিএনপিকে কাদের
সিরিজ বৈঠক করে বিএনপি ‘সিরিজ ষড়যন্ত্র’ করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সহিংসতা-জ্বালাপোড়াও করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নষ্ট করতে চাইলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘মানবতার আলোকবর্তিতা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে সিরিজ বৈঠক করছেন, সিরিজ বৈঠক তো নয়, ষড়যন্ত্র বৈঠক। আবারও জ্বালাপোড়াও ইচ্ছা বোধ হয় আপনাদের আছে। সেই দুরভিসন্ধি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। একটি কথা মনে রাখবেন যে, এবার যদি কোনো প্রকার সহিংসতার আশ্রয় নেন, দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, শেখ হাসিনার এই অর্জন, সাফল্য নষ্ট করতে চান, তাহলে জনগণকে সঙ্গে দিয়ে তার দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।
প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সফরে কোনো অর্জন নেই বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে অবাক লাগে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সফরে কোনো অর্জন নেই। ফখরুল সাহেব দুনিয়ার কোনো খবর রাখেন না। জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রত্যেকটি ফোরামের বক্তব্য, মূূল অধিবেশনে শেখ হাসিনার বক্তব্য সারাবিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সুনাম মর্যাদাকে শেখ হাসিনা নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, টিকা বৈষম্য নিয়ে কথা বলেছেন সারাদুনিয়া আজকে মুগ্ধ। তিনি বলেছেন সবার জন্য টিকায় সমান সুযোগ থাকতে হবে। এটা কি আপনি শোনেননি। নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাটি পড়েননি। এই পত্রিকার মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ও বহুল প্রচারিত পত্রিকাটি মন্তব্য করেছে।
মির্জা ফখরুলকে নিউইয়র্ক টাইমসের ওই মন্তব্যটি পড়ার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিউইয়র্ক টাইমস আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বলছে, দারিদ্রের ব্যাপারে কি করবেন, বাংলাদেশের দিকে তাকান। শেখ হাসিনার দিকে তাকান। দারিদ্রে বিমোচন কিভাবে করতে হয় শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা সাহস করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে পেরেছেন। ফখরুল সাহেব বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সরকার কিছু বলেনি। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নিজেদের সমস্যা সংকট আছে এর ভেতরেও এতদিন ধরে আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের নাগরিকদের জায়গা-আশ্রয়-খাবার দিচ্ছি। এই সমস্যা সমাধানে বিশ্বের বড় দেশগুলো আমাদের জন্য কিছুই করেনি। সাহস করে বঙ্গবন্ধু কন্যা এই সত্য উত্থাপন করেছেন।
জাতিসংঘের এই সফরে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশকে আরও একধাপ উঁচুতে নিয়ে গেছেন উল্লেখ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের জাতিসংঘে ভূমিকা, তার সাহসিকতা, মানবিকতা, দুরদর্শিতার যে প্রশংসা হয়েছে, সেই প্রশংসার ফলে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আপনারা সমালোচনা আর বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আরও একধাপ নিচে নেমে গেছেন।
এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে আপোষহীন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি এসেছিলেন বলেই মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধাদের বিচার করে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। তিনি এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। যে আওয়ামী লীগকে বিএনপি নেত্রী বলেছিলো ১’শ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না সেই আওয়ামী লীগ টানা ১৩ বছর অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।
সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আলোকবর্তিতা হয়ে তিনি দেশকে পথ দেখাচ্ছেন।