দুই ধারায় বিভক্ত সিলেট আওয়ামী লীগ!



মুহাজিরুল ইসলাম রাহাত, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় ৪ বছর পর সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র। কমিটিতে নিজেদের পছন্দের লোক এবং বলয় 'মাইনাস' হওয়ায় সিলেট ছাত্রলীগে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে ঘোষিত কমিটি নিয়ে কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীরা। ছাত্রলীগের এমন অস্থিরতায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে সিলেট আওয়ামী লীগ। একপক্ষ অবস্থান নিয়েছেন কমিটির পক্ষে অপর পক্ষ কমিটি ভাঙতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

কমিটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা ও জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রণজিৎ সরকার। বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন মহানগরের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ও মহানগরের সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ।

তাদের অভিযোগ কমিটি গঠনে ছাত্রলীগের দ্বায়িত্বশীল নেতারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেননি। নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তারা এই কমিটির কোনও দায়-দায়িত্ব নেবে না।

জানা গেছে, কমিটি ঘোষণার পরই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির বাসায় জরুরি বৈঠকে বসেন জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগরের সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। বৈঠক থেকে কমিটির বিষয়ে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ বিষয়ে বার্তা পাঠানো হয়। প্রয়োজনে এ বিষয়ে তারা দলীয় প্রধানের সাথে দেখা করতে পারেন বলে জানা গেছে।

তবে কমিটি নিয়ে অনড় অবস্থানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তাদের দাবি স্বচ্ছ ও ত্যাগীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিজের বলয়ের লোক পদবঞ্চিত হওয়ায় অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ তুলা হচ্ছে। যা মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কমিটিতে স্বচ্ছ, যোগ্য ও ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। লেনদেনের প্রশ্নই আসে না, এটা কেউ প্রমাণও করতে পারবে না।

সবার সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে লেখক বলেন, কমিটিতে সবাইতো আর সভাপতি-সম্পাদক হতে পারবেনা। এক্ষেত্রে যারাই বাদ পড়ছেন তারা অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন।

এদিকে, নিজ বলয়ে কোণঠাসা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দুই কমিটির শীর্ষ নেতা ও তাদের বলয়ের নিয়ন্ত্রক নেতারা। তারা গোপনে রাহেল সিরাজের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। তবে এই মুহূর্তে তারা সরাসরি রাহেল সিরাজের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন না।

সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত জেলার কোনও নেতা রাহেল সিরাজের দায়িত্ব না নিলে তাকে শেল্টার দেবেন গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা। তিনি সাবেক কয়েকজন ছাত্রনেতাকে সামনে রেখে রাহেল সিরাজকে দিয়ে জেলার ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের চেষ্টা চালাবেন।

সূত্র আরও জানায় রাহেল সিরাজ বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে এ বিষয়ে একাধিক বৈঠকও করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কাল-পরশুর মধ্যে তিনি বিমানযোগে সিলেট আসবেন। এরপর বিশাল শোডাউন করে সিলেটে নিজের অবস্থান জানান দেবেন রাহেল সিরাজ।

জানা গেছে, একসময় সিলেট ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রক ছিলেন চার নেতা। চারজনই ছিলেন এককালের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা। তারা হলেন-‘তেলিহাওর গ্রুপ’র নিয়ন্ত্রক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খাঁন, 'দর্শন দেউড়ি গ্রুপ’র নিয়ন্ত্রক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, 'কাশ্মীর গ্রুপ'র নিয়ন্ত্রক মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা ও 'টিলাগড় গ্রু'র নিয়ন্ত্রক জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রণজিৎ সরকার।

সিলেট ছাত্রলীগের রাজনীতিতে এ চার গ্রুপ বেশি আলোচিত। জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি এলেই শীর্ষ চার পদ পেতেন এ চার গ্রুপের অনুসারীরা। প্রায় দুই যুগ ধরেই ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিল এই চার নেতার অনুসারীদের আধিপত্য।

তবে ২০১৫ সালে দীর্ঘদিনের আধিপত্যে ভাগ বসান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আাজাদুর রহমান আজাদ। সে কমিটিতে 'কাশ্মীর গ্রুপ'কে 'মাইনাস' করে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হন 'শাহজালাল ব্লক'র নিয়ন্ত্রক আসাদ উদ্দিন আহমেদের অনুসারী আব্দুল আলিম তুষার। অপরদিকে জেলায় 'টিলাগড় গ্রুপ'কে 'মাইনাস' করে সাধারণ সম্পাদক হন আজাদুর রহমান আজাদ অনুসারী রায়হান চৌধুরী।

সবশেষ ২০২১ সালেও পুরোনো তিন ছাত্রলীগ নেতা তাদের বলয়ের আধিপত্য ধরে রাখেলও বাদ পড়ে 'তেলিহাওর গ্রুপ'। আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি আজাদুর রহমান আজাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা 'টিলাগড় গ্রুপ' ও আসাদ উদ্দিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা 'শাহজালাল ব্লক'।

অন্যদিকে, এবারও নিজেদের বলয়ের আধিপত্য ধরে রেখেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সাহা ও জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রণজিৎ সরকারের অনুসারীরা। নাদেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা 'দর্শন দেউড়ি' গ্রুপ থেকে কিশোয়ার জাহান সৌরভ হয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বিধান কুমার সাহার ‘কাশ্মীর গ্রুপে’র নাঈম আহমদ। জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের ‘টিলাগড় গ্রুপ’র অনুসারী নাজমুল ইসলাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন।

এদিকে, জেলার সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজকে নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। রাহেল মূলত ‘তেলিহাওর গ্রুপ’র কর্মী। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবেও দায়িত্বে আছেন। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান এই গ্রুপের নিয়ন্ত্রক। ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পরই এ বলয়ের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা রাহেলের বাসায় হামলা ও গুলিবর্ষণ করায় দেখা দিয়েছে রহস্য। ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, নাসির উদ্দিন খানের ভাতিজা জাওয়াদকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক না করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। জাওয়াদ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে ঠাঁই পেয়েছেন। অবশ্য কমিটি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে পদ থেকে অব্যাহতির ঘোষণা দেন।

অবশ্য রাহেল সিরাজ নিজেকে তেলিহাওর গ্রুপের অনুসারী দাবি করে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নাসির উদ্দিন খান আমার রাজনৈতিক অভিভাবক। আমি জানিনা কেন আমার গ্রুপের অনুসারী ও সহকর্মীরা আমাকে মেনে নিতে পারছেনা। তারা আমার বাসায় হামলা চালাচ্ছে; এটা আমার বোধগম্য নয়।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে কমিটি দেওয়াটা কেন্দ্রের ঠিক হয়নি। মূলত এ কারণেই নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া কেন্দ্রের পছন্দও সঠিক ছিলো না বলে তিনি জানান।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উচিৎ ছিলো স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কমিটি অনুমোদন দেওয়া। কিন্তু কেন্দ্রের নেতার কাউকে না জানিয়ে যাচাই-বাছাই ছাড়া হুটহাট কমিটি ঘোষণা করায় সিলেট ছাত্রলীগে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে।

এদিকে, কমিটি গঠনে কোটি টাকা বাণিজ্য হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীরা।

সবশেষ শনিবার (১৬ অক্টোবর) নগরে মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীরা। মানববন্ধন থেকে কমিটি বাতিলের জোর দাবি জানান বিদ্রোহীরা।

একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাদের অনুসারীরা।

এর আগে গত বুধবার বিকালে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে জেলার সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয়ে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে অছাত্র, এমসি কলেজের হোস্টেলে ধর্ষণ মামলার আসামিদের গডফাদার, বিভিন্ন চেক ডিজঅনার মামালার আসামি, বিশেষ করে ফ্রিডম পার্টির নেতার নাতিকে নিয়ে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করায় আমরা সিলেট ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লজ্জিত, হতাশ ও বিব্রত। আমরা কমিটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

এ কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অবরোধসহ টানা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;