‘এখনো লাহোরে স্বর্ণের দোকানে খালেদা জিয়ার বড় ছবি আছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বিএনপি নেতাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এখনো লাহোরে স্বর্ণের দোকানে খালেদা জিয়ার ছবি আছে। সেই দোকানের স্বর্ণ তার খুব প্রিয় ছিল। বিএনপির হৃদয়ে থাকে পাকিস্তান। মনে আছে পাকিস্তান। খালেদা জিয়ার দিলমে ‘পেয়ারে পাকিস্তান’ । এই গানেই গুণগুণ করতে থাকে। তাদের গাট্টি বেঁধে পাকিস্তানে পাঠানো উচিত।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এই দেশে কিছু দালাল সব সময় ছিল। স্বাধীন দেশে থেকেও তাদের মনে শান্তি ছিল না। পাকিস্তানের পরাধীনতাই তাদের পছন্দ ছিল। তারা স্বাধীন দেশে থেকেও চক্রান্ত করে। এর ফলে ৭৫ এর ঘটনাও ঘটে।
সারা দেশে বন্যায় কষ্ট রয়েছেন মানুষ। কিন্তু বিএনপির নেতারা কোন সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসেননি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী । তিনি বলেন, বন্যায় বিএনপি নেতারা কাউকে সহায়তা দিয়েছে? দেয়নি। ঢাকায় বসে বসে বসে নানা কথা বলছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দুর্গম এলাকায় গিয়ে খাদ্য বিতরণ করছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কাজ করে যাচ্ছে। সেনা বাহিনী ও বিমান বাহিনী উদ্ধার কাজ করছে। এটা নিয়েও তারা সমালোচনা করছে। এটাই হচ্ছে এদের চরিত্র।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে বলছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে কীভাবে? মিলিটারি ডিক্টেটরদের পকেট থেকে তৈরি দল; যাদের নেতারা পলাতক, সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাদের নিয়ে নির্বাচন করতে হবে? খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক জিয়া স্লোগান দেয়, পঁচাত্তরের পরাজিত শক্তি। এটার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, তার বাপ যে পাকিস্তানের দালাল ছিল, তার মাও পাকিস্তানী দালাল ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা মুছে ফেলতে চেয়েছিল। এটাই স্বাভাবিক- তারা এই স্লোগান দিবে। তাদের পাকিস্তানী লাথি ঝাটাও পছন্দ। তারা তো পাকিস্তানের পদলেহনকারী।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী, খালেদা জিয়ার রেখে যাওয়া নম্বর ওয়ান দুর্নীতির অবস্থান থেকে এখন বাংলাদেশকে মর্যাদাশীল অবস্থানে নিয়ে এসেছেন বলেও মন্তব্য করেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপির সমালোচনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পদ্মা সেতু করেছি। এটা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিএনপি। বিএনপি কোন মুখে প্রশ্ন তুলে। যাদের আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ভরা। তারা নানা প্রকল্পে দুর্নীতি করেছে। জনগণের জন্য তো কিছুই করেনি। আওয়ামী লীগ নিজের নয়, দেশের জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছে। করছেও তা-ই। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময় সংগঠনকে গুরত্ব দিয়েছেন প্রথম আওয়ামী লীগ যখন গঠন হয়- আওয়ামী মুসলিম লিগ হিসেবে গঠন হয়েছিল। পরবর্তী ধর্ম নিরপেক্ষ চিন্তা করে আওয়ামী লীগ নাম দেন। ৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া অনেক বড় বিষয় ছিল। কারণ বঙ্গবন্ধুর মনে হয়েছিল নির্বাচনের মধ্য দিয়েই নির্দিষ্ট হবে বাঙালির মুখপাত্র কে হবে। সে সময় অনেকেই নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনো কোনো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়নি। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, সফলতাও পেয়েছে। ৭০ সালের ভোটেও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট পেয়েছিল।
সরকার প্রধান বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের পাশে থেকেছে আওয়ামী লীগ। আর এটা করতে গিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের বারবার জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাও অসম্ভব কষ্ট করেছেন। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছেন মানুষের উন্নয়ন করেছেন। এজন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হয় না।