যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি



মহিউদ্দিন আহমেদ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি

যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি

  • Font increase
  • Font Decrease

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশী সময় ধরে সারাদেশে বিএনপি নিরবিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করে আসছে। এই সময়ের মধ্যে দলটির ৪জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। আহতদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের উপরে। গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ শতাধিক আর মামলা হয়েছে ৭২টি। সেই মামলায় নামসহ অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ২৫ হাজারের উপরে। তার ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা তো আছেই।

পরিস্থিতি যখন এমন ঠিক সেই সময় এসে বিএনপি অনুভব করছে এখন বিএনপির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিশ্রাম দেয়া উচিত। ইত্যবসরে দলটি সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে বিভিন্ন বিরোধী দল ও প্ল্যাটফর্মের সাথে যুগপৎ বা একযোগে আন্দোলন চালানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তারা নয় দফা দাবির একটি খসড়াও চূড়ান্ত করেছে ফেলেছে।

খসড়া অনুযায়ী,তাদের প্রথম দাবিটিই হচ্ছে বর্তমান সরকারকে একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে বিদ্যমান সংসদ ভেঙে দেওয়া; নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং অন্যান্য সমস্ত কালো আইন বাতিল; এবং রাজনৈতিক নেতা, আলেম ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা "মিথ্যা" মামলা প্রত্যাহার করা। যারা জোরপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন তাদেরকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া; দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচারের ব্যবস্থা করা। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তাদের খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠনের দাবিও আছে খসড়ায়।

সোমবার (১৯ সেপ্টম্বর) রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেই বৈঠকে এই খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, আমরা আমাদের দাবির খসড়া চূড়ান্ত করেছি যার মাধ্যমে আমরা যুগপৎ আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাবো। আমরা বিরোধী রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে আরও আলোচনা করে যুগপৎ আন্দোলনের রুপরেখা ও কৌশল চূড়ান্ত করব।

আগামীতে যে আন্দোলনই হবে সেটা নয় দফা দাবির ভিত্তিতেই হবে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সেই লক্ষ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের সংলাপ শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিএনপি ইতোমধ্যে ৩৫টি রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সেসব সংলাপে প্রায় সব দলই একযোগে আন্দোলনে সম্মতি জানিয়েছে। এখন একই বিষয় নিয়ে বাকী দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করবে বিএনপি।

১৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ‘একযোগে’ আন্দোলনের রূপরেখা খুব শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। আমরা একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়তে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে কাজ করছি এবং আমরা সেই আলোকে কৌশল চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

   

‘নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত রাখতেই উদ্ভট বক্তব্য দিচ্ছে আ.লীগ’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত রাখতেই উদ্ভট বক্তব্য দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের 'তলে তলে সব আপস হয়ে গেছে' বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, তলে তলে যদি সব কিছু ঠিক হয়ে যায় তাহলে কেউ কি প্রকাশ্যে তা জনসভায় বলে? আসলে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাদের নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত রাখার জন্য আওয়ামী লীগকে এ ধরনের উদ্ভট বক্তব্য দিতে হচ্ছে। আজকে মানুষের কোন অধিকার নেই। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়। মুক্তিযুদ্ধে নিপীড়িত মানুষ যেভাবে সাহায্য করেছিল আজকে গনতন্ত্রকে মুক্ত করতে দেশের মানুষ সেভাবে বিএনপির পাশে আছে।

বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচী সফল করার লক্ষে চকবাজার থানা বিএনপির প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি এই লুটেরা সরকারের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমূখে বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচী সফল করতে চকবাজার থানা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানান।

শাহাদাত বলেন, আজকে সরকারের একগুয়েমির কারণে দেশকে অনিবার্য সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সংঘাত এড়াতে সরকারকে দ্রুত পদত্যাগের ঘোষণা দিতে হবে। পদত্যাগ না করলে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। এই চট্টগ্রাম হচ্ছে বিএনপির দূর্ভেদ্য ঘাঁটি। অতীতে চট্টগ্রামে বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচী সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এই রোড় মার্চ কর্মসূচী সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। তিনি সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের দিক নির্দেশনা মূলক পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী লীগ এখন প্রশাসন, বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রযন্ত্র, এমনকি গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। জনমতের তোয়াক্কা না করে সরকার পুনরায় ক্ষমতায় যেতে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। এখন তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধীতা করছে। কারণ আওয়ামী লীগ এখন সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা জানে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারা জিততে পারবে না। তাই তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাটাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে।

চকবাজার থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রমজু মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুর হোসাইনের পরিচালনায় প্রস্তুতি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।

;

‘শাস্তি মওকুফের ক্ষমতা থাকলেও খালেদা জিয়াকে হত্যা করতে চায় সরকার’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

  • Font increase
  • Font Decrease

‘খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে ফখরুল মিথ্যাচার করছেন’—আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এমন অভিযোগের সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘৪০১ ধারায় পরিষ্কার বলা আছে—সরকার, সরকার, সরকার। তার (সরকার) ক্ষমতা আছে শাস্তি মওকুফের, সাময়িকভাবে স্থগিতের। দণ্ড মাফ করে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করার। মূল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়াকে হত্যা করা।’

বুধবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক পেশাজীবী কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এত বেশি তারা (সরকার) ভীত হয়েছে, এত বেশি হতবুদ্ধি হয়ে গেছে যে-এখন তাদের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, ভয় নাই, ভয় নাই, তলে তলে আপস হয়ে গেছে।’

‘আমরা আছি দিল্লি আছে, দিল্লি আছে আমরাও আছি’- ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমার প্রশ্ন তার (ওবায়দুল কাদের) কাছে। তিনি কী বলতে চেয়েছেন? দিল্লি কি আপনাদের অপকর্মগুলো জানিয়ে দিয়েছে যে—এভাবেই করতেই থাকো, দরকার নাই নির্বাচনের। দিল্লি কি বাংলাদেশে জোর করেই নির্বাচন ঘোষণা করে দাও বলেছে। তাহলে সেটা পরিষ্কার করে বলেন।’

তিনি বলেন, ‘তাহলে স্বীকার করলেন এখন পর্যন্ত ভয়ে ছিলেন। আপস হয়েছে কি হয়নি, সেটা আপনারা বললেন। আপনাদের মতো মিথ্যা কথাতো পৃথিবীতে কেউ বলতে পারে না। এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন যে, আলোচনা হয়েছে। অথচ আলোচনা হয়নি। ছবি তোলার জন্য কীভাবে দৌড়াদৌড়ি করেছে, সেটা সবাই জানে।’

লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্য অশ্লীল হলেও সেখানে কিছু সত্য বেরিয়ে এসেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকের দখলদার অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, লন্ডনে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তাঁর সেই অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মধ্যেও কয়েকটা সত্য কথা বেরিয়ে এসেছে। সেই সত্য কথার মধ্যে একটা কথা হচ্ছে—এই দেশে যা কিছু ঘটে, তাঁর ইঙ্গিতেই ঘটে, তাঁর নির্দেশেই ঘটে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, সেখান থেকে এটা স্পষ্ট এই দেশে বিচার বিভাগের কোনো প্রয়োজন নাই, এই দেশে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তের কোনো প্রয়োজন নাই, তাঁর সিদ্ধান্তই হচ্ছে সিদ্ধান্ত। পুরো বিষয়টাই হচ্ছে একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, ভয়ংকর রকমের একটা ঔদ্ধত্য এবং একটি ধারণা যে, এ দেশটি হচ্ছে আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমি ছাড়া এখানে আর কেউ নেই। আজকে শেখ হাসিনা অদ্বিতীয় হয়ে গেছেন। উনি ছাড়া আর কেউ নাই।’

ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার এই মুমূর্ষু অবস্থায় যারা এই ধরনের উক্তি করে, যারা এই ধরনের রসিকতা করে, তাদের জনগণ ধিক্কার দিচ্ছে। খালেদা জিয়া আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা, আমাদের বাতিঘর। আজকে তিনি মৃত্যুশয্যায় বলা যেতে পারে। তিনি পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন যে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে কোনো আপস নেই। কোনো শর্ত মেনে নিয়ে আমি কোথাও যাব না।’

বিএনপি সচেতনভাবেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘মোদ্দা কথা একটাই—আমরা গত দুই বছর ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছি। ইতিমধ্যে আমাদের ২২ জনের প্রাণ গেছে। আমরা রোডমার্চ করছি, সমাবেশ করছি, মিছিল করছি, সমাবেশ করছি, অনশন করছি। সচেতনভাবে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। তার অর্থ এই নয় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপরে যদি কেউ আঘাত করে, আমরা সেই আঘাতের প্রত্যাঘাত করব না।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। কনভেনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ আরও অনেকে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

;

সরকার বেগম জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চায়: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বেগম জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চায় বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি কর্তৃক আয়োজিত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি একথা বলেন।

মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকারকারী, যিনি রাজপথে সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করেছেন, যিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারকে পরাজিত করেছেন, এখন সমস্ত অসুস্থতা নিয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছেন,আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করেছেন,তার রোগ মুক্তির জন্য আমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ তা'আলা যেন তার হায়াত বাড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে যেনো তার চিকিৎসার সুযোগ করে দেন।

তিনি আরো বলেন, গত কিছুদিন আগে আমরা তাকে (বেগম খালেদা জিয়া) দেখছি, তার অসুস্থতার বিষয়ে কথা বলে যাচ্ছি, আন্দোলন করছি। আমরা জানি ভয়াবহ এই ফ্যাসিস্ট সরকার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন না। কারণ দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা (সরকার) তাকে (খালেদা জিয়া) হত্যা করতে চায়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চায়।

তিনি আরো বলেন, আমরা জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করি। সেজন্য আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করি। আল্লাহ যেন বেগম জিয়াকে সুস্থ করে দেন এবং তিনি যেন আবার আমাদের মাঝে থেকে লড়াই সংগ্রাম করতে পারেন।

দোয়া মাহফিলে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার খুবই অসুস্থ৷ তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। একজন প্রধানমন্ত্রী আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করছেন। এটি খুবই বিকৃত রুচির।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীরপ্রতীক) বলেন, গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ ফারুক, ১২ দলীয় জোটের আহবায়ক অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান কাজী মোস্তফা জামাল হায়দার, জামাত ইসলামের সহকারী জেনারেল সেক্রেটারি মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল প্রমুখ।

এ সময় তারা বিএনপি'র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া করেন।

;

খালেদা জিয়ার থাকার কথা কারাগারে: তথ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার থাকার কথা কারাগারে, বাইরে থাকার কথা নয়। তিনি শাস্তিপ্রাপ্ত, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী তার সাজা স্থগিত রেখে তাকে বাইরে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন।’

বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে ‘কনফেডারেশন অভ ফিল্ম, টিভি এন্ড ডিজিটাল মিডিয়া প্রফেশনালস’ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব ও কনফেডারেশনের সভাপতি সাদেক সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু জাফর অপু, নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইফতেখার আলী এবং সালাম চৌধুরী প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা তার সাথে নিয়মিত দেখা করে, যোগাযোগ করে এবং তার দলের নেতারাও যায়। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার একটি বড় মহানুভবতা। মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপি নেতাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন। উনারা বুঝি সেটি টের পাচ্ছেন না যে, প্রধানমন্ত্রী কি রকম মহানুভবতা দেখিয়েছেন। তাকে বাইরে থাকার ব্যবস্থাটা যদি বাতিল করা হয় তখন সম্ভবত তারা টের পাবেন যে বেগম জিয়ার জন্য কি পরিমাণ মহানুভবতা শেখ হাসিনা দেখিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মহানুভবতা দেখাতেন না। যেখানে তার বাড়ির সামনে গিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা দাঁড়িয়ে থাকার পর দরজা খোলেন নাই, যেখানে ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্তে¡ও তিনি কেক কাটেন, যেখানে ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর সেটা নিয়ে হাস্যরস করেন, সেখানে বেগম জিয়া এ ধরণের সহানুভূতি দেখাতেন না, সেটা খুবই স্পষ্ট।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদেশে বিএনপির “পেইড এজেন্ট”রা নানা ধরণের গুজব ছড়াচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে নানা ধরণের গুজব ছড়াচ্ছে। ক’দিন আগে গুজব ছড়িয়েছিলো যে ব্যাংকে টাকা নাই। এ জন্য সবাই হুড়মুড় করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেলার হিড়িক শুরু হয়েছিলো। এই গুজবগুলো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, বিএনপি এবং তাদের পেইড এজেন্টরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুজব ছড়াচ্ছে। তবে এতে তাদের কোন লাভ হচ্ছে না। আমরা গুজব নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন বিএনপি যেখানে সমাবেশ করে সেখানে নিজেরাই মারামারি করে, চট্টগ্রামে দুই গ্রুপ মারামারি করেছে, মারামারি করে ওদের পার্টির অফিস ভাংচুর করেছে, বিভিন্ন জায়গায় এ সমস্ত ঘটনা ঘটছে। আর যে সমাবেশগুলোর মাধ্যমে তারা সরকারকে টেনে নামানোর কথা বলছে, সরকারের পদত্যাগ চাওয়া হচ্ছে, সেখানে সরকার সমস্ত নিরাপত্তা বিধান করছে, যাতে তাদের সমাবেশে কোনো ধরণের বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। কিন্তু মাঝে মধ্যে তারাই পুলিশের ওপর চড়াও হয়।’

জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশকে নিয়ে একটি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। দেশের বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করলে এই কনফেডারেশন তাদের রুখে দাঁড়াবে এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সহযোগী ভূমিকা পালন করবে।’

সভায় সাদেক সিদ্দিকী কনফেডারেশনের পক্ষে মন্ত্রীর কাছে নয় দফা দাবি সম্বলিত একটি পত্র হস্তান্তর করেন। এফডিসি’র ক্যামেরা ও লাইট ভাড়ার হার প্রচলিত বাজার অনুযায়ী পুণ:নির্ধারণ, সেন্সর বোর্ডসহ বিভিন্ন কমিটিতে কনফেডারেশনের প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্তি, জাতীয় পুরস্কারে প্রোডাকশন, লাইট ডিজাইনারদের অন্তর্ভূক্তি, শুটিং ইউনিটের গাড়ি নির্বিঘ্নে চলাচলের দাবিসমূহ মন্ত্রী বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দেন।

;