‘বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের এখনো চিহ্নিত করার সুযোগ রয়েছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার প্রকৃত রূপ রহস্যে ঘেরা। প্রকৃত হত্যাকারীদের এখনো চিহ্নিত করার সুযোগ আছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমরা মুক্ত স্বাধীন দেশ পেয়েছি। যুগ যুগ ধরে জাতি তাদের অবদানের কথা স্মরণ করবে। ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করল? স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আজও জাতির সামনে তা তুলে ধরা হয়নি। যারা দেশকে বন্দুকের নলে লিজ দিতে চেয়েছিল এবং বিদেশি আগ্রাসনের এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে দায় রয়েছে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাংবাদিক ও চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের নিখোঁজের প্রসঙ্গ টেনে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের লড়াই সংগ্রাম ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঘটনার ডকুমেন্টারি গবেষণার কাজে হাত দিয়েছিলেন। বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে গিয়ে হত্যার কারণ, তথ্য উপাত্ত ও প্রমাণ খুঁজে বের করতে চেয়েছিলেন। জাতি ভেবেছিল জহির রায়হানের এই ডকুমেন্টারি প্রকাশ হলে অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে। তাই জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তাকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না। তাই আজও রাজনীতিবিদ ও জাতি নিয়ে যারা চিন্তা করেন তাদের কাছে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড রহস্য ঘেরা। তার ডকুমেন্টারি কোথায় আজও জানা যায়নি।

বিজ্ঞাপন

ভারত কখনোই আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধুর পরিচয় দিতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের ভোটাধিকার এদেশের মানুষ নির্ধারণ করবে। ১৪, ১৮ এবং ২৪ নির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারিনি। এই তিনটা ভোটই জনগণ বর্জন করেছে। আর এই আধিপত্যবাদী শক্তি (ভারত) এদেশে তাদের একজন সেবাদাস, দল দাসদেরকে প্রলুব্ধ করে তাদের মনোনীত সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫৩ বছর পরেও ভারত কখনো আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধুর পরিচয় দিতে পারেনি।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি, ইকোনমিক, বাংলাদেশের সামরিক অবকাঠামোর স্বার্থের চেয়ে তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ অনেক বেশি। যেসব প্রকল্পগুলো অনেক বড় সেগুলো বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে লাভ হবে ভারতের আর কাজটা করাবে বাংলাদেশে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের পছন্দ করা শাসক না হলে বাংলাদেশ চলবে না। এটা হচ্ছে তাদের নীতি। যারা তাদের চাওয়া-পাওয়া ও স্বপ্ন পূরণ করবে তারাই এদেশ শাসন করবে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে আমরা শত্রু মনে করি না। ভারতের জনগণ আমাদের শত্রু নয়। ভারতে যারা শাসক, চরম সাম্প্রদায়িক একটি গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আদর্শ এবং মূল্যবোধকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। এই দেশ যদি পদানত থাকে, একটি করদ রাজ্যে পরিণত হয়, ভারতের একটা বাজারে যদি পরিণত হয় তাহলে তো ভারতের লাভ বেশি।

জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।