সৎপথে নুনভাত খাওয়া অনেক মর্যাদার: প্রধানমন্ত্রী
অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ থেকে বিরিয়ানি খাওয়ার থেকে সৎপথে নুনভাত খাওয়া অনেক মর্যাদার, অনেক সম্মানের, অনেক ভালো- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কেন দুর্নীতি করে চুরি করে টাকা বাড়াতে হবে। ওই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, অসদুপায়ে অর্থ উপার্জন করে সেইটা দিয়ে আবার বিলাস বাসনে জীবন যাপন করা, ওটা দিয়ে ফুটানি-ফাটানি করা এটা কখনো এদেশের মানুষ বরদাস্ত করবে না। এটাই হলো বাস্তবতা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কিছু ক্ষুদ্র মানুষ আছে। সাধারণ মানুষ যখন খুব ভালো থাকে, তখন তাদের আঁতে ঘা লাগে। কাজেই তারা সেখানে বারবার একটা বাগড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। অপপ্রচার চালাতে চেষ্টা করে। কেউ যেন এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়, আমি সেটাই বলবো।
সরকারের সমালোচকদের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, একটা গোষ্ঠী আছে মানুষ যত ভালো থাকে, তারা তত মনঃকষ্টে ভোগে, অসুস্থতায় ভোগে। এখন তাদের এই রোগ কীভাবে সারানো যায় এটা জনগণই বিচার করবে, জনগণই দেখবে।
দেশের মানুষকে একটা সুন্দর জীবন দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আজকে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।চাল,গম, ভুট্টা উৎপাদন, মাছ উৎপাদন, সবজি উৎপাদন, তরি-তরকারি উৎপাদন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা বিশ্বে একটা স্থান করে নিয়েছি। এমনকি আমাদের গবেষণার মধ্য দিয়ে যে সমস্ত তরি তরকারি আগে শুধু শীতের সিজনে পাওয়া যেত এখন তা ১২ মাস পাওয়া যাচ্ছে। আমরা মানুষের যেমন খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি, সাথে সাথে মানুষের জীবন মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। এটা ধরে রেখেই আমরা এগিয়ে যাব। এই দক্ষিণ এশিয়ায় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে। সেবার মনোভাব নিয়ে সংগঠনকে গড়তে হবে।দেশের সেবা করতে হবে, জনগণের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মানুষের মাঝে যে সেবা দিচ্ছে এই কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে পেরেছি আমরা। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই গতিধারাটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। আমার এই দেশকে মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই। এর বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে সেই অভিযান আমরা অব্যাহত রাখব। কারণ বাংলাদেশের মানুষের জীবনের শান্তি নিরাপত্তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আর একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেই উন্নতি সম্ভব। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আমরা চাই।
প্রথম অধিবেশনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গূহের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ আরো অনেকে। সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু।