আওয়ামী লীগের সম্মেলন, প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সম্মেলনের মূল মঞ্চ, ছবি: সুমন শেখ

সম্মেলনের মূল মঞ্চ, ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে দলটির প্রথম অধিবেশনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সাজে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে দলের সাত দশকের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। নবীনদের জন্য সেখানে থাকছে সম্ভাবনাময় আগামীর বার্তা।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবারের সম্মেলন তেমন জাঁকজমকপূর্ণ হবে না বলে দলীয় নেতারা জানালেও ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এখন সাজ সাজ রব।

সম্মেলনস্থলের নজরকাড়া সাজসজ্জা ও আলোর ঝলকানি, বিশাল বিশাল বিলবোর্ড, এলইডি বোর্ড, ব্যানার ফেস্টুন, বেলুনের সাজসজ্জাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা যে কারো নজর কাড়বে।

চলছে ফিনিশিং টাচ, ছবি: সুমন শেখ

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, সম্মেলনের প্রস্তুতি ঘিরে ব্যস্ত সংশ্লিষ্ট সবাই। চলছে ফিনিশিং টাচ। কোনো দিকে তাকানোর ফুরসৎ নেই। কয়েকশ’ শ্রমিক টানা তিন সপ্তাহ ধরে মঞ্চ ও মাঠ সাজাচ্ছেন। কেউ ব্যস্ত বিশাল প্যান্ডেলের নিচে কয়েক হাজার চেয়ার বসাতে, কারো ব্যস্ততা লাইট ফ্যান চেক করাতে, কেউ বা ব্যস্ত রং তুলি নিয়ে।

নৌকার আদলে তৈরি মূল মঞ্চের সামনের বিশাল প্যান্ডেলের কার্নিশ সাজানো হয়েছে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন অর্জনের চিত্র দিয়ে। মূল মঞ্চের ডান পাশে সামনে একটি ছোট মঞ্চ করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হবে।

বিশাল এ কর্মযজ্ঞের তদারকিতে আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। দফায় দফায় তাদের পরিদর্শন, দিক নির্দেশনা ও পরামর্শে সাজানো হয়েছে উদ্যান।

মঞ্চ ও সাজসজ্জা কমিটির আহ্বায়ক এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আশা করি, এবারের সম্মেলনে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জমায়েত হবে। তাই আমরাও চেষ্টা করেছি সাধ্যমত আয়োজন করতে। সাজসজ্জায় আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও আমাদের নেত্রীর অর্জনগুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। সম্মেলনে আসা কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের জন্য শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের ব্যবস্থাও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে মূল মঞ্চ, ছবি: সুমন শেখ

পাল তোলা নৌকায় মূল মঞ্চ

এবারের সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ মূল মঞ্চ। ১০২ ফুট দীর্ঘ, ৪০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চটি নৌকার আদলে তৈরি। মঞ্চের পেছনের ‘জায়ান্ট ব্যানারে’ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ছবি ছাড়াও ঠাঁই পেয়েছে জাতীয় চার নেতা- তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন এম এ মনসুর আলী এবং এএইচ এম কামারুজ্জামানের ছবি। এছাড়া আছে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম চার নেতা- মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশের ছবি।

মঞ্চের সামনে রয়েছে বাঙালির গৌরব ও অহংকার পদ্মাসেতুর রেপ্লিকা। তাতে রয়েছে খরস্রোতা পদ্মার বুকে ৪০টি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সেতুটির সামনের বিশাল জলরাশিতে ভেসে বেড়াচ্ছে ছোট ছোট নৌকা। এক পাশে জেগে ওঠা চরে রাখা হয়েছে কাশবন। এর মধ্যে নোঙর করে রাখা হয়েছে বিশালাকার একটি পাল তোলা নৌকা। তাতে আবার জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি।

সম্মেলন মঞ্চে রয়েছে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা, ছবি: সুমন শেখ

৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় মূল মঞ্চে চেয়ার থাকবে ৭৭টি। মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীদের জন্য চেয়ার থাকবে ৩০ হাজার। এছাড়া সম্প্রসারিত মঞ্চে ১৫ হাজার চেয়ার দেওয়া হবে। ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হবে সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান।

প্যান্ডেলের সামনে বাম পাশে রয়েছে আরেকটি নৌকা। অপেক্ষাকৃত ছোট সে নৌকায় দাঁড়িয়ে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

সম্মেলনকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এরই মধ্যেই কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ভেন্যুতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। মূল মঞ্চ ও এর আশেপাশের নিরাপত্তা তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া সম্মেলনের দিন ভেন্যুতে আওয়ামী লীগের কয়েকশ’ নেতাকর্মী শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকবেন।

নেতাকর্মীদের প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঁচটি গেট থাকবে। শিখা চিরন্তনী গেটটি ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

সম্মেলনস্থল প্রস্তুত করতে তদারকি করছেন নেতারা, ছবি: সুমন শেখ

সিআরআইয়ের ভিন্ন আয়োজন

আওয়ামী লীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিভিন্ন নিদর্শন নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের হাজির হয়েছে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।

স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘ পথ চলার বিভিন্ন ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করে ১০টি স্থাপনা প্রদর্শন করছে তারা। যা সম্মেলনের জৌলুস আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

১০টি স্থাপনা হলো-‘ওয়াক উইথ দ্যা লিডার’, ‘রোড টু টোয়েন্টিফার্স্ট কাউন্সিল’, ‘লাইট আফটার ডার্কনেস’, ‘ফেইস অফ এএলবিডি’, ‘এএলবিডি রিজিওনাল ফুটপ্রিন্টস’, ‘এলবিডি-ইনফ্রন্ট অফ আ মিরর’, ‘কুওটস ফর ফিউচার লিডারশিপ’, ‘আ নিউ ইরা-পার্ট ওয়ান’ এবং ‘আ নিউ ইরা-পার্ট টু’।

এছাড়া ‘তারুণ্যের ভাবনায় বাংলাদেশের রাজনীতি’ নামে একটি মতবিনিময় অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হবে সিআরআইয়ের পক্ষ থেকে। ২৫০ জন তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহণে কাউন্সিলের প্রথম দিন অনুষ্ঠানটি সকাল ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলবে।

চলছে ফিনিশিং টাচ, ছবি: সুমন শেখ

থাকছেন না কোনো বিদেশি অতিথি

সামনে মুজিববর্ষ। তখন অনেক বিদেশিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এজন্য আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে বিদেশি কোনো অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ অন্যসব পেশার বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে অতিথিদের তালিকা তৈরি করে সম্মেলনের কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত গণমাধ্যম ও সিনিয়র সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানোর তথ্য নিশ্চিত করা যায়নি।

দলটির সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এবং অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম জানান, বিমানবন্দর, বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনসহ ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে বিলবোর্ড ও ব্যানারের মাধ্যমে অতিথি ও কাউন্সিলরদের স্বাগত জানানো হবে। সম্মেলনের আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে দাওয়াতপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

পাটের ব্যাগে উপহার

সম্মেলনে আগত কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের পাটের ব্যাগে উপহার দেওয়া হবে। এতে থাকবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে, তার তালিকা সম্বলিত একটি কার্ড থাকবে। একই সঙ্গে থাকবে দু’টি সিডি। একটিতে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন এবং অন্যটিতে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র, একটি প্যাড ও একটি কলম থাকবে পাটের ব্যাগে।

সম্মেলনের প্রতিনিধিদের মধ্যে ২৫ হাজার পাটের ব্যাগ বিতরণ করা হবে জানিয়ে দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, প্রতিটি ব্যাগে আওয়ামী লীগের ইতিহাস সম্বলিত স্মরণিকা, শোকপ্রস্তাব, দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভাষণ এবং গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র থাকবে। এছাড়া সভানেত্রী শেখ হাসিনার দেড়শ’ আলোকচিত্র সম্বলিত একটি অ্যালবামও দেওয়া হবে।

এছাড়া ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ওয়েব পেজ উদ্বোধন করেছে প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি। ওয়েব পেজের ভিডিও অংশে সম্মেলন লাইভ দেখানো হবে।

চলছে ফিনিশিং টাচ, ছবি: সুমন শেখ

নৃত্য পরিবেশনায় শিবলী-নীপা

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবে দেশ বরেণ্য শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ সময় নাচ পরিবেশন করবেন শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নীপা।

সাংস্কৃতিক পর্বে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা গান গাইবেন। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোনো ‘থিম সং’ থাকছে না। আধা ঘণ্টার মতো হতে পারে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

মোরগ-পোলাও দিয়ে আপ্যায়ন

সম্মেলনের প্রথম দিন ২০ ডিসেম্বর ৫০ হাজার নেতাকর্মীর দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। খাবারের ব্যাগে থাকবে মোরগ-পোলাওয়ের সঙ্গে একটি করে ডিম, ফিরনি ও একটি পানির বোতল। এছাড়া কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে ব্যক্তিগতভাবেও খাবারের আয়োজন থাকবে।

সম্মেলন উপলক্ষে ১০০ চিকিৎসক নিয়ে ১২টির মতো প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র প্রস্তুত করছে স্বাস্থ্য উপকমিটি।

   

উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতি চলতে পারে না: নাছিম  



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আমরা কখনো দেখি, দুর্নীতিও মাঝে মধ্যে মাথা চাড়া দেয়। উন্নয়ন, অগ্রগতির পাশে দুর্নীতির কোন সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানী খামার বাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে কৃষকলীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভার বক্তব্যে তিনি এমন্তব্য করেন।

নাছিম বলেন, উৎপাদন, উন্নয়ন, অগ্রগতি খুবই সমার্থক শব্দ। এর পাশাপাশি আমরা কখনো দেখি, দুর্নীতিও মাঝে মধ্যে মাথা চাড়া দেয়। উন্নয়ন, অগ্রগতির পাশে দুর্নীতির কোন সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি না। এখন সময় এসেছে, দুর্নীতিবাজদের যে চক্র গড়ে উঠেছে এই চক্রকে ভেঙ্গে দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ব সভায় সম্মানের জায়গায় আমরা পৌঁছে দিতে চাই।

আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিজেরা উৎপাদন করবো মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিজেরা উৎপাদন করবো সে মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দদের বলেছেন, আমাদের প্রতি ইঞ্চি মাটি, প্রতিটি উৎপাদনের জায়গায় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সচেষ্ট থাকবো।

এদেশের কৃষকরা দুর্নীতি করে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, গায়ের ঘাম পায়ে ফেলে যারা উৎপাদন করে তারা দুর্নীতি করে না। জাতির পিতা বলেছেন, ৫ শতাংশ মানুষের ভিতরেই দুর্নীতিবাজ। সেটা হলো যারা শিক্ষিত, যারা অফিস আদালতে চাকরি, রাজনীতি করে, মাঠে ময়দানে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্য করে এদের মধ্যেই দুর্নীতির আখড়া। এই দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। 

তিনি বলেন, কৃষক লীগের বন্ধুরা যারা মাঠে ময়দানে কৃষকদের সঙ্গে কাজ করেন, আপনারাই দুর্নীতিবাজদের চক্র ভেঙ্গে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হন। আমরা আগামী বাংলাদেশকে, নতুন প্রজন্মকে আর যাই হউক দুর্নীতিবাজদের কাছে, সন্ত্রাসী চক্রদের কাছে, দানবদের কাছে রেখে যেতে চাই না। আমাদের আগামী প্রজন্ম, আমাদের নতুন প্রজন্ম, আমাদের সম্ভাবনাকে নিরাপদ রেখে, দুর্নীতিমুক্ত রেখে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবোই, তুলবো। এটাই হউক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রত্যয়। 

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

;

বিএনপির নেতা লন্ডনে, কর্মীরা হতাশ, হাল ধরার কেউ নেই: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির নেতা লন্ডনে কর্মীরা হতাশ, কি করবে, হাল ধরার কেউ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানী খামার বাড়িতে বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে কৃষকলীগের ৫২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি পথ হারা পথিকের মতো দিশেহারা। এই দলের ভবিষ্যৎ আছে বলে কর্মীরাও বিশ্বাস করে না। তাই এদের নিয়ে মাথাব্যথার কোন কারণ নেই। তবে কারণ একটা আছে, তারা অর্থ পাচার, দুর্নীতির রাজা, সাম্প্রদায়িক। তাই তাদের রুখতে হবে। আমাদের সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি। এদের প্রশ্রয় দেয়া যাবে না, রুখতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে যারা বাংলাদেশ নিয়ে বেশি কথা বলেন, কথায় কথায় সরকারের, গণতন্ত্রের সমালোচনা করেন। যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ তারা নির্বাচনের সমালোচনা করেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের রক্তস্রোত যারা বইয়ে দিয়েছিলেন, কারাগারে জাতীয় নেতাদের হত্যা করে তাদের গণতন্ত্র শুরু। এরাই এখন সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্রের কথা বলে। নিজেরা বিপদে আছে, দেশকে বলে বিপদে আছে। বাংলাদেশ বিপদে নেই, শেখ হাসিনা যতক্ষণ আছে ইনশাআল্লাহ তার যথাযথ উচ্চতায় অধিষ্ঠিত থাকবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা প্রমান হয়েছে আমাদের স্ট্যাবিলিটির প্রতীক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, অর্থনীতি, ভাবমূর্তি শেখ হাসিনার হাতে নিরাপদ। সে জন্যেই ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মাঝে ৫ বছর ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনে তাকে হারানো হয়েছিলো। এরপর ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছেন। আমরা ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসিনি।

এবারের নির্বাচন ডেমোক্রেটিক নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারে নির্বাচন কোনো সেমি ডেমোক্রেটিক নির্বাচন না, এটা ডেমোক্রেটিক নির্বাচন। তারা অংশগ্রহণ করেনি তারপরও ৪২ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। এটা অনেক উন্নতে দেশেও হয় না।

এ সময় কৃষির প্রতি জোর দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, অন্য সব কিছুর উত্থান-পতন হতে পারে কিন্তু কৃষি ঠিক থাকলে সব ঠিক। তাই আমি সবাইকে বলবো নেত্রীর যে প্রায়োরিটি, তা প্রায়োগিক বাস্তবতায় অক্ষরে অক্ষরে অনুধাবন করবেন।

এদেশের নানা আন্দোলন সংগ্রামে কৃষকদের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ঢাকা শহরের চারশো বছরে অনেক স্মৃতি আছে সংগ্রাম, আন্দোলন, বিপ্লবের। বাংলাদেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনায় হয়েছিলো কৃষকদের হাতে। খন্ড খন্ড কৃষক বিদ্রোহ। ফকির, তিতুমীরের বাশের কেল্লা, নীল বিদ্রোহ এসব কৃষকদের আন্দোলন।

কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষক লীগ সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

;

সৈয়দপুরে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
সৈয়দপুরে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা আটক

সৈয়দপুরে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারী সৈয়দপুরে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকসহ তিন নেতাকে আটক করেছে থানা পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল)সকালে শহরের ধলাগাছের আমিরের বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও সৈয়দপুর কামারপুকুর এলাকার মৃত মাওলানা গোলাম কিবরিয়ার ছেলে মাজহারুল ইসলাম(৫২), সদরের উকিলপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে এ্যাড.আব্দুল ফারুক আল লতিফ( ৫৩), সৈয়দপুর ডাংগা পাড়া স্বাসকান্দ এলাকার মৃত আব্দুল বসুনিয়ার ছেলে খয়রার হোসেন বসুনিয়া (৫৩)।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।পরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

;

‘বিনা কারণে কারাগার বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিএনপির সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির জন্য দিনের আলো যেনো নিষিদ্ধ। বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্ত বাতাস গ্রহণ করা থেকে নিষিদ্ধ। এদেরকে সবসময় কারাগারে থাকতে হয়। বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে ঢুকানো, ধরে ফেলা এই কর্মসূচি যেন শেখ হাসিনার শেষই হচ্ছে না। আমার মনে হয় তিনি (শেখ হাসিনা) একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। এর কারণ হলো, তিনি (শেখ হাসিনা) জানেন তার কোনো জনসমর্থন নেই। জনসমর্থন না থাকলে সেই সরকাররা প্রচণ্ড স্বেচ্ছাচারী হয়, ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে এবং জনগণের আওয়াজ পেলেই তারা নিপীড়নভাবে সেটাকে দমন করে।

তিনি বলেন, বিএনপির ২৫ থেকে ২৬ হাজার নেতাকর্মী একটা ডামি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় চারমাস কারাগারে ছিলেন। কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখনো কারাগারে বন্দী রয়েছে। এর জবাব কি শেখ হাসিনা দিতে পারবেন? এর জবাব যদি শেখ হাসিনা দিতে পারতেন তাহলে তিনি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতেন। শেখ হাসিনা যেভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তিনি (শেখ হাসিনা) আজকে বলেছেন, ‘রাজবন্দী কেউ নেই ; রাজনৈতিক কারণে কেউ বন্দী নেই। যারা বন্দী রয়েছে তারা বিভিন্ন মামলার আসামি।’

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী; রাজবন্দী নামে কোনো শব্দ কি আইন গ্রন্থে লেখা আছে? রাজনীতি যারা করে তাদেরকে কারাগারে বিভিন্ন মামলা দিয়েই ঢুকানো হয়। এ রীতি ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে। আপনার বাবা পাকিস্তান আমলে অনেকবার জেলে গিয়েছে। সেখানে আপনার বাবা যে রাজনৈতিক কারণে জেলে গিয়েছে সে কথা লেখা নেই। গাফফার চৌধুরীর একটা লেখা পড়ে জানতে পেরেছি, পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১৭টা দুর্নীতির মামলা দিয়েছিল আইয়ুব খান। কিন্তু, সারাদেশের মানুষ মনে করতো শেখ মুজিবসহ যারা রাজবন্দী রয়েছে তাদের নামে বিভিন্ন মামলা দিয়েই মুলত কারাগারে ঢুকানো হয়। উপমহাদেশে এরকমভাবে অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধীসহ আরও অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। কিন্তু কোথাও রাজনৈতিক কারণে কারাগারে গিয়েছে সেটা লেখা থাকে না। যারা কায়েমি শাসক গোষ্ঠী তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দিয়ে তাদের নাম দেয়। আপনি বলছেন তারা (বিএনপির নেতাকর্মী) বিভিন্ন মামলার আসামি। গোটা জাতি মনে করে আপনি ষড়যন্ত্র করে আন্দোলনকামী, গণতন্ত্রকামী, যারা সত্যকথা বলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতার মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনি তাদেরকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছেন।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, আপনার নামে যে ১৫টি মামলা ছিল। সেগুলো কি রাজনৈতিক কোনও মামলা ছিল? সেগুলো দুর্নীতির মামলা ছিল। আপনি ক্ষমতার জোরে সেটি বাতাসে উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলে রাখি, প্রত্যেকটা জিনিসের রেকর্ড আছে।

জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট পারভীন কাউসার মুন্নীর সভাপতিত্বে এবং জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মো. সারোয়ার হোসেন রুবেলের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী শফু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির প্রমুখ।

;