দেবর-ভাবির সমঝোতা, জাপার আনুষ্ঠানিকতার কাউন্সিল



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বারতা২৪.কম, ঢাকা
জি এম কাদের ও রওশন এরশাদ

জি এম কাদের ও রওশন এরশাদ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেবর জিএম কাদের ও ভাবি রওশন এরশাদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ায় জাতীয় পার্টির (জাপা) কাউন্সিল এখন অনেকটা আনুষ্ঠানিকতা মনে করা হচ্ছে। দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ পেতে যাচ্ছেন রওশন আর চেয়ারম্যান তথা প্রধান নির্বাহী থাকছেন জিএম কাদের। গঠনতন্ত্রের নতুন সংশোধনী কাউন্সিলে তোলা হবে। অনুমোদিত হলে আগামীতে দেবর-ভাবি পরামর্শ করে জাতীয় পার্টি পরিচালনা করবেন। এমন স্বত্বই থাকছে বলে জানা গেছে।

এরশাদ বিহীন জাতীয় পার্টির প্রথম কাউন্সিলে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) এমন সিদ্ধান্ত আসছে—এটা প্রায় নিশ্চিত করে বলা চলে। প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত, ৮ হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন। এর বাইরে দলের অন্যান্য কর্মীদের ডাকা না হলেও ঢাকা ও তার আশপাশ থেকে জিএম কাদেরের সমর্থনে একটি গোপন শোডাউনের প্রস্তুতির কথা জানা গেছে।

এরশাদ জীবদ্দশায় পার্টির ভবিষ্যত চেয়ারম্যান হিসেবে জিএম কাদেরের নাম ঘোষণা করে গেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণার সাংগঠনিক আদেশে এরশাদ বলে গেছেন, আমার মৃত্যূর পর কাউন্সিলররা যেন জিএম কাদেরকেই পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেন। এখনও সেটাই হতে যাচ্ছে। তবে মাঝে রওশন এরশাদ বাগড়া দেওয়ায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক পদ তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রওশন এরশাদ আমৃত্যু পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক থাকবেন। তার অবর্তমানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই পদটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

দেবর-ভাবির মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই অনেক আগে থেকেই বিদ্যমান। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই দূরত্ব বেড়ে যায়। এরশাদের সঙ্গে একাট্টা হয়ে ওই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন জিএম কাদের। আর রওশন এরশাদ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থেকে যান। ভোটের পর পুরো মেয়াদে একইসঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থাকে জাপা। এই পন্থার সমালোচনায় মুখর ছিলেন জিএম কাদের। এতে রওশনের সঙ্গে তার দূরত্ব আরও বেড়ে যায়।

ওই সময়েই ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছিলেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। পরে রওশনপন্থীদের চাপের মুখে রওশন এরশাদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এরপর ২০১৮ সালে যখন জিএম কাদেরকে পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন তখন রওশনপন্থীদের চাপের মুখে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন এরশাদ। পরে রংপুরের নেতাদের আন্দোলনের মুখে ছোটো ভাই জিএম কাদেরকে দ্বিতীয় দফায় ভারপ্রাপ্ত ও ভবিষ্যত চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন তিনি।

এরশাদের মৃত্যুর পর সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার মনোনয়ন প্রশ্নে দ্বন্দ্ব প্রকাশিত হয়ে পড়ে। জিএম কাদের ও রওশন দুজনেই বিরোধীদলীয় নেতার চেয়ার নিয়ে টানাটানি শুরু করেন। অবশেষে জয়ী হন রওশন। প্রকাশ্য গ্রুপিং না থাকলেও ভেতরে ভেতরে একটি চাপা ক্ষোভ বিরাজমান।

কাউন্সিল নিয়ে নানা রকম রশি টানাটানি শুরু হয়ে যায়। অবশেষে সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি ঠাণ্ডা হয়েছে বলে পার্টি সূত্র জানিয়েছে। আগের দুই পদের সঙ্গে নতুন করে আরও ৫টিসহ মোট ৭ জন থাকছেন কো-চেয়ারম্যান। এসব পদে প্রেসিডয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যদিও অধিকাংশ নেতাকর্মী জিএম কাদেরের পক্ষে একাট্টা। তারা জিএম কাদেরকেই চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান। কৌশল হিসেবে কাউন্সিলের শো-ডাউন থেকে সরে এসেছে জাতীয় পার্টি। শুধু ৮ হাজার কাউন্সিলর-ডেলিগেটকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রয়োজন হলে ভোট করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন জিএম কাদের। পাশাপাশি মহাসচিব পদ নিয়ে জটিলতায় জড়াতে চায় না জাপা। কাউন্সিলে মহাসচিব পদে ঘোষণা না দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

 ১৯৮৫ সালের ১৬ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এরশাদের নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে জাতীয় ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। ওই জোটের শরিক ছিল— জনদল, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি, বিএনপি (শাহ) মুসলিম লীগ (সা)। জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের ৪ মাস ১৪ দিনের মাথায় (১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি) ফ্রন্ট বিলুপ্ত করে জাতীয় পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। শরিক দলের নেতারা তাদের নিজেদের দল বিলুপ্ত করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।

নবগঠিত পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং মহাসচিব নিযুক্ত হন অধ্যাপক এম এ মতিন। পার্টির কাউন্সিল না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আনোয়ার জাহিদ। ২১ প্রেসিডিয়ামসহ ৬০১ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ঘোষণা দেওয়া হয়।

জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই এরশাদকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়ে আসছে। দুই-একবার যারাই এরশাদের সিদ্ধান্তে দ্বিমত করতে গেছেন তাদের দল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক নেতা একাধিক দফায় শোকজ নোটিশ পেয়েছেন বা সাময়িক বহিষ্কারের শিকার হয়েছেন। শোকজের ক্ষেত্রে এরশাদ ছাড় দেননি আপন ভাই জিএম কাদের ও সহধর্মিনী বেগম রওশন এরশাদকেও।

নানা কারণে জাতীয় পার্টির মতো আর কোনো রাজনৈতিক দল সম্ভবত এতো বেশি দফায় ভাঙনের শিকার হয়নি। জাতীয় পার্টি থেকে বের হয়ে গিয়ে প্রথম পৃথক জাতীয় পার্টি (মিম) গঠন করেন মিজানুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। দ্বিতীয় দফায় ভাঙনের শিকার হয় নাজিউর রহমান মঞ্জু ও কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে। সর্বশেষ পৃথক জাতীয় পার্টি গঠন করেন প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ। জাতীয় পার্টিতে বর্তমানে জাপা, জেপি, বিজেপি ও জাপা (জাফর) নামে ৪টি ধারা বিদ্যমান।

চারটি খণ্ডিত অংশের মধ্যে জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি (জেপি) আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অপর দুই অংশ বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও জাতীয় পার্টি (জাফর) বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে যুক্ত।

বিগত নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়। জোট থেকে ২৬টি আসন দেওয়া হয়। আর ১৪৬টি আসন রাখা হয় উন্মুক্ত। জোটগত আসনে ২১টি, উন্মুক্ত ১টি নিয়ে মোট ২২টি আসনে বিজয়ী হন এরশাদের প্রার্থীরা। সংসদে দলটির সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা  ৪টি। মোট ২৬টি আসন নিয়ে বিরোধী দলের চেয়ার অলংকৃত করে আসছে জাতীয় পার্টি।

   

উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দেশনায় মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদক। এতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার কথা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া মন্ত্রী ও সাংসদদের স্বজনদের তালিকা করারও নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রভাব মুক্ত রাখার যে কঠোর নির্দেশনা তা সবাইকে তিনি অবগত করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বৈঠকে আমাদের সাধারণ সম্পাদক মন্ত্রী-সাংসদদের সন্তান, ভাই বা নিকটাত্বীয়রা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী যেনো না হয় তা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমাদের জানিয়েছেন।

;

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কার্যালয়ে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ অংশ নেন। ব্রিটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়, বিএনপির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন সারাহ কুক।

এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, দুপুরের দিকে বৈঠক হয়েছে বলে আমি জানি। তবে, বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু জানা নেই।

;

জামিন না দেওয়া প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিথ্যা মামলায় দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান ও জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে আওয়ামী সরকার তাদের প্রাত্যহিক কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাকসুদ হোসেন এবং সদস্য মোহাম্মদ আরিফ হাসানকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ কয়েকজন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের পর দখলদার আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক জোরালোভাবে শুরু হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপর অবর্ণনীয় জুলুম—নির্যাতন। ডামি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে দেশব্যাপী বিরোধী দল ও মতের মানুষদের ঘায়েল করতে লাগামহীন গতিতে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের মাধ্যমে আদালতকে দিয়ে ফরমায়েশি সাজা দিচ্ছে। জামিন নামঞ্জুর করে কারান্তরীণ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

;

গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নেই বিএনপির: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতবৃন্দ লাগাতারভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, একদিকে তারা অগুন-সন্ত্রাসীদের লালন-পালন করছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিরোধীদল দমনের মিথ্যা অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে বিএনপি লাগাতারভাবে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে গণতন্ত্র ও নির্বাচন বানচালের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল বিএনপি।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি-জামাত অপশক্তি সারাদেশে ভয়াবহ অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়ে শত শত নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছিল। তাদের এই ভয়াবহ সম্মিলিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের কথা বলে। সরকার বেপরোয়াভাবে কাউকে কারাগারে পাঠাচ্ছে না। বরং সন্ত্রাস ও সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা আইন ও আদালতের মুখোমুখি হচ্ছে এবং জামিনে মুক্তিও পাচ্ছে। তবে যারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে- জনগণের জানমালের ক্ষয়-ক্ষতি করেছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে সেসব সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা ও মহামান্য আদালত যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

বিএনপি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সে কারণে বিএনপি নেতারা বিরোধী দল দমনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বিরোধী দল দমনে বিশ্বাস করে না। তবে সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় নেই, সে যে দলেরই হোক না কেন সন্ত্রাসীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্হিভূত বক্তব্য প্রদান করছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে বদ্ধপরিকর। জনগণের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন গুরুত্ব অপরিসীম। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি বরাবরের ন্যায় নির্বাচন ও দেশের গণতন্ত্র বিরোধী অবস্থান নিয়েছে। সে কারণে জনগণও তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগকেও কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করতে হয়েছে। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিচ্ছে না। দল ও দলের বাইরে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচিত হয় সেটাই আওয়ামী লীগ প্রত্যাশা করে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সারাদেশে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। দেশের জনগণ যখন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে বিএনপি নেতারা তখন বরাবরের ন্যায় দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে চায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে নিরন্তন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

বিবৃতিতে তিনি বিএনপির গণতন্ত্রবিরোধী অপতৎপরতা সম্পর্কে সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

;