জাতীয় পার্টির লজ্জাজনক পরিণতি!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টি

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির পতন হয়েছে। গণফ্রন্টের চেয়েও কম ভোট পেয়েছেন জাপার মেয়র প্রার্থী। দলটির কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়েছেন মাত্র একজন।

এমন ফল লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছেন সিটি নির্বাচনে এমন ভরাডুবির কারণে জাতীয় পার্টির চরম ইমেজ সংকট দেখা দিতে পারে। চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এরপর নিজেদের তৃতীয় বৃহত্তম দল দাবি করাটা হাস্যকর দেখাবে।

জাতীয় পার্টি ঢাকার দুই সিটিতে শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ ভোটারের এই সিটিতে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের আসনে থাকা জাপার লাঙল প্রতীকে পড়েছে মাত্র ৫ হাজার ৫শ’ ৯৩ ভোট। অনেক সেন্টার রয়েছে যেখানে লাঙল প্রতীকে একটিও ভোট পড়েনি। পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ভোট দিলেও কয়েকগুণ বেশি ভোট পড়ার কথা লাঙল প্রতীকে।

একই সিটিতে জাতীয় পার্টির চেয়ে দ্বিগুণ ভোট পেয়েছে গণফ্রন্টের প্রার্থী আব্দুস সামাদ সুজন। গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭টি। আর চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী জাপার থেকে পাঁচগুণ বেশি ভোট পেয়েছেন। হাতপাখা মার্কায় তাদের ভোটের পরিমাণ ২৬ হাজার ৫২৫টি।

হাতপাখা ও মাছ মার্কার কাছে লাঙলের ধরাশায়ী হওয়ায় উদ্বিগ্ন জাতীয় পার্টির নেতারা। এমন সমীকরণে দাঁড়িয়ে জাপা যে সামনের দিনে সরকার গঠন করতে চায় সেই স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায়। অন্তত সাধারণ মানুষকে গেলানো কঠিন হতে পারে। আর নেতাকর্মীদের স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হলে জাপার ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দিবাস্বপ্নে পরিণত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

তৃণমূল কর্মীরা মন্তব্য করেছেন, জাতীয় পার্টি কখনও এমন শোচনীয় পরাজয় বরণ করেনি। পার্টির দায়িত্বশীল নেতাদের অযোগ্যতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। প্রার্থীদেরও কোনো দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ছিল না নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো সমন্বয়। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকায় স্থানীয় নেতারাও হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। আবার অনেকে গোপনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন।

অন্যদিকে দুই সিটির ১২৯ সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১৫ জনের মতো প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। তাদের ভোটের ফলও হতাশাজনক। পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয় অবস্থিত উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের প্রার্থীর প্রাপ্ত মোট ভোটের পরিমাণ মাত্র সাড়ে ৫শ’। ওয়ার্ডটিতে পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটিতে থাকা নেতার সংখ্যাও এক হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

সিটি নির্বাচনে লজ্জাজনক ফলের জন্য পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে দুষছেন অনেকে। তারা বলছেন, পার্টির কোনো ভূমিকা ছিল না এই ভোটে। এ কারণে চরম ভরাডুবি হয়েছে।

আর এই ভরাডুবির কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। তারা পার্টির ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের নেতারা দাবি করেছেন, রংপুর সিটি করপোরেশনে বিপুল ভোটে বিজয়ের পর সারাদেশে একটি চাঙ্গাভাব চলে এসেছিল। ঢাকার এই লজ্জাজনক ফল তাতে ভাটার সৃষ্টি করবে।

জাতীয় সংসদ ছাড়া আর কোথাও অবস্থান নেই জাতীয় পার্টির। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সারাদেশে মাত্র একজন জয়ী হয়েছেন। খোদ জাতীয় পার্টির দুর্গে একজন প্রার্থীও জয়ী হতে পারেননি। ইউনিয়ন পরিষদও হাতছাড়া। ভোটের পদ্ধতি নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ঢেঁকুর তুললেও প্রকৃত চিত্র ভিন্ন।

অনেকে ভেবেছিলেন জিএম কাদের পার্টির হাল ধরলে গুণগত পরিবর্তন আসবে। কিছুটা জোয়ারও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে আবার স্থবিরতা নেমে এসেছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে রাজশাহীতে গণপদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে। অনেক নেতা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সম্পর্কের পরিসমাপ্তির কথা জানান দিচ্ছেন। একজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী পার্টির কোনো সহায়তা না পেয়ে ভোটের পরে ফেসবুক লাইভে এসে জাপা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, আমার চেয়ারম্যান (এরশাদ) মারা গেছেন, এখন দেখার কেউ নেই। তার কবরে গিয়ে পদত্যাগপত্র রেখে আসবো।

জি এম কাদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এরশাদ পুত্র রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। রংপুরে অনেক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্য বিদ্রোহ করে পার্টির বিপক্ষে ভোট করেন। আবার কেউ কেউ হাত গুটিয়ে বসে থাকেন। সবকিছু দেখেও পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন নিরব দর্শকের ভূমিকায়। রংপুরের মতো ঢাকা সিটি নির্বাচনেও অনেক শীর্ষ নেতা হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। কেউ কেউ তাদের অনুসারিদের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। এমনকি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হলেও তাদেরও কোনো সহযোগিতা পাননি মেয়র প্রার্থী।

জাতীয় পার্টির একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হাজী মিলন নিজে প্রার্থী হতে চাননি, তাকে চেয়ারম্যান অনেকটা জোর করে মাঠে নামিয়েছে। কেন্দ্র থেকে একটি পয়সাও তাকে দেওয়া হয়নি। কর্মীদের পোস্টার লিফলেটও সরবরাহ করা হয়নি। এই এলাকায় দলের দুই জন এমপি রয়েছেন। তাদের মধ্যে কাজী ফিরোজ রশীদের এলাকায় কোনো কর্মী মাঠে নামেননি। এমপির ছেলে ও তার ঘনিষ্টরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। বিষয়টি পার্টির চেয়ারম্যানকে সময়ে সময়ে অবগত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি।

একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, জাপা এখন ইনডোর পার্টিতে পরিণত হচ্ছে। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো আর সেলফি তোলার মধ্যেই অনেক নেতার কার্যক্রম সীমাবদ্ধ। তারা জিএম কাদেরের সামনে এসে মহড়া দেন। পার্টির কোনো কাজে তাদের দেখা যায় না।

এসব ব্যাপারে জানতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ভোটের পরের দিন এক অনুষ্ঠানে জিএম কাদের বলেছেন, দেশের প্রধান তিনটি দলের মধ্যে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় জাতীয় পার্টি। মানুষ চায় আগামীতে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসুক। তবে ভোট নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

গণআন্দোলনের মুখে বিদায়ের পর প্রথম ১৯৯১ সালে নির্বাচনে কাস্টিং ভোটের ১১.৯২ শতাংশ পেয়েছিলো জাতীয় পার্টি। এরপর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ১০.৬৭ শতাংশ, আর ২০০১ সালে ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রণ্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোট পায় ৭.২৫ শতাংশ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পেয়েছে মাত্র ৭.০৪ শতাংশ। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নেয় দলটি। কিন্তু যে আসনেই জোট ছাড়া নির্বাচন করেছে সেখানেই ধরাশায়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। আর এবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দলটি ভোট পেয়েছে দশমিক ২৩ শতাংশ।

   

আমার স্ত্রী ভারতীয় শাড়ি দিয়ে কাঁথা সেলাই করেছে: রিজভী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি নেতারা শাল পোড়ান, কিন্তু বউদের শাড়ি পোড়ান না কেন?- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, আমার নানার বাড়ি ভারতে। বিয়ের পর ভারতে একবার গিয়েছিলাম, আমার ছোট মামা সেখানে থাকেন। আসার সময় আমার স্ত্রীকে একটি শাড়ি দিয়েছিল তারা। আমি কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম ওই শাড়িটা কই? আমার স্ত্রী বললেন ওটা দিয়ে তো অনেক আগেই কাঁথা সেলাই করা হয়েছে। আমাদের দেশে একটা রেওয়াজ আছে পুরাতন শাড়ি দিয়ে কাঁথা সেলাই করা। আমি মনে করি ডামি সরকারকে যে দেশ প্রকাশ্যে সমর্থন করে সেদেশের পণ্য বর্জন করা ন্যায়সঙ্গত।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে 'আমরা বিএনপি পরিবার' আয়োজিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে গুম, খুন ও পঙ্গুত্বের শিকার পরিবারের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা, আপনি দেশের স্বার্থ নিয়ে তামাশা করেন? আপনি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা পালিয়ে গেলে যুদ্ধটা করলো কে? যুদ্ধ করেছে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবকেরা।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে পার্শ্ববর্তী দেশের কূটনীতিক এসে ভোটারবিহীন সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে গেলেন। ২০১৮ সালে রাতে ভোট হলো, সে নির্বাচনও তারা স্বীকৃতি দিলেন। এবার ২০২৪ সালে এত বড় একটা ডামি নির্বাচন হয়ে গেলো, তারপরও প্রকাশ্যে তারা বলছেন আমরা এই সরকারের পাশে আছি। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বলছে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে, আমরা কোনো দলের পক্ষে নই। যারা একটি ভোট ডাকাত সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন করে সে দেশের পণ্য বর্জন করা ন্যায়সঙ্গত। তাদের বিরুদ্ধে যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠেছে আমরা সেই আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করি।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, কেউ মারা গেলে তার আত্মার মাগফেরাত করার মধ্যেও একটা শান্তি আছে। গুম হওয়া একটি পরিবার তার আত্মার মাগফেরাতও কামনা করতে পারে না, তার কবরে গিয়ে মোনাজাতও করতে পারে না। সরকার এমন ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সেলের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মন। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

;

দেশের প্রত্যেক মানুষ স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের প্রত্যেক মানুষ এখন স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছেন। অগণতান্ত্রিক ও উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপির ফ্যাসিবাদী দর্শনে জনগণ কখনো সাড়া দেয়নি, দেবেও না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্যকে নেতাদের মিথ্যা, বানোয়াট ও দুরভিসন্ধিমূলক আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়ি ও ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেওয়া হচ্ছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করেছেন। তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ না দিয়ে ঢালাওভাবে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিএনপির নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। কোথাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন না।

তিনি বলেন, অথচ ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ঘর-বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডারবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছিল। সারাদেশে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধূলিসাৎ করে। সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজের অবৈধ ও অসাংবিধানিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করেন। তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রচলন করেন। তিনিই রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের বীজ বপন এবং উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। তখন থেকে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়। বিরোধীদল বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়।

তিনি বলেন, বিএনপি সর্বদা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পাকিস্তানি ভাবাদর্শকে পুঁজি করে রাজনীতি করা বিএনপির একান্ত কাম্যই হলো যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল, জনকল্যাণ নয়। তারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেরে আখের গুছিয়ে নিয়েছিল। বাংলার জনগণ তাদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছিল। সুতরাং জনগণ এই প্রতারক গোষ্ঠীকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

;

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে

চুয়াডাঙ্গায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মী কারাগারে

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

হাইকোর্ট থেকে নেয়া আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার তা নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় ৩ নেতা-কর্মীর জামিন দেন তিনি।

এদিকে, একে একে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে হাজিরা দিতে আসা প্রায় ৫৩ জন নেতা-কর্মী আদালত থেকে পালিয়ে যান।

বিএনপি দলীয় আইনজীবী অ্যাড. শাহাজাহান মুকুল জানান, নাশকতা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আগামী রোববার (৩১ মার্চ) আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ১০৭ জন নেতা-কর্মী চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। এদের মধ্যে ৭ জনকে জামিন ও ৪৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার। এসময় আদালত থেকে ৫৩ জন নেতা-কর্মী হাজিরা না দিয়ে চলে যান। তিনি আরও জানান, তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার বিচার বিভাগ, পুলিশ-প্রশাসনসহ সবকিছু হাতের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে। মানুষের বিচার বিভাগের প্রতি যে আস্থা ছিল, সেটিও হারিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তারা প্রকৃত ন্যায়বিচার পাননি। আদালত ফরমায়েশিভাবে নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠিয়েছে।

;

মানুষকে দুঃখে-কষ্টে ফেলে ফায়দা লুটাই বিএনপির রাজনীতি: নাছিম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি-রফতানি একটি স্বাভাবিক কার্যক্রম। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ থেকে যেটা আমদানি করলে খরচ কম হবে সেটা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ঠগবাজি, স্ট্যান্ডবাজির রাজনীতির নামে বাংলাদেশের মানুষকে আরও দুঃখ, কষ্টের মাঝে নিমজ্জিত করে যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটা যায় সেটাই হলো বিএনপি-জামায়াতের নষ্ট রাজনীতির ভ্রষ্ট নীতি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আইডিইবি ভবনে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এগিয়ে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার আসনে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিরোধীতার নামে, সরকারের বিরোধীতার নামে বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষের কষ্ট, বেদনাকে বাড়াবার জন্য বিএনপি-জামায়াতিরা যে অপরাজনীতি করছে, তার নতুন সংস্করণ হলো ভারত বিরোধীতার নামে ভারতী পণ্য বর্জন করে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিরোধিতা করা।

নাছিম বলেন, ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। যতদিন বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে, এ দিবসটি নতুন করে বঙ্গবন্ধু আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনুপ্রাণিত করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দু’লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা করার জন্য এখনো যুদ্ধ করে যেতে হচ্ছে। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে পাকিস্তানের দালাল হিসেবে আমাদের দেশের মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের উত্তরসূরিরা এখন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য তারা অপকর্ম দুষ্কর্মের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের সতেরো কোটি মানুষকে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুর নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু যারা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, মুনাফালোভী, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তাদের দমন করার জন্য অনেক ভাষণ দিয়েছেন। ৫৩ বছর পরও কতিপয় কালোবাজারি ব্যবসায়ী শুধু মানুষকে কষ্ট দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর রাজনীতি কেও পৃষ্টপোষকতা করছে। জাতির পিতার রাজনীতিতে মানুষকে আকৃষ্ট করতে হবে। তাই সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের জায়গা গড়ে তুলতে হবে। দেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা দেখি মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা যদি মানুষের ভালবাসা অর্জন করতে পারি, তাহলেই শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে। তাহলেই আমরা বাংলাদেশ বিরোধী নির্মূল করতে পারব।

আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ৭৫ -এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন, ইতিবাচক রাজনীতির কথা বলেছেন, তারা কেউ জেলখানার বাইরে ছিল না। যারা বাংলাদেশকে রক্তাক্ত কসাইখানা বানাতে চায়, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা আর রাজনৈতিক নির্যাতন এক হতে পারে না।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য নির্মল চ্যাটার্জীসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ম. আব্দুর রাজ্জাক। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু।

;