ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল থাকাটা সংবিধান পরিপন্থী: রিজভী
ত্রাণ বিতরণ করছেন রুহুল কবির রিজভী ও অন্যান্য নেতাকর্মীরা, ছবি: বার্তা২৪.কম
ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল থাকাটা সংবিধান পরিপন্থী কাজ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি, টাকাওয়ালা বড়লোকদের জন্য স্পেশাল হাসপাতাল বানানো হচ্ছে। করোনা হলে তাদের সেখানে চিকিৎসা দেয়া হবে। কিন্তু গরিব মানুষদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করেনি সরকার। ভিআইপিদের জন্য করোনা চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল সংবিধান পরিপন্থী কাজ।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর সিরাজদিখানে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, যাদের টাকা আছে, তাদের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। সেটা পাবে যারা ব্যবসায়ী, ব্যাংকের মালিক, গার্মেন্টসের মালিক। তার মানে হচ্ছে, বড়লোকেরা সব পাবে, আর গরিব মানুষ ওরা মরে যাক, ওদের লাশ রাস্তার পড়ে থাক, এটাই সরকারের নীতি। এভাবে চলতে পারে না।
আমরা বারবার বলেছি, বিএনপি-আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল মিলে মহামারি মোকাবিলা করি। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকার তা শুনছে না। লুটপাট আর চুরির জন্যই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চায় না। সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ জনগণের টাকায় কেনা। সেই ত্রাণ আওয়ামী লীগ নেতাদের ঘরের ভেতর থেকে হাজার হাজার বস্তা চাল বের হচ্ছে, যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা মানুষের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কোনো সরকারি ত্রাণ পাইনি। বিএনপির নেতাকর্মীরা পকেটের টাকায় গরিব ও দুস্থ মানুষদের সারাদেশে ত্রাণ বিতরণ করছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এতে সারাবিশ্বব্যাপী ভীষণ আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুধু রোগাক্রান্ত হচ্ছে না, মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে। ভয়াবহ শঙ্কার মধ্যে প্রতিটি মানুষ জীবনযাপন করছে। সারাদেশ লকডাউনের মধ্যে পড়েছে। অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে গেছে। কল কারখানা স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষ প্রচণ্ড ক্ষুধা-দারিদ্র্যের মধ্যে দিনযাপন করছে। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতির জন্য যেমন পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন ছিল, তা সরকার নেয়নি। যখন করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল, তখন সরকার পদক্ষেপ নেয়নি। দেশে হাহাকার চলছে। একজন লোক আক্রান্ত হলে কি ধরনের প্রস্তুতি নেয়া দরকার, তা না থাকায় ঘরের মধ্যে লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপির স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুর উদ্যোগে সিরাজদিখানে দুস্থ মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
