ট্রফি জিততে বাংলাদেশের চাই ১৭৫
রোহিত শর্মা- বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় আতঙ্কের এক নাম! আগের ম্যাচেই রাজকোটে তার ব্যাটিং দাপটে উড়ে যায় বাংলাদেশ। নাগপুরে তাকে টার্গেট করেই নেমেছিল টাইগার বোলাররা। আর সেই টার্গেটে সফলতাও মিলেছে শুরুতেই! তাকে ফিরিয়ে বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের দর্শকদের হৃদয় ভেঙে দেন শফিউল। তারপরও ভারতকে আটকানো গেল কোথায়?
সেরা তারকাটিকে হারিয়েও হতোদ্যম হয়নি স্বাগতিকরা। স্লো উইকেটে বড় সংগ্রহই গড়েছে রোহিতের দল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারত সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে তুলেছে ১৭৪ রান। ট্রফি জিততে ১৭৫ রান চাই টাইগারদের। লক্ষ্যটা যে চ্যালেঞ্জিং সন্দেহ নেই!
নাগপুরে রোববার ছুটির দিনে উপচে উঠা গ্যালারিতে বেশির ভাগ দর্শকেরই গায়ে ছিল রোহিতের নাম লেখা জার্সি! টস হেরে তিনি নামতেই শুরু হয় গগনবিদারী চিৎকার। কিন্তু দিল্লির মতো নাগপুরেও রোহিত শর্মা ভয়ঙ্কর হতে পারলেন না। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শফিউল ইসলামের শিকার ভারত অধিনায়ক। তার ডেলিভারি রোহিতের ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে।
আগের ম্যাচে ৪৩ বলে ৮৫ রান করা রোহিত এবার ৬ বলে করলেন মাত্র ২!
দলের হয়ে দ্বিতীয় আঘাতটিও করেন শফিউল। এবার ফেরান শিখর ধাওয়ানকে। শেষ ওভারে আক্রমণাত্মক ভারতীয় ব্যাটসম্যানকে শিকার করতে শফিউল দিয়েছিলেন স্লোয়ার। আর সেটা বুঝতেই পারলেন না ধাওয়ান। বল তুলে দিলেন আকাশে। মিড উইকেটে সেই ক্যাচ তালুবন্দী করতে সময় নেননি ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহ। ১৬ বলে ১৯ রান তুলে ফেরেন ধাওয়ান।
তারপরই বিদায় নিতে পারতেন শ্রেয়াস আইয়ার। হতে পারতেন শফিউলের তৃতীয় শিকার। কিন্তু শূন্য রানে সহজ ক্যাচ দিয়েও টিকে যান ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান।
শফিউলের লেংথ বলটি চলে যাচ্ছিল অফস্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে। তখনই শ্রেয়াস দাঁড়িয়ে শট নেন। বল চলে যায় পয়েন্টে। কিন্তু সহজতম ক্যাচটাও হাতে জমাতে পারেননি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। এরপর লোকেশ রাহুল ও শ্রেয়াস দলকে দেখালেন পথ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা ফিফটি করেন ৩৩ বলে।
এরমধ্যে লোকেশ রাহুল দ্রুত গতিতে তুলে নেন ফিফটি। স্লো উইকেটে দুর্দান্ত খেললেন তিনি। ফিফটি করেন ৩৩ বলে। যা কীনা টি-টোয়েন্টিতে তার ষষ্ঠ ফিফটি। অবশ্য এরপরই আল আমিনের লেগ কাটারে আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে। তার আগে করেন ৩৫ বলে ৫২। ভাঙে ৫৯ রানের জুটি।
তারপর সুযোগটা কাজে লাগালেন আইয়ার। প্রাণ পেয়ে ২৭ বলে করেন ফিফটি। অন্য প্রান্তে রিশব পান্ত (৬) ফের ব্যর্থ। তাকে সাজঘরের রাস্তা দেখিয়ে দিলেন সৌম্য সরকার। একইভাবে আইয়ারও অনিয়মিত এই বোলারের শিকার। যে ব্যাটসম্যান ফিরতে পারতেন শূন্য রানে তিনিই তুলে নিলেন ৩৩ বলে ৬২ রান।
এরপর শেষটাতে এসে মনিশ পান্ডে দ্রুত ১৩ বলে ২২ রান তুলে দলকে এনে দেন বড় সংগ্রহ। ম্যাচে দৃষ্টিকটু ফিল্ডিংয়ে হতাশ করেছেন আমিনুল ইসলাম। শ্রেয়াসের পর তার হাত ফস্কে যায় শিবম দুবের তুলে দেওয়া ক্যাচও।
নাগপুরের মন্থর উইকেটে সন্দেহ নেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে দিল্লিতে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ম্যাচে রাজকোটে ৮ উইকেটের জয় দিয়ে সিরিজে ফেরে রোহিত শর্মার দল। এ কারণেই রোববার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি সফরকারীদের জন্য হয়ে গেছে অলিখিত ফাইনাল।
যারা জিতবে সিরিজ তাদেরই। এমন দৃশ্যপটে আগের দুই টি-টোয়েন্টির দলে একটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। মোসাদ্দেক হোসেনের বদলে একাদশে ফিরেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। বাংলাদেশের মতো ভারতীয় একাদশেও একটি পরিবর্তন। অলরাউন্ডার ক্রুনাল পান্ডিয়ার জায়গায় দলে ব্যাটসম্যান মনিশ পান্ডেকে। খলিল আহমেদ টিকে গেলেন একাদশে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ ( রোহিত ২, ধাওয়ান ১৯, রাহুল ৫২, শ্রেয়াস ৬২, পান্ত ৬, মনিশ ২২*, দুবে ৯*; আল আমিন ১/২২, শফিউল ২/৩২, মুস্তাফিজ ০/৪২, আমিনুল ০/২৯, সৌম্য ২/২৯)।