মালদ্বীপের কাছেও পয়েন্ট খোয়ালো ফুটবল দল
দুরাবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতেই পারছে না বাংলাদেশ। ভুটানের কাছে হারের পর মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ ড্র করল ১-১ গোলে। দুই ম্যাচে মাত্র ১ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল দলের এস এ গেমসের স্বর্ণজয়ের স্বপ্ন প্রায় নিভু নিভু!
কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩০ মিনিটের সময় বাংলাদেশ এগিয়ে যায় আত্মঘাতী গোলে। সেই গোল শোধ করে মালদ্বীপ ম্যাচের ৭০ মিনিটের সময়। গোলশোধ করেন ইব্রাহিম হুসেন। ম্যাচ ড্র হয়েছে। কিন্তু দুটোই গোলই করেছে মালদ্বীপ!
ম্যাচের প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে থাকার সঙ্গে বাংলাদেশ আরেকটি সঙ্গে যা পেল তার নাম-ভাগ্য! আর ভাগ্য মালদ্বীপের সঙ্গে ছিল না বলেই প্রথমার্ধে তারা ২-১ গোলে এগিয়ে যেতে পারল না!
শুধু গোল করতেই নয়, গোল ঠেকিয়ে দিতেই শুরুর অর্ধে ভাগ্য যেন দ্বাদশ খেলোয়াড় হয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেললো।
৩০ মিনিটের সময়ে লম্বা যে থ্রো থেকে বাংলাদেশ গোলটা পেল সেটা আত্মঘাতী। কর্নার ফ্ল্যাগের আরেকটু দুর থেকে থ্রো পায় বাংলাদেশ। যথারীতি দুরপাল্লার সেই থ্রো করতে এগিয়ে আসেন ১০ নম্বর জার্সি ধারী রবিউল হাসান। প্রচন্ড জোরে তার সেই থ্রো গিয়ে পড়ে মালদ্বীপে ডি বক্সে। যেখানে দাড়িয়ে হেডের জন্য বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড়। কিন্তু বল তার মাথায় না লেগে ঠিক তার পিঠের পেছনে দাড়ানো মালদ্বীপের অধিনায়ক আকরাম আব্দুল ঘানির মাথার পেছনের অংশে লাগে হালকাভাবে। সেই স্পর্শ পাওয়া বল সামনে না এসে পেছনের দিকে যায়। তাকিয়ে তাকিয়ে মালদ্বীপের গোলকিপার হুসেইন শরীফ দেখলেন বল জালে, গো..ও..ল!
আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর মালদ্বীপ গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। মাঝমাঠ থেকে বেশ কয়েকটি পরিকল্পিত আক্রমণে বাংলাদেশের রক্ষণভাগে কাঁপিয়ে দেয়া তারা।
৩৩ মিনিটের সময় নিয়াজ হাসান একক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের ডিবক্সে ঢুঁকে পড়েন। সঙ্গে থাকা বাংলাদেশি মার্কার ফাইনাল চার্জ করে মাটিতে পড়ে যান। লাইনের ওপর থেকে বল নিয়ে গোলপোস্টের দিকে ঘুরেন নিয়াজ। কিন্তু দারুণ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে গোলকিপার আনিসুর মাটিতে পড়ে হাতটা বাড়িয়ে দেন। ফলে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়াজকে একটু বেশি জায়গা খুঁজতে হয়। সামান্য সেই বাড়তি সময়টুকুই বাংলাদেশের জন্য রক্ষাকবচ হয়ে দাড়ায়। পেছন থেকে ডিফেন্ডাররা এসে পড়ায় পোস্টে আর শট নিতে পারেননি নিয়াজ।
মিনিট সাতেক পরে ইব্রাহিম মাহুদি হুসেন বাংলাদেশের জালে গোল করলেও রেফারি তার আগেই অফসাইটের বাঁশি বাঁজান। প্রথমার্ধের বাঁশি বাজার খানিক আগে আরেকবার ভাগ্য মালদ্বীপের বিপক্ষে গেল। দুর থেকে পোস্টে উড়ে আসা বলে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলেন স্ট্রাইকার নিয়াজ হাসান। তার সামনে তখন শুধু গোলকিপার আনিসুর!
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণের তেজ আরো বাড়িয়ে দেয় মালদ্বীপ। ছোট ডি বক্সের কোনা থেকে যে শট নিলেন ইব্রাহিম মাহুদি হুসেন সেটা পোস্টে থাকলে নিশ্চিত গোল। কিন্তু ইব্রাহিম যে শট পোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারলেন। গোলমিসের এই দুঃখ খানিকবাদে অবশ্য ঠিকই ঘুচিয়ে দিলেন ইব্রাহিম। ম্যাচের ৭০ মিনিটের সময় দুর্দান্ত কায়দায় যে গোলশোধ করে ম্যাচে হার বাঁচিয়ে দলকে এক পয়েন্ট এনে দিলেন।
বলা যায়, মালদ্বীপের গোল মিসের ব্যর্থতায় বাংলাদেশ ম্যাচে হার এড়াতে পারলে কোনমতে। প্রথমার্ধে যে গোলে এগিয়ে থাকার সুখ পেয়েছিল সেটা কিন্তু আত্মঘাতী গোল!
পরের ম্যাচে ৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচের আগে গোল করার জন্য স্কোরার খুঁজতে হবে বাংলাদেশকে!