১৭ বছর পর গোলশূন্য এল-ক্লাসিকো
দীর্ঘ ১৭ বছর পর গোলশূন্য ড্র হলো এল-ক্লাসিকো। ২০০২ সালের ২৩ নভেম্বরের পর আবারও ড্র'য়ের স্বাদ পেল এল-ক্লাসিকো। ১৭ ম্যাচ শেষে দুইদলের পয়েন্ট ৩৬ হলেও গোল ব্যবধানের কারণে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বার্সেলোনা।
নিয়মিত ফরমেশন ৪-৩-৩ ছেড়ে ফেঞ্চ ম্যানেজার জিনেদিন জিদান দলকে ৪-৪-২ এ খেলিয়েছেন। ম্যাচ শুরুর আগে ভালো করে জানতেন গত ৭ বারের দেখায় বার্সেলোনাকে হারাতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। সেই কারণেই হয়তো ফরমেশন পরিবর্তন করে বার্সেলোনার মাঠে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
ফরমেশন পরিবর্তন কাজে লেগেছে অবশ্য। শুরু থেকেই বার্সেলোনাকে চাপের মধ্যে রাখে ফ্রেঞ্চ ম্যানেজারের শিষ্যরা। সে কারণেই প্রথমার্ধে তেমন ভালো কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মেসির দল। ইনজুরির কারণে এডেন হ্যাজার্ড, মার্সেলোকে না পেলেও জিদানের আস্থার প্রতিদান দেন ইস্কো ও ফার্লান্ড মেন্ডি।
ম্যাচের ১৭ মিনিটেই দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করে রিয়াল মাদ্রিদ। অবশ্য এর পুরো কৃতিত্ব পিকেকে দিতেই হবে। ক্যাসিমেরোর একটি হেড বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগেনকে পরাস্ত করলেও একটু ডান দিকে চেপে থাকা গোললাইনে দাঁড়ানো পিকে দুর্দান্তভাবে বলটি প্রতিহত করেন।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে জর্দি আলবার একটি ক্রস থেকে দারুণ সুযোগ তৈরি হলেও গোল দিতে ব্যর্থ হয় মেসি। পিকের মতো প্রায় একইভাবে বলটি ক্লিয়ার করেন রিয়াল অধিনায়ক রামোস। আলবার ক্রস রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তয়া ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বল আসে মেসির পায়ে। সজোরে মেসির নেওয়া কিকটি রুখে দেখেন রিয়াল অধিনায়ক।
তবে ৪১ মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করে বার্সা। রিয়াল গোলরক্ষককে একা পেয়েও জাল খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন আলবা।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলবিহীন। তবে প্রথমার্ধে বেশ চাপে ছিল বার্সেলোনা। রিয়াল ৪টি অন টার্গেট শট নিয়েছিল। সব মিলিয়ে ১২ বার চেষ্টায় ব্যর্থ হয় রিয়াল।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও মাঝমাঠে ক্যাসিমেরো-ক্রুস-ভালভার্দেদের সামনে পাত্তাই পাচ্ছিলেন না মেসিরা। ৫৫ মিনিটে একাদশ পরিবর্তনে নেলসন সামেদোর বদলি আর্তুরো ভিদাল নামলেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ একটি সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। গ্রিজম্যানের দুর্দান্ত একটি পাশ ঠিকভাবে রিড করতে না পারার কারণে গোলবারের একদম সামনে কিক নিতে ব্যর্থ হন মেসি। পুরো ম্যাচেই ছন্দে ছিলেন না বার্সা অধিনায়ক।
তবে ৭২ মিনিটে রিয়াল জাল খুঁজে পেলেও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। মেন্ডির দেওয়া এক ক্রস থেকে গোল করেন বেল। তবে মেন্ডি আগে থেকেই অফসাইডে থাকায় গোলটি বাতিল ঘোষণা করেন রেফারি। এতে নিঃশ্বাস ফিরে পায় বার্সেলোনা।
দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগো, মদ্রিচকে গোল আদায় করে নিতে বদলি হিসেবে নামান জিদান। কিন্তু কাজ হয়নি। গ্রিজম্যানকে নামিয়ে বিস্ময় বালক আনসু ফাতিকে নামানো হলেও কোনো চমক দেখাতে পারেননি। অবশ্য এর মধ্যে একটি রেকর্ডও করে ফেলেন ফাতি। মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্লাসিকোর এই শতাব্দীর ইতিহাসে কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে নাম লেখান।