তাসকিনের বোলিংয়ে রঙিন রংপুর
বাঁচা-মরার লড়াই! জিতলে দল টিকে থাকবে লড়াইয়ে। হারলে পরের পর্বে খেলার স্বপ্ন ধুসর। ঠিক এমনই দৃশ্যপটে ব্যাটে-বলে দাপট রংপুর রেঞ্জার্সের। মোহাম্মদ নাঈমের হাফসেঞ্চুরির পর বল হাতে তাসকিন আহমেদের ম্যাজিক। দুইয়ে মিলে রাজশাহী রয়্যালসকে অনায়াসেই হারল শেন ওয়াটসনের দল।
মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে রাতের আলোয় ৪৭ রানের বড় জয় তুলে নেয় রংপুর। টানা দুই জয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে লড়াইয়ে ফিরল উত্তরবঙ্গের দলটি।
মঙ্গলবার টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে রংপুর করে ১৮২ রান। জবাব দিতে নেমে রাজশাহী ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলে ১৩৫ রান। তাসকিনের বোলিং তোপেই উড়ে যায় তারা। তারকা এই পেসারের বোলিংয়ের রাতে রঙিন রংপুর।
৮ ম্যাচ খেলে তৃতীয় জয়ের দেখা পেল রংপুর। ৬ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চমস্থানে ওঠে এসেছে তারা। সমান ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট রাজশাহীর।
চ্যালেঞ্জিং স্কোরের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পথ হারায় আন্দ্রে রাসেলের দল। দলীয় ১২ রানে সাজঘরের পথ ধরেন আফিফ হোসেন (৭)। তাকে ফেরান পেসার তাসকিন আহমেদ। আরেক ওপেনার লিটন দাসের (১৫) উইকেটও তুলে নেন তিনি। কোন রান না তুলেই শোয়েব মালিক ফিরলে ভয়াবহ চাপে পড়ে রাজশাহী। যে চাপ সামাল নিয়ে উঠা হয়নি। এই পাকিস্তানিও তাসকিনের শিকার।
এরমধ্যে অলক কাপালি কিছুটা সময় লড়লেও সেটা ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। তার ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩১। অভিজ্ঞ রবি বোপারা সম্ভাবনা জাগিয়েও টিকতে পারলেন না। তার ব্যাটে ১৮ বলে ২৮। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে রান আউটের ফাঁদে পড়েন অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। বিদায়ের আগে করেন ৭ বলে ১৭ রান।
এরপরই ফরহাদ রেজাকে (০) ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন তাসকিন। জাতীয় দলে ফেরার লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেন এই পেসার। তার বোলিং ফিগারটা এমন ৪-০-২৯-৪! এবারের আসরে নিজের সেরা। উইকেট না পেলেও মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিং ফিগারটাও দেখার মতো ৪-১-১৬-০।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে হতাশাই উপহার দেন শেন ওয়াটসন। অস্ট্রেলিয়ান এই তারকা ক্রিকেটার বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজের আগের দুই ম্যাচে করেন ১ ও ৫! এবার তার ব্যাটে মাত্র ৭! তবে মোহাম্মদ নাঈম ধরে রেখেছেন তার ফর্ম। ৪০ বলে করেন হাফসেঞ্চুরি। ৪৭ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান। ক্যামরুন ডেলপোর্ট ১৭ বলে ৩১ রান করে তিনি আফিফ হোসেনের শিকার।
মোহাম্মদ নবি ১২ বলে ১৬। কোন রান না করেই মোহাম্মদ ইফরানের শিকার ফজলে মাহমুদ। তবে কিছুটা লড়েছেন লুইস গ্রেগর। তার ব্যাটে ১৭ বলে ২৮ রান। শেষদিকে আল আমিন ( ১০ বলে ১৫) ও জহিরুল ইসলামের (৮ বলে ১৯) ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় রংপুর।
ব্যাটসম্যানদের পর বোলারদের দাপট, তার পথ ধরেই রংপুর পেয়ে গেল মহামূল্যবান এক জয়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৮২/৬ (নাঈম ৫৫, ওয়াটসন ৭, গ্রেগোরি ২৮, নবি ১৬, মাহমুদ ০, আল আমিন ১৫, জহুরুল ১৯*; ইরফান ২/৩৫, আফিফ ২/৪০, রাব্বি ১/১৫, ফরহাদ ১/২৪)
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভার ১৩৫/৮ (লিটন ১৫, আফিফ ৭, কাপালী ৩১, মালিক ০, বোপারা ২৮, নাহিদুল ১৯, রাসেল ১৭, ফরহাদ ০, তাইজুল ৪*, রাব্বি ৫*; তাসকিন ৪/২৯, গ্রেগরি ২/২৭, নবি ১/২৯)
ফল: রংপুর রেঞ্জার্স ৪৭ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: লুইস গ্রেগরি