জিম্বাবুয়েকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় বাংলাদেশ
ঢাকা টেস্টে অনেক দূরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ। হাতে সময়ও আছে বেশ। জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের রানও হাতের নাগালে প্রায়। আর তাই নিজেদের পরিকল্পনা সফলের জন্য খুব বেশি তাড়াহুড়ো দেখাচ্ছে না দল। ব্যাটিংয়ে বেশ একটা স্বস্তির ভাব। দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২৪০ রান। এখনো জিম্বাবুয়ে থেকে ২৫ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। কিন্তু হাতে জমে থাকা উইকেট ও ব্যাটিংয়ে ফর্ম ফিরে পাওয়া মুমিনুল হক এবং মিরপুরের উইকেট-এসব কিছুর যোগফল ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের স্বপ্নকে ক্রমশ আরও রঙিন করছে।
দলের ২৪০ রানের সঞ্চয়ে মুমিনুল খেলছিলেন ৭৯ রান নিয়ে। সঙ্গী মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ছিলেন ৩২ রানে।
এখনো জিম্বাবুয়ের ইনিংস ছাপিয়ে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন তা ছাড়িয়ে যাওয়ার এবং অনেক বড় ইনিংস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে নামবে দল। সেই ইনিংসটা এতই বড় করতে চায় বাংলাদেশ যাতে ম্যাচ জেতার জন্য তাদের চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে আর যেন নামতেই না হয়!
দ্বিতীয় দিনের সকালের শুরু এবং দিনের শেষ সেশন-এই দুটোই হলো বাংলাদেশের মনমতো। সকালে ১৬.৩ ওভারে মাত্র ৩৭ রানে জিম্বাবুয়ের বাকি ৪ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। আর শেষ সেশনে মুমিনুল-মুশফিকের হার না মানা ৬৮ রানের জুটি জানিয়ে দিল এই টেস্টে এখনো সঠিক পথেই আছে বাংলাদেশ।
ব্যাটিংয়ের শুরুতে ওপেনার সাইফ হাসানকে হারালেও তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুর সেই সঙ্কট কাটিয়ে দলকে সামনে বাড়ান। এই দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে যোগ হয় ৭৬ রান। তামিম ইকবাল উইকেটে সেট হয়ে আউট হলেন। ৪১ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তামিম।
নাজমুল হোসেন শান্ত তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি পেলেন চা বিরতির খানিক আগে। যেভাবে খেলছিলেন তাতে তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির স্বপ্নও ডানা মেলছিল বেশ। কিন্তু অতদূর যেতে পারলেন না শান্ত। ৭১ রানে ফিরলেন জায়গায় দাঁড়িয়ে শরীর থেকে অনেক দূরের বল খেলতে গিয়ে। শান্ত ও মুমিনুলের ১৯.৪ ওভারের জুটিতে বাংলাদেশ যোগ করে ৭৮ রান।
দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে মুশফিক শুরুটা করলেন দুর্দান্ত কাভার ড্রাইভ দিয়ে। ৬৮ বলের ইনিংসে যেভাবে জিম্বাবুয়ের বোলারদের সামাল দিচ্ছিলেন মুশফিক তাতেই স্পষ্ট-এই টেস্টে ‘বড়কিছু’ করতেই নেমেছেন তিনিও। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২১৯ রানের বাংলাদেশের সেরা ইনিংসটা তো মুশফিক এই মাঠেই খেলেছিলেন মাত্র ১৭ মাস আগে। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন সেই ম্যাচও প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে! ২০১৮ সালের নভেম্বরে জেতা সেই টেস্টে মুশফিক ও মুমিনুলের জুটিতে বাংলাদেশ পেয়েছিল ২৬৬ রান। যেখানে মুমিনুলের সংগ্রহ ছিল ১৬১ রান।
বিকেএসপির দুই পুরনো ছাত্র একই মাঠে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আবার জুটি বেঁধেছেন।
এবার কোথায় গিয়ে থামবেন তারা?
সংক্ষিপ্ত স্কোর:(তৃতীয় দিন শেষে)
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৬৫/১০ (১০৬.৩ ওভারে, মাসভাউরে ৬৪, কাসুজা ২, আরভিন ১০৭, টেলর ১০, সিকান্দার রাজা ১৮, মারুমা ৭, চাকাভা ৩০, তিরিপানো ৮; নাঈম ৪/৭০, রাহী ৪/৭১ ও তাইজুল ২/৯০)।
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৪০/৩ (৭১ ওভারে, সাঈফ ৮, তামিম ইকবাল ৪১, নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১, মুমিনুল হক ৭৯*, মুশফিক ৩২*; তিরিপানো ১/৪০ ও নুয়ানচি ১/৪১)।