টিকটক কী বন্ধই হচ্ছে!
টিকটক বন্ধ হচ্ছে! খবরটি নিয়ে সারা বিশ্বেই হইচই আর উৎকণ্ঠা। বিশ্বের নামীদামি তারকাকে তুমুল জনপ্রিয় বা একেবারে অচেনা কাউকে রাতারাতি তারকা বানিয়ে দেয় টিকটক। বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে দারুণ জনপ্রিয় অ্যাপটির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন লাখো ভক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টিকটক বন্ধে রীতিমতো সরব। সবশেষ আগস্টে ট্রাম্প টিকটক কর্তৃপক্ষকে শর্তসাপেক্ষে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। সেজন্য তিনি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টিকটককে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির কাছে বিক্রি করতে হবে। তা না করলে অ্যাপটি একেবারে নিষিদ্ধ করা হবে। যা কার্যকর করবে দেশটির বাণিজ্য দপ্তর।
অবশেষে টিকটকের মালিক-প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সঙ্গে যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালাতে সম্মত হয়। তবে সিদ্ধান্তটি ট্রাম্প আদৌ অনুমোদন করবেন কিনা, তা এখনো অনিশ্চিত। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই তিনি বিষয়টি সুরাহা করবেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এমন ধারণাই দিয়েছে।
মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ও উইচ্যাট বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা আছে। ‘টিকটক-ওরাকল’ চুক্তির বিষয়ে ট্রাম্প রাজি না হলে ২০ সেপ্টেম্বর থেকেই দেশটির টিকটক ভক্তরা চীনা অ্যাপ দুটি আর উপভোগ করতে পারবেন না।
স্মার্টফোন দিয়েই ছোট আকারের বিনোদন ভিডিও তৈরি ও প্রচারে বিশ্বের বহুল জনপ্রিয় অ্যাপ হচ্ছে টিকটক। আর খুদে বার্তা বিনিময়ে জনপ্রিয় উইচ্যাট।
‘টিকটক-উইচ্যাট’ অ্যাপ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। অ্যাপ দুটির মাধ্যমে চীন কৌশলে মার্কিন নাগরিকের তথ্যউপাত্ত হাতিয়ে নিচ্ছে বলে সরাসরি অভিযোগ করে ট্রাম্প। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন ও অ্যাপ দুটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। চীন বলছে, চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা আসলে তা হবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বহুদিন থেকেই কট্টর অবস্থানে ট্রাম্প।
মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস জানান, নির্ধারিত দিনে ট্রাম্প টিকটক চুক্তির অনুমোদন না দিলে ২০ সেপ্টেম্বর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা টিকটক আর উইচ্যাট ডাউনলোড বা ব্যবহার করতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে চীন অপচেষ্টা করছে তা বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিয়েছি।
টিকটক নির্মাতা বাইটড্যান্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক লাখ টিকটক ভক্ত আছে। তারা ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনে রাখে না। যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে সব তথ্য জমা রাখা হয়। অন্যদিকে উইচ্যাট নির্মাতা টেনসেন্ট বলছেন, উইচ্যাট দিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য বিনিময় হয় বেশি।
সারা বিশ্বে একশ কোটিরও বেশি উইচ্যাট ভক্ত আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে কতজন উইচ্যাট ব্যবহার করেন তা নিশ্চিত করে বলা হয়নি।
মার্কিন প্রশাসন বলছে, টিকটক বা উইচ্যাট কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা চূড়ান্ত করে বলা কঠিন। কিন্তু অ্যাপ নির্মাতা দুটি প্রতিষ্ঠানেরই নেটওয়ার্ক ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজাখুঁজির কাজ করেছে, তা প্রায় সুনিশ্চিত।