কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কৌশলপত্রের খসড়া প্রস্তুত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অবিশ্বাস্য শক্তি সমাজকে সুনিপুণভাবে বদলে দিতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য অনেক ভালো কাজ করার সুযোগ আছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট ও দক্ষতার সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং বিশাল পরিমাণের তথ্য-উপাত্ত (ডেটা) যাচাই, বাছাই করা সম্ভব।
ভারতের নয়াদিল্লির তাজ প্যালেসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিট ২০১৯’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ফর অল’ শিরোনামের কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এসব কথা বলেন।
এ প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন গ্লোবাল এশিয়া-প্যাসিফিক আমেরিকা (এপিএ) লিডারশিপ দলের উপদেষ্টা দীপংকর সানওয়ালকা, হিউলেট প্যাকার্ড এন্টাপ্রাইজ ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শমস্যাটশানজি। এতে সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিংয়ের প্রধান কে এফ ভুটারফিল্ড। আলোচনায় অংশ নেওয়া দেশ ও অঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি খাতের মেশিন লার্নিং ও আইটি বিশেষজ্ঞেরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্মার্টসিটি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা—এসব কিছুতেই টেকনোলজি ও ইমার্জিং টেকনোলজি ব্যবহার করছে। আর্টিফিশিয়াল টেকনোলজি আসার পর মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজতর করতে আমরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ট্রাফিক ব্যবস্থা ছাড়াও সার্বিক উন্নয়নের জন্য ‘এআই’ ব্যবহারের উদ্দেশে কার্যক্রম নিয়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) কৌশলপত্রের প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত করেছে। যা বর্তমানে চূড়ান্ত করার পর্যায়ে আছে। ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে একদিকে মেশিনের কার্যক্রম বাড়বে। অন্যদিকে কমে আসবে মানুষের কার্যক্রম। ফলে মানুষকে রিস্কিলিং বা নতুন করে প্রশিক্ষিত করার কোনো বিকল্প থাকবে না।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাস্তবায়িত বিভিন্ন কার্যক্রমসহ ৪টি স্তম্ভের বিস্তারিত বর্ণনায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নতুন প্রযুক্তির উপযোগী করে গড়ে তুলতে স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কারিকুলাম প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আইসিটি বিষয়কে স্কুল থেকে কলেজ অবধি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অচিরেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের আইটি শিল্পের সক্ষমতা বিকাশে আইসিটি বিভাগ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতিমধ্যে ৮ হাজার ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবাটিকস, ডেটা অ্যানালিটিক বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ল্যাব প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান আছে বলেও জানান।
প্রতিমন্ত্রী মাল্টিলেটারাল লেভেল, বাংলাদেশ ফোরামের মিনিস্ট্রিয়াল সেশন আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি ও বিভিন্ন কার্যক্রম বিশ্ব নেতাদের সামনে উপস্থাপন করেন।
প্রসঙ্গত, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গ্লোবাল ইয়াং লিডার হিসেবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের আমন্ত্রণে ‘ইন্ডিয়ান ইকোনমি ২০১৯’ পর্বে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও তিনি ভারত সফরে আরো বেশ কয়েকটি প্যানেল আলোচনায় সরাসরি অংশগ্রহণ করবেন।