কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে রবি
দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে আবারো নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গ্রামীণফোন ও রবির কাছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র পাওনা নিয়ে দ্বন্দ্বের ফলে এ খাতের অস্থিরতা চলছে। ফলে দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর রবি বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে। ভলান্টারি সেপারেশন স্কিমের (ভিএসএস)-এর আওতায় এসব লোককে বিদায় করা হবে।
গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আর রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা অডিট বাবদ দাবি করে আসছে। দুই শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবির কাছে সরকারের এই পাওনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা সমস্যার সমাধান মেলেনি।
যে কারণে এ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে রবি বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে গ্রামীণফোন ও রবির এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় তারা কোনো যন্ত্রাংশ কিংবা নতুন প্যাকেজ চালু করতে পারছে না।
একদিকে অপারেটরদের ৪জি সম্প্রসারণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে আর অন্যদিকে তারা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এ অবস্থায় রবির কয়েকশ কর্মীর কোনো কাজ নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এসব কর্মী প্রায় এক বছর ধরে অলস বসে রয়েছেন।
কাজ না থাকায় এভাবে কর্মীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য বসিয়ে রাখতে পারি না। কারণ এটি শিগগিরই একটি বোঝা হয়ে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেন অপারেটরটির এক কর্মকর্তা।
রবির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ভিএসএস পেতে যাওয়া কর্মীদের গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য সুবিধাদিসহ কিভাবে দেওয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপারেটর থেকে বলা হচ্ছে কাউকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হবে না, এটি পুরোপুরি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কর্মসূচি।
এ প্রসঙ্গে রবি’র চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার, রবি আজিয়াটা লিমিটেড সাহেদ আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, রবি তার কর্মীদের জন্য প্রথমবারের মতো ভলান্টারি সেপারেশন স্কিম (ভিএসএস) ঘোষণা করেছে। টেলিযোগাযোগ খাতে ভিএসএস একটি সাধারণ ঘটনা। রবি কর্মীদের মধ্যে যারা সুযোগটি নিতে চান, শুধুমাত্র তাঁদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। কোনো কর্মীই এতে অংশ নিতে কোনোভাবেই বাধ্য নন।
টেলিযোগাযোগের মতো প্রতিযোগিতামূলক খাতে টিকে থাকতে হলে দক্ষ ব্যয় কাঠামো থাকা দরকার। এ খাতে প্রতিনিয়তই নিয়ন্ত্রণগত বাধা বাড়ছে, প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এ অবস্থায় সনাতন টেলিযোগাযোগ কোম্পানি থেকে রবিকে ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে ব্যয় কাঠামো একটি জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে বাংলালিংক ও গ্রামীণফোন একাধিকবার কর্মী ছাঁটাই করে। গ্রামীণফোন তার কর্মী সংখ্যা পাঁচ হাজার থেকে ১৮০০-তে নামিয়ে এনেছে। আর বাংলালিংক তাদের কর্মী সংখ্যা ২৫০০ থেকে ১১০০-তে নামিয়ে এনেছে।