হাজার কোটি টাকা দেওয়ার দশ দিন পরেও নিষেধাজ্ঞাতেই আছে জিপি
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুসারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে তাদের অডিট দাবির বিপরীতে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করলেও এখনো নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই আছে গ্রামীণফোন।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসিকে পে-অর্ডার হিসেবে এক হাজার কোটি টাকা প্রদান করে গ্রামীণফোন।
পরেরদিন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আরো এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। তবে এর মধ্যে গ্রামীণফোনের সঙ্গে বৈষম্যমূলক কোনো আরচণ করতে বিটিআরসিকে বারণও করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল বিভাগের সাতজন বিজ্ঞ বিচারপতি।
এদিকে টাকা দেওয়ার পর থেকে পৌনে আট কোটি গ্রাহকের অপারেটর গ্রামীণফোন বিটিআরসি’র কাছে বারবার ধরণা দিচ্ছে তাদের ওপরে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার জন্যে।
গত জুলাই মাসে বিটিআরসি সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে গ্রামীণফোন এবং রবি’র সকল প্রকার অনুমোদন বন্ধ করে দেয়।
আইন অনুসারে অপারেটরদের নতুন প্যাকেজ চালু, নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং মেইনটেনেন্সের জন্যেও অপারেটগুলোকে বিটিআরসি’র কাছ থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয়।
এদিকে বিটিআরসি গ্রামীণফোনের আবেদন বিষয়ে বলছে, কোর্টের রায় হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তারা কিছুই বলতে পারবে না।
গ্রামীণফোন বিটিআরসিকে ল’ইয়ার্স সার্টিফিকেট দিলেও সেটিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তারা।
এদিকে এর আগে বিটিআরসি বহুবার ল’ইয়ার্স সার্টিফিকেট-এর ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নিলেও এবার নেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রবি’র ক্ষেত্রে বিটিআরসি ল’ইয়ার্স সার্টিফিকেট-এর ওপর নির্ভর করে ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং তাদের অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে তারা সেটি করতে নারাজ।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোন অনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও তাদের বক্তব্য হল আট মাসের বেশী সময় নেটওয়ার্কের তেমন কোনো কাজই তারা করতে পারেনি। ফলে গ্রাহক সেবার মান খুবই খারাপ হয়ে গেছে। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি টাকা দেওয়ার পরেও আরো সময়ক্ষেপণ করে তাহলে সেটি গ্রাহকদেরকে খারাপ সেবা নিতেই বাধ্য করবে।
এর আগে বিটিআরসির করা অডিটে গ্রামীণফোনের কাছে তারা মোট ১২ হাজার ৫৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে। যার মধ্যে বিটিআরসির অংশ ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি আর এনবিআরের অংশ ৪ হাজার ৮৬ কোটি টাকা।
বিটিআরসির পাওনা দাবিকৃত ৮ হাজার ৪৯৪ কোটির টাকার মধ্যে মূল টাকা হলো ২ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। বাকি ৬ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা-ই বিলম্ব ফি, যেটি মূল টাকার ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে হিসেব করা হয়েছে।
বিষয়টি আদালতে গড়ালে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ তিনি মাসের মধ্যে (২৪ ফেব্রুয়ারি) গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। পরে তাদের রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রথম দফায় এক হাজার কোটি টাকা এবং পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে আরো এক হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশনা দেন সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: গ্রামীণফোনের ১০০ কোটি টাকার চেক ফিরিয়ে দিলো বিটিআরসি
গ্রামীণফোনকে সোমবারের মধ্যে ১০০০ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ
রোববার বিটিআরসিকে ১০০০ কোটি টাকা দেবে গ্রামীণফোন