অনুমোদন ছাড়াই চলছে ‘নগদ’
ব্যাংকিং এবং রেমিটেন্স সেবা প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার এবং এজেন্টের মাধ্যমে সেবা প্রদানের জন্য ‘নগদ’কে অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে অনানুষ্ঠানিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে তৃতীয় পক্ষ থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের (টিডব্লিউটিএল) মাধ্যমে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে একটি নিরাপদ ও দক্ষ পেমেন্ট সিস্টেমসি নিশ্চিত করবে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ ১৯৭২ ও সংশোধিত পোস্ট অফিস আইন ২০১০ এর মধ্যে সামঞ্জস্য আনার জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ডাক বিভাগের ব্যাংকিং সেবা আওতায় আনার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সংশোধিত পোস্ট অফিস আইন ২০১০ অনুযায়ী ডাক বিভাগ পেমেন্ট, রেমিটেন্স ও বীমা সেবা প্রদানের এখতিয়ার রাখে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ সরাসরি ডাক বিভাগের প্রদানের কথা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ‘নগদ’ সেবাটি বেসরকারি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল ম্যানেজমেন্ট এবং এজেন্ট তদারকির বিষয়টিও তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে করা হচ্ছে।
বেসরকারি তৃতীয় পক্ষ দ্বারা পরিচালিত এজেন্ট পয়েন্টের মাধ্যমে ‘নগদ’ সেবাটি প্রদানের জন্য বিভিন্ন ভাবে ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার এবং এজেন্টের মাধ্যমে সেবা প্রদানের জন্য নগদকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে ডাক বিভাগের নগদ সেবা প্রদান অনানুষ্ঠানিক ভাবে চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বিদ্যমান মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি লেনদেন সীমা এবং ব্যালেন্স সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এজেন্ট ও গ্রাহকদের।
বর্তমানে বিকাশ, রকেটসহ অন্যান্য কোম্পানির একজন গ্রাহক দিনে দুই বারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন এবং ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারেন। সেখানে ডাক বিভাগের একজন গ্রাহক দিনে ১০ বারে আড়াই লাখ টাকা জমা এবং একই পরিমাণ টাকা উত্তোলন করতে পারছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক লীলা রশিদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ ১৯৭২ এবং ২০১০ সালে সংশোধিত ডাক আইনের মধ্যে সামঞ্জস্য আনার জন্য আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’ কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন গ্রহণ করার আবশ্যকতা রয়েছে।