প্রস্তাবিত বাজেট: বরাদ্দ বেড়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নতুন অর্থবছর ২০১৯-২০ এর প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প মন্ত্রণালয়কে ১ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ২০৪ কোটি টাকা বেশি।

বৃহস্পতিবার ( ১৩ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প মন্ত্রণালয়কে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা। অন্য দিকে গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিল্প মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত এ বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। যা গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকারের চেয়ে ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা বা ১৩ শতাংশ বেশি। প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

   

ভোজ্য তেলের নতুন দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভোজ্য তেলের নতুন দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ

ভোজ্য তেলের নতুন দাম নিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ

  • Font increase
  • Font Decrease

ভোজ্য তেলের নতুন দাম নিয়ে ঘোষণা আসতে পারে আজ দুপুরের মধ্যে। এর আগে মিল মালিকরা দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরেই একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকের পরই এ নিয়ে আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত।

ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠক করে তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে ঘোষণা আসবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে মিল মালিক ও ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে আজকের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ট্যারিফ কমিশন নাকচ করলেও ভোজ্য তেলের মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন তার নিজস্ব পর্যালোচনা অব্যাহত রেখেছে। ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।

 

;

একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. বিরূপাক্ষ পাল

‘অর্থের প্রচলনগতি বাড়লে ১ টাকায় ১০ টাকার কাজ হবে’



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ বা নগদের মতো মেবাইল ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিপ্লব সাধন করেছে উল্লেখ করে খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল বলেছেন, উচ্চমুনাফার প্রশ্নে প্রতিষ্ঠানগুলোর যে মনোপলি, তা ভাঙতে হবে। এখানে আরও প্রতিযোগিতা আসা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কোর্টল্যান্ডে অবস্থিত স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক এর অর্থনীতির অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. পাল আরও মনে করেন, রেমিটেন্স খাতকে জনস্বার্থের সঙ্গতিপূর্ণ করে যে অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে-মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমকেও অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেভাবে উন্নীত করা উচিত। তাতে দেশের অর্থের প্রচলনগতি বাড়বে, তখন ১ টাকায় ১০ টাকার কাজ হবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সমসাময়িক নানা ইস্যুতে বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ড. বিরূপাক্ষ পাল। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে থাকছে আর্থিক সেবা খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্ভাবনা, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিং, রেমিটেন্সের মতো প্রসঙ্গে ড. পালের মূল্যায়ন। কথা বলেছেন বার্তা২৪.কম এর পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম

বার্তা২৪.কম: আর্থিক সেবা সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ফাইন্যান্সিং প্রযুক্তিগুলো নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেবা বহুমূখিকরণে প্রযুক্তিই তো ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। আপনি কি মনে করেন...

ড. বিরূপাক্ষ পাল: সেটা তো অবশ্যই। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন মধ্যাহ্নে একজন ভদ্রলোক আসতেন, তিনি মানি অর্ডার নিয়ে আসতেন। তিন শ’ টাকার মানি অর্ডার থাকলে প্রথমে ২০০ টাকা দিতেন, বাকী ১০০ টাকাটা অনেক ভেঙে ভেঙে দিতেন; যাতে তাকে কিছু বকশিস দেওয়া হয়। চারদিকে খবর হয়ে যেত তার টাকা আসছে। তখন এতো ডিজিটাল প্রযুক্তি ছিল না। এখন বিকাশ বা নগদ বলি-এগুলো বিপ্লব সাধন করেছে। এ নিয়ে দ্য ইকনোমিস্ট পত্রিকায় আমার একটি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। এখন একজন রিক্সাচালক তাঁর স্বজনদের কাছে টাকা পাঠিয়ে ফোন করে বলে দেয়। যদিও রেট (পাঠানোর ব্যয়) এখনও অনেক বেশি। আসলে উচিত হবে, রেটটাকে যেকোনো ভাবে শূন্যতে নিয়ে আসা। অন্যকোন ভাবে তাদেরকে ফ্যাসিলিটি দেওয়া। বিকাশ এই প্ল্যাটফর্মটা ব্যবহার করতে দিচ্ছে, যারা এই প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন করছে; তাদের কাছ থেকে একটা পয়সা নিচ্ছে, আরও কিছু পেমেন্ট সরকার দেখতে পারে। যদি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ১০০০ টাকায় ২০ টাকা নিয়ে নেওয়া হয়, এটা তার জন্য কষ্টের ব্যাপার। সে ২০ টাকা দিয়ে আরেকটা জিনিস কিনতে পারে। এটি প্রথম অবস্থায় বিকাশের মনোপলির কবলে পড়ে। যখন আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে ছিলাম তখন বিকাশ ৮৫ ভাগ করতো (মোবাইল ফাইনান্সিং), তারপর অন্যান্য মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলো আসে। বাংলাদেশে যা হয়, একবার যে মনোপলি তৈরি করতে পারে সে মনোপলি ধরে রাখতে পারে দীর্ঘদিন। বিদেশে উল্টো, যখন কেউ মনোপলি তৈরি করবে, তাকে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে; কেউ হাইকোর্টের কাছে গেলেই মনোপলি ভেঙে দিবে। দ্বিতীয়: দুই কোম্পানি যদি এক হতে চায়, তখন মনোপলি সৃষ্টি করবে কিনা তা আদালত খতিয়ে দেখবে। বিদেশে এন্টি কম্পিটিশন কমিশন আছে, আমাদের যেটা কম্পিটিশন কমিশন। অস্ট্রেলিয়াতে এর নাম এন্টি কম্পিটিশন কমিশন (এ সি সি)। মানে এন্টি কম্পিটিশন কেউ কিছু করলে তারা অ্যাকশন নিবে। যেভাবেই ডাকি না কেন, তারা খুবই অ্যাকটিভ। আমাদের যে কমিশন আছে তার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় না। এটা অনেকটা জীবনানন্দের শিশিরের শব্দের মতো। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত আমলাকে বানানো হয়। তাদের পুনর্বাসনের একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়। রিটায়ার্ড আমলারা বাংলাদেশ ব্যাংকেও থাকবে, কম্পিটিশন কমিশনে থাকবে; ব্যাংকিং ডিভশনে থাকবে-পরিচালকের বোর্ডে থাকবে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে। এজন্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানের ইনোভেশন ইনডেস্কে খুব দুর্বল। যাঁরা প্রতিষ্ঠান চালায় তারাও র‌্যাংকিংয়ে দুর্বল। আমলাতন্ত্র-ব্যবসায়ীতন্ত্র জেঁকে বসেছে। সবদিকে তাদের উপস্থিতি। পার্লামেন্টই তাদের দখলে থাকে। তবে এখন কম্পিটিশন এসেছে, আরও বেশি আসা উচিত। এখানে অর্থের ব্যাপার থাকা উচিত নয়।

বার্তা২৪.কম: রেমিটেন্স নিয়ে যে সিস্টেম ডেভেলপ করেছে, অভ্যন্তরীন মোবাইল ফাইন্যান্সিংয়ে সেটা কেন করা গেল না?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের অতিরিক্ত কিছু দিতে হয় না। তারা কি সার্ভাইব করছে না? অবশ্যই সার্বাইভ করবে, মেজর এজেন্সি সাপোর্ট দিতে হবে। মানুষ যাতে সহজে অর্থটা পায়। অর্থ প্রিন্ট করলে যেমন অর্থনীতিতে অর্থ সৃষ্টি হয় তেমনি এর প্রচলনগতি যত বাড়ে অর্থাৎ ভেল্যুসিটি যত বাড়ে অর্থনীতি ততো শক্তিশালী হয়। কয়েক শত বছর আগে ‘কোয়ান্টেটি থিওরিস অব মানিস’ এও একথা বলা আছে। শুধু অর্থনীতিবিদদের ক্ষেত্রেই নয়-জ্যোতির্বিদ্যার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। ভেল্যুসিটি যদি বাড়ানো যায় তাহলে ১ টাকায় ১০ টাকার কাজ করা যাবে। অর্থনীতিকে অর্থায়ন অর্থাৎ মনিটাইজেশন ইনডেস্ক মনে হয় এখন ৫৫ বা সর্বোচ্চ ৬০ হতে পারে। মনিটাইজেশন এখনও দুর্বল অবস্থায় আছে। অর্থাৎ গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলো মনিটাইজেশন বাড়াতে পারে-অর্থের প্রচলনগতি বাড়াতে পারে; মানুষের প্রয়োজন তাৎক্ষণিকভাবে মেটাতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার করে বলব, আমি এখান থেকে অনুষ্ঠান করি অথচ বাংলাদেশে আমার ভাইয়ের যে একাউন্ট আছে সেখানে অনুষ্ঠান শেষে সেকেন্ডে টাকা পৌছে যায়। একজন রিক্সাচালক সারাদিন রিক্সা চালিয়ে সন্ধ্যায় স্ত্রীর কাছে টাকা পৌছে দেয়-যেটাকে বলে কনজ্যুমার সারপ্লাস। কনজ্যুমারের লক্ষ্য কি? ম্যাক্সিমাম সেটিসফেকশন। তারমানে ওভারঅল সেটিসফেকশন যখন বাড়তে থাকে, তখন স্যোশাল ওয়েলফেয়ার বাড়ে। অন্তর্ভূক্তি বাড়ে, সমাজে নিশ্চিন্তে থাকা যায়। এমন হয়েছে পরিবারে কেউ অসুস্থ, সময়মতো টাকা পৌছেনি বলে স্বজনটি মারা গেছে। কিন্তু এই ফিনিন্সিয়াল সার্ভিসে কেউ নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারে। এর মমতাগত দিক আছে, মনস্তাত্ত্বিক দিক আছে, মাঙ্গলিক দিক আছে এবং অর্র্থনৈতিক দিক আছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্র্ণ। এর আরও প্রমোট করা উচিত।

বার্তা২৪.কম: সামষ্টিক অর্থনীতির যে লক্ষ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হবো, সেই লক্ষ্য পূরণে ডিজিটাল প্রযুক্তি কতখানি অপরিহার্য হবে?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: প্রযুক্তিগত দিকে তো আমাদের অবশ্যই উন্নত হতে হবে। গ্লোবাল টেকনোলজি ইনডেস্কে আমরা কতখানি পিছিয়ে আছি তা দেখতে হবে। এখানে পিছিয়ে থাকলে তো আমরা উন্নত হবো না। মাথাপিছু আয় বাড়লেই একটা দেশ উন্নত হয় না। ধরুন, ইয়েমেনে আজ তেল পাওয়া গেল। তারা তেল বেঁচে মাথাপিছু আয় বাড়িয়ে ফেললো, তাই বলে তো তারা উন্নত দেশ হবে না। সোমালিয়াতে হঠাৎ করে স্বর্ণ পাওয়া গেল, এমনিতেও ওদের খনিজসম্পদ আছে অনেক। স্বর্ণ বিক্রি করে তাদের জিডিপি হঠাৎ বেড়ে গেল, আর জিডিপিকে সেদেশের মাথাপিছু আয় দিয়ে ভাগ করলেই তো সে দেশ উন্নত নয়। কারণ সোমালিয়ার জনসংখ্যার বড় অংশ জলদস্যু। সেখানে সভ্যতা নেই। অন্যায়, অবিচার, হত্যা-এগুলো এদের পরিচয়ের সঙ্গে মিশে আছে। উন্নত হতে হলে আরও কিছু ইনডিকেটর দরকার। ইউরোপে শিক্ষা আছে। সেরকম রেঁনেসা দরকার হয়। চিন্তা-চেতনার মধ্য দিয়ে একটা বিপ্লব ও বিকাশ দরকার হয়। উন্নত জীবনধারা, পারস্পারিক মমতা, সমীহ, ‘অ্যামপেথি ফর আদার্স’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখন এখন সুখের ইনডেক্স করি, সুখ মানে শুধু টাকা নয়। এখানে স্যোশাল সেফটি নিশ্চিত হচ্ছে কিনা, আমার সমাজে একটা মেয়ে সন্ধ্যায় বের হলে যদি নির্যাতনের স্বীকার হয়, সেটা উন্নতির লক্ষণ না। উন্নতি মানে অধিকার, আদালতের গতি। এগুলোতে যে বাংলাদেশ খুব পিছিয়ে তা না, এগিয়ে যাচ্ছে, কথা হচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন মুক্ত মিডিয়া। অমর্ত্য সেন বলেছেন, যে দেশে উন্নত মিডিয়া থাকে, সে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় না। কারণ মুক্ত মিডিয়া অনেকগুলো দিক উদঘাটন করে। তারা সংবাদ প্রকাশ করলে সরকার পদক্ষেপ নিতে পারে। দ্বিতীয়তঃ ইকনমিক্স অব ইনফরমেশন এখন খুব ভালো। ইনফরমেশনের ওপর কাজ করার জন্য এখন অনেককে নোবেল পুরষ্কার দেওয়া হচ্ছে। তথ্য জানাটা একটা বিরাট ব্যাপার। র‌্যাশনাল একস্পেকটেশন বা যৌক্তিক প্রত্যাশা সৃষ্টি করে।

বার্তা২৪.কম: উন্নত দেশে রূপান্তরের একটি রাজনৈতিক আকাঙ্খার মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। এর বাস্তবতা আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন...

ড. বিরূপাক্ষ পাল: ২০৪১ সালে উন্নত দেশের ব্যাপারটা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি একজন স্বাপ্নিক মানুষ, সবদিক দিয়েই স্বপ্ন দেখেন। সব ইঞ্জিনিয়াররা যখন বললো পাতাল রেল করা যাবে না, বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকার সময়ে গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নেতৃত্বে আমিও এ নিয়ে অনেক কাজ করেছি। ইঞ্জিনিয়াররা ‘না’ করলেও তিনি এগিয়ে গেলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশেপাশের অনেক উপদেষ্টারা তাকে ভুল উপদেশ দেন বা ভুল তথ্য দেন। ২০৪১ সালে আমাদের উন্নত দেশ হতে হবে কেন? এটা কোন ফোরকাস্টিং বা অংক করে পেলেন তারা এটা আমি অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গিতে বুঝি না। এ নিয়ে আমি পত্রিকাতেও লিখেছি। এতে সরকার পক্ষের অনেকে ভেবেছে বোধহয় আমি সমালোচক। এটা সমালোচনা নয়। অর্থনীতির বিষয় কিন্তু রাজনৈতিক উচ্ছ্বাস দিয়ে চলে না। রাজনীতির মধ্যে অনেক ভেইক জিনিস থাকে। ধরুন, যিনি লুটেরা, তিনিও সমাজে জনদরদী হন! তাঁর চরিত্র খারাপ থাকলেও তিনি চরিত্রবান হন, ফুলের মতোন পবিত্র হন-এগুলো বলা যায়! কিন্তু অর্থনীতিতে এ ধরণের ভণ্ডামির জায়গা নেই। অর্থনীতিতে অংকগুলো খুব সঠিকভাবে আসে। এখন দেশের জিডিপি একটা স্থিমিতভাবের মধ্যে পড়ে গেছে, তিন বছর আগেই হিসেব করেছিলাম ৯.৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি যদি ধরা হয় তবে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পৌছা যেতে পারে। হঠাৎ করে পৌছে গিয়ে বলে দিলাম উন্নত হয়ে গেছি। এটাকে উন্নতি বলে না। উন্নতির আরও কিছু স্যোশাল ইনডিকেটর আছে। এজন্য সত্যজিৎ রায়ের জলসাঘর সিনেমাটা সবার দেখা উচিত। খানদানি জমিদার আর হঠাৎ করে পয়সা হলো আর আমি জমিদার হয়ে গেলাম, বাঈজী নাচিয়ে পয়সা ছুঁড়ে দিলাম, এটা হয় না। খানদান অভ্যাস যেটা ইউরোপে বা ভারতীয় সভ্যতাতেও দেখি, সেই আভিজাত্য, মানুষের প্রতি মমতা, দরদ-স্বাস্থ্যগত উন্নতি, মানসিক উন্নতি, অঙ্গীকার, স্বাধীনতাবোধ-এই জিনিসগুলো না থাকলে হঠাৎ করে জিডিপিতে স্পর্শ করে গেলেই আমরা উন্নত দেশ হব না । তার মানে আমরা আশা ছেড়ে দেব? না। ২০৪১ সালে না হলেও অনেক ইনডিকেটরে আমরা নিশ্চয়ই পৌছে যাবো। এট্ দ্য সেইম টাইম উই হেভ লট অব আনসার্টেনিটিস..। কোভিড হঠাৎ করে আসলো বা কোন ডিজাস্টার আসলো। হঠাৎ করে ভূমিকম্প বা পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ আসলে, তখন কি হবে? যেটা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি এখন ফেইস করছে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এর আবহাওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত। হঠাৎ পকেটে টাকা হয়ে গেলেই কেউ বড় লোক হয়ে যায় না। বড় লোক হতে গেলে মন মেজাজ, স্বাস্থ্য-শিক্ষা-সম্বৃদ্ধি এই জিনিসগুলো আনতে হবে। এই জায়গাগুলোকে ঠিক মতো নার্চার করা হচ্ছে না। আমরা শুধুমাত্র ‘জিডিপি-জিডিপি’ আর ‘পার ক্যাপিটা ইনকামের’ ধাক্কায় পড়েছি। সম্প্রতি ডিভেলুয়েশনে দেখলাম পার ক্যাপিটা ইনকাম কমে গেছে। এখন এটাকে চাপা দেওয়ার জন্য বিবিএস (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো) বললো টাকার অংকে তা প্রকাশ করবে। এভাবে করলে তো হবে না, আন্তর্জাতিক বিচারের বেলায় তো টাকায় আসবে না, ডলারে আসবে। এই বিচারে আমি বলব, উন্নত বিশ্ব হতে হলে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুন্দর করতে হবে। যাতে আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ভরসা রাখতে পারি। পাসপোর্ট অফিসে গেলে বা রাজউকের মতো প্রতিষ্ঠানে গেলে যাতে আমরা ভরসা করতে পারি যে আমাদের কাজটা হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, আমরা উন্নতি করছি কিন্তু পাশাপাশি দুর্নীতি ভেতরটা খেয়ে দিচ্ছে। তার রিফ্লেকশনটা আয়নায় পড়ছে। গ্রোথ কমে যাচ্ছে, এখন তো কমার কথা নয়। কোভিডের পর আমেরিকার মত জায়গায় যেখানে সুদের হার বাড়াতে বাড়াতে সর্বোচ্চ করে ফেললো (যা ৩০ বছরে দেখা যায়নি), সেখানেও তো গ্রোথ হচ্ছে ভালো। সব জায়গায় গ্রোথ হচ্ছে ভালো। তারা তখন ১%-২% গ্রোথ সেলিব্রেট করতো। সেই সময় আমাদের ৭-৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল কিন্তু এখন আমরা এত নেমে গেলাম কেন? এখানে দুর্নীতিগুলো কাজ করেছে। বড় মাপের মানি লন্ডারিং হয়েছে। আমি ঘুরেফিরে যে জায়গাতে আসতে চাইছি, ডিজিটাইজেশনকে ফাঁকি দিয়ে মানি লন্ডারিং হয়ে যাচ্ছে, আমরা ইনভয়েসিং করছি। ওই জায়গাগুলিতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জরুরি। আমি একটি বই লিখেছি, ‘ম্যাক্রো ইকোনমিক্স পলিসি অ্যান্ড ইনস্টিটিউশন ফর গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’। ইনস্টিটিউশনগুলোকে যদি শক্ত করা না যায়, পলিসি যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে তাহলে ডিজিটাইজেশনে কাজ দিবে না। সেক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন চোরকে কাজে দেবে। প্রযুক্তি তো সোমালিয়ার হাতেও আছে। সোমালিয়ার প্রযুক্তি তো পাইরেটদের হেল্প করছে বেশি, র‌্যাদার দেন কমন পিপল। বানরকে ক্ষমতা দিতে হয় না। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে একটি জায়গায় আনা দরকার। দুর্নীতি দমন কমিশন যেন কাজ করতে পারে। করাপশন ইনডেস্ক থেকে আমাদের নড়চড় হচ্ছে। নলেজ ইকনমি ইনডেস্কে কিভাবে উঠা যায় সে চেষ্টা করতে হবে। ইনোভেশন ইনডেস্ক দেখতে হবে। এই ইনডেস্কগুলো একাধিক্রমে হেলপ করবে ফাইনান্সিয়াল ইনক্লুশন এবং গরীবের ক্ষমতায়ন। রাজনীতিতে আমরা বলি, ‘জনদরদী’, ইলেকশন শেষে এখন তাদের আর পাওয়া যায় না এলাকায়! এই জায়গাগুলিতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। ইটস লাইক এ প্যাকেজ অব ইওর হেলথ, স্বাস্থ্য সবদিকে দিয়ে ভালো, কিন্তু আঙুলটা কাটা-সব পারফর্ম্যান্স নষ্ট করে দিবে।

বার্তা২৪.কম: আর্থিক সেবা খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্ভাবনা কতাটা কাজে লাগাতে পেরেছি আমরা?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: গ্রামে চাযের দোকান দিতেও ক্যাপিটাল দরকার। ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনটা যে ধাক্কায় শুরু হয়েছিল সেভাবে কিন্তু কাজ হয়নি। তাকে ক্রেডিটের একসেস দিতে হবে। তারা ক্যাপিটাল মার্কেটে আসবে না। কারণ সবগুলো ছোট ব্যবসা। ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল। ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ব্যাংক ইজ দ্য বেস্ট প্লেস। এই জায়গাগুলোতে প্রচুর ঘাটতি আছে। বিভিন্ন এনজিওরা চেষ্টা করছে। একটি গ্রামে গিয়ে যদি আমরা ৫০ জন লোককে ধরি, তাদের এমপ্লয়মেন্ট সেক্টরে কাজ করি। তাদের টাকা দিয়ে ৫০ জনে ৪০ জনই দাঁড়াবে। তারা দাঁড়িয়ে একজন আরও ৩ জন করে লোক রাখবে। ৫০ জনের টাকা একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরির লোক একদিনেই মেরে দিলো। এখান থেকে সুফলটা পাওয়া যাচ্ছে না। এই জন্য ফান্ডের অল্টারনেটিভ ইউজগুলো দেখতে হবে। এদেরকে লোটাললি ফান্ড দেওয়া বন্ধ করতে হবে, দিলেও খুব পার্শিয়াল। দেখতে হবে ব্যালান্সশিটে কত পার্সেন্ট বন্ড ইস্যু করেছেন আর কত পার্সেন্ট এক্যুইটি আছে। এই ফাইন্যান্সিয়াল আর্টিটেকচার অনুযায়ী জাজমেন্টে আনতে হবে। ওই লাইনে আমরা এখনও দক্ষতা বিস্তৃত করিনি। নীতি-নিয়মও করিনি। কেন নীতি-নিয়ম করিনি কারণ আমাদের নিয়মগুলো উল্টোদিকে যায়। আমাদের ডিরেক্টরশিপ ল’টা অ্যান্টি ইনক্ল্যুশন। একটি ব্যাংকের যত ডাইভার্স ডিরেক্টরশিপ থাকবে ততো ভালো। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরে আসছি, তখন আমি পত্রিকায় লিখেছিলাম, এখানে (যুক্তরাষ্ট্র) কি করে ওয়ার্ল্ডমার্টে ডিরেক্টর বডির মধ্যে একজন আর্টিস্ট নিয়েছে। যাদের ডাইভার্স ডিরেক্টরশিপ থাকে তাদের কাছে এসিমিনেশন অব নলেজ হয়, আইডিয়া হয়-কালচার হয়। যতো ডাইভার্সিটিতে যাওয়া যায় ততো মঙ্গল। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন শুধু সাদা নিবে না, শুধু কালো নিবে না; শুধু ইন্ডিয়ান নিবে না, শুধু চাইনিজ নিবে না, শুধু মেয়ে নিবে না, বা ছেলে নিবে না। আমরা হেমোজিনয়াস সোসাইটির দিকে যাই। বাংলাদেশে উল্টো দেখছি, একটা ডিপার্টমেন্টের মধ্যে সব এক ধরণের মানুষ থাকতে হবে। একটি স্কুলে সব সমমনা রাজনীতির লোক থাকতে হবে। আমরা এন্টি ডাইভার্সিটি। এই এন্টি ডাইভার্সিটি আসলে এন্টি ইনক্লুশন। ইনক্লুশন করতে হলে তো আসলে সব কিছুকে ইনক্লুশন করতে হবে। সব এক মতবাদ হতে হবে কেন? উনি কোন পন্থী? এসব ব্যাপার কাজ করে বাংলাদেশে। অথচ বিদেশে ডাইভার্সিটি খোঁজে। হার্ভার্ড এর প্রোডাক্ট হার্ভার্ড নেয় না। অন্য একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ে আসবে। কালচারাল এসিমিনেশন..আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেই ঠিক করে রাখে এই ছেলেটাকে আমরা নেব, অনেকটা ‘ঘর জামাই’। আর এই ‘ঘর জামাই’ তো খুব রিবোল্ড করতে পারে না। ‘ঘরজামাই’ খুব কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারে না। কালচারাললি যদি জিনিসগুলো ঠিক করা না হয় তবে কার্যকর ফল কিছু আসবে না। ওয়েস্টার্ন কালচারে বুঝে গেলাম, তাদের টলারেন্স ও ওপিনিয়ন অব ডাইভার্সিটি। আমাকে এসেসমেন্টের সময় কারেক্ট এসেসমেন্ট করবে। আর কারও বিরুদ্ধে যদি আমি বোর্ড রুমে কথা বলি পরের দিন গিয়ে আমার বিরুদ্ধে কথা বলবে। ওটার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি না। বিদ্যাসাগর বলে গেছেন, ‘বাঙালি অসার চরিত্র’। আমাদের সিস্টেমের মধ্য দিয়ে আমরা করাপ্ট করে রেখেছি। কম্পিটিশনকে হাতে ধরে ধ্বংস করেছি। বিভিন্ন ধরণের রিফাইনারি গুলো...ইন্ডিয়াতেও বড়লোক ডেভেলপ করে তবে সেখানে একটা কর্পোরেট স্ট্রাকচার গড়ে উঠেছে। তাদের কন্ট্রিবিউশন আছে। অনেক বড় বড়, কিছু দিন আগে বিএটিএ হয়েছে। এরা কত লোককে এমপ্লয়মেন্ট দিয়েছে? ডাইভার্সিটি স্ট্রেন্থ ড্রাইভার্সিটি। কালচারাল ডাইভার্সিটি, রিলিজিয়াস ডাইভার্সিটি, ওপিনিয়ন ডাইভার্সিটি, জেন্ডার ডাইভার্সিটি-এগুলোর মধ্য দিয়ে শক্তি অর্জন করতে হবে আমাদের। আমেরিকার শক্তিটা কোথায়? আমেরিকা তো প্রকৃতঅর্থে কারোর দেশ না। কালচারাল ডাইভার্সিটি, রিলিজিয়াসস ডাইভার্সিটি-এগুলোর মধ্য দিয়ে শক্তি লাভ করে দেশটি। সব মাইগ্রান্টদের দেশ। এই মাইগ্র্যান্টদের মধ্যে যদি ডাইভার্সিটি না থাকতো তাহলে সম্ভব হতো? তাদের শক্তিটা মেধাকে নিয়ে। তাদের শত রকম দোষ থাকলেও তারা গ্লোবাল ইনডেক্সে এক নম্বর দেশ। নলেজই তাকে শক্তিমান করেছে। অর্থনীতিবিদ ডেভিড রোমার বলেছেন, এক সময় ধারণা করা হতো ধনী দেশ আর ধনী হবে না। সেচুরেটেড হয়ে গেছে। কিন্তু তারা আবারও ধনী হয়। কেন হয়? সব কিছুর লেবারে ডিমিনিশন মার্ক আছে, নলেজের কোন ডেমিনিশিন রিটার্ন নাই। জ্ঞান মানুষকে এত ক্ষমতাশালী করে সেটা যুক্তরাষ্ট্রকে দৃষ্টান্ত ধরা যেতে পারে। আমেরিকা যখনই কলাপসের মধ্যে পড়ে তখন দেখা যায় টেক কোম্পানিগুলো তাকে টেনে তুলে ফেলে, অ্যাপল-আমাজন-সিলিকন ভ্যালি তাকে টেনে তুলে ফেলে। কারণ নলেজ দিয়ে তারা অনেক এমপ্লিফাই করতে পারে। হর্স পাওয়ার অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। ওই জায়গাটাতে চর্চা হওয়া দরকার। যে টা আমরা বুঝি তা যেন সততার সঙ্গে করি। দরিদ্রের ক্ষমতায়ন শুধু মুখে বললে হবে না। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে সমাজে। সেভাবে দরিদ্রের ক্ষমতায়ন হয় না। সেজন্য এক মন্ত্রী বলেছেন, ২৫ হাজার টাকার জন্য কৃষককে আমরা হাতকড়া পড়াই কিন্তু ২৫ হাজার কোটি টাকা যে নিয়ে গেল তার বিচার হয় না। বিচার হতে হতে ১৬ বছর চলে যায়। এই ১৬ বছরে আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা বাইরে পাচার করে দেয়। যেদিন রায় হবে তার আগের দিনে সে বিদেশে চলে যায়। এই হচ্ছে বাস্তবতা। 

;

মাতারবাড়ি বন্দর নিয়ে ঠেলাঠেলি



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এতোদিন চলছিলো রশি টানাটানি, যে যার দিকে টানছিলো। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে চলছে ঠেলাঠেলি, একপক্ষ ঠেলে দিচ্ছে অন্যপক্ষের দিকে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নিয়ে ঠিক এমনটাই চলছে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল সূত্র। এই ঠেলাঠেলি চলছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে।

চাপে পড়ে কাগজে কলমে বুঝে নিলেও সমুদ্রবন্দরের আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে কয়েক মাস ধরে। দফায় দফায় চিঠি দিলেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক) সাড়া দিচ্ছে না। ফলে হস্তান্তরও হচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র একথা জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য কয়লাবাহী লাইটারেজ জাহাজ চলাচলের উপযোগী করে চ্যানেল তৈরির প্রস্তাবনা দেওয়া হয় আরো আগে। ওই সময়ে সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে রশি টানাটানি চলছিল। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রস্তাবনার বিপরীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রস্তাব দিতে বলা হয়। তারই প্রেক্ষিতে নাব্যতা বাড়িয়ে ১৮ দশমিক ৫ মিটার করা হয়।

যথারীতি চ্যানেল ও জেটি নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করে আনে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনানুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাবাহী জাহাজ দিয়েই যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশে প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরটি। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিবের সভাপতিত্বে মাতারবাড়ি চ্যানেল হস্তান্তর ও লভ্যাংশ বন্টনের সভা হয়। ওই সভায় গত বছরের (২০২৩) জুনের মধ্যে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কাগজে কলমে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে মাতারবাড়ি চ্যানেল হস্তান্তর করা হয়। কাগজে কলমে বুঝে নিলেও চার্জ বুঝে নেয়নি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বন্দর ব্যবহারের মাসুল ঠিকই বুঝে নিচ্ছে চবক।

কাগজে কলমে বুঝে নেওয়ার সময় কথা ছিল নাব্যতা যাচাই করে চার্জ বুঝে নেবে। পরিদর্শনের জন্য প্রতিনিধি চেয়ে ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি চবকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সেই চিঠির জবাব কিংবা প্রতিনিধি পাঠায়নি চবক। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ফের তাগাদাপত্র দেওয়া হয়। তারপরও চবকের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায় নি।

বিদ্যুৎ বিভাগের চিঠিতে আরও বলা হয়, চুক্তি মোতাবেক যৌথসার্ভে পরিচালনার শেষে ইপিসি ঠিকাদারের দায়িত্ব শেষ হবে। পরবর্তীতে ইপিসি ঠিকাদারকে ড্রেজিং কিংবা অন্যান্য কাজের জন্য বলা হলে ডেমারেজ দিতে হবে। এতে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থের অপচয় হবে ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না হলে পুনরায় পলি পড়ে নাব্যতা কমে যাবে।

প্রতিনিধি প্রেরণ এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চবকের নিকটি বুঝিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়। যুগ্মসচিব তাহমিনা বেগম স্বাক্ষরিত ওই চিঠি নৌ পরিহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বরাবরে প্রেরণ করা হয়। এরপরও কোন সুরাহা হয় নি। দীর্ঘদিন কেটে গেলেও বন্দর কর্তৃপক্ষের খাম-খেয়ালীর কারণে চার্জ হস্তান্তর প্রক্রিয়া ঝূঁলে রয়েছে।

আর এতে করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির উপর বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিষয়টি। তাদের ২০-৩০ জনের মতো নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে পাহারা দিতে হচ্ছে। আবার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পলি পড়ে সংকট তৈরি আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই একবার কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ড্রেজিং করতে হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোঃ ওমর ফারুককে ফোন করা হলে মিটিংয়ে আছেন বলে এড়িয়ে যান।

;

বাংলাদেশে ‘সিনাবন’ উদ্বোধন করলেন পিটার হাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করলো আমেরিকান ব্র্যান্ড 'সিনাবন’। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বনানীতে বুধবার (১৭ এপ্রিল) শুভ উদ্বোধন হলো ব্রান্ডটির প্রথম আউটলেট।

উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মুনতাহিনা চৌধুরী টয়া। বাংলাদেশে সিনাবন স্বাদের খুশি ছড়িয়ে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

উদ্বোধন উপলক্ষে সিনাবন-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডেসিকান নারায়ণ বলেন, "মনোমুগ্ধকর অফার ও সেরা স্বাদের মাধ্যমে ফুড লাভারদের মাঝে খুশি ছড়িয়ে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।" কান্ট্রি ডিরেক্টর ডেসিকান নারায়ণ ও ব্র্যান্ড ম্যানেজার জানিবুল হাসান জনি সৃজনশীল চিন্তা ও নান্দনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উদ্বোধনের এই সুন্দর মুহুর্তটি জাদুকরী মুগ্ধতায় পরিপূর্ণ করে তুলতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন। তারা জানিয়েছেন আগামী দিনগুলোতেও ভোক্তাদের সেরা স্বাদ ও সার্ভিস প্রদানের লক্ষ্যেই তারা কাজ করে যাবেন।

১৯৮৫ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সিনাবন তার রোল এবং অন্যান্য বেকড পণ্যগুলি দিয়ে বিশ্ববাসীর মন জয় করে যাচ্ছে। স্বাদের আনন্দে খুশি ছড়িয়ে যাচ্ছে সকলের প্রাণে।

;