বন্ডেড লাইসেন্সের অপব্যবহার রোধে কঠোর কাস্টমস

৪ মাসে ৪ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল, স্থগিত ৩০২



মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের বন্ডেড লাইসেন্সের অপব্যবহারসহ নানা অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা। চলতি বছরের (মার্চ মাস থেকে জুন পর‌্যন্ত) ৪ মাসে প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান চালিয়ে এর প্রমাণ মিলেছে।

এর মধ্যে ৪ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল ও ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাসপেন্ড ও বিআইএন লক করা হয়েছে। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠান যাতে পণ্য আমদানি করতে না পারে, সেজন্য তাদের ব্যবসা শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) লক করা হয়েছে। এছাড়াও ২২টি প্রতিষ্ঠানের সাসপেন্ড কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকার অধীনে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৮১৩টি প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স রয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৮৩টি নিষ্ক্রিয় আর সক্রিয় রয়েছে ৩ হাজার ৮৩০ প্রতিষ্ঠানের বন্ডেড ব্যবহার। তার মধ্যে ৩০৬টির বন্ডেড লাইসেন্সের অপব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগ ভিত্তিতে কমিশনের কাস্টম প্রিভেন্টভ টিম পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা ১০৫ অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় ৪৭টি যানবাহন আটক, ৫টি গুদাম সিলগালা এবং ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আর এ অভিযানে সরকারের অন্তত ১৫৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি খুঁজে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায়ও হয়েছে।

লাইসেন্স স্থগিত করা উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-থ্রিএমএস টেক্স (বিড), অ্যাকটিভ সোয়েটার লিমিটেড, আলম ইন্ডাস্ট্রিজ, আনারকলি নিটওয়্যার লিমিটেড, আরাফ নিটওয়্যার, বি. ব্রাদার্স গার্মেন্টস, বিআর নিটিং মিলস, বাংলাদেশ ড্রেসেস লিমিটেড, বন অ্যাসোসিয়েটস, বাংলাদেশ কাওয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল কো. লিমিটেড, থ্রেডস লিমিটেড, বেঙ্গল জিনস লিমিটেড, ব্লুটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড, বডি স্ট্রিস বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রাইট পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, সিটাস ইন্টারন্যাশনাল বিডি লিমিটেড, চৈতি ক্লাসিক স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড, চিটাগং ফ্যাশন প্যাকেজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড, চুন জি নিট লিমিটেড, কমান্ডো ফ্যাশন লিমিটেড, দারদা নিটওয়্যার লিমিটেড, ঢাকা কার্টুন অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড, ডায়মন্ড প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, দোতি ফ্যাশন লিমিটেড, ইস্ট এশিয়া অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড, ইস্টার্ন পেপার কনভারটিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড, ইজি অ্যাকসেসরিজ কোম্পানি লিমিটেড, অ্যাপকট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, এভার ব্রাইট পলি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইভিন্স অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড, এক্সএনসিভ ফ্যাশন লিমিটেড, এক্সপোর্ট এইড প্রাইভেট লিমিটেড (ইউনিট-২), ফা অ্যাপারেলস লিমিটেড, ফিডাস অ্যাপারেলস লিমিটেড, ফিন ফ্যাশন লিমিটেড ও ফরচুন অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড।

সার্বিক বিষয়ে কাস্টম বন্ড কমিশনারেট ঢাকার সহকারী কমিশনার আল আমিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান স্যার (জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের-এনবিআর চেয়ারম্যান) একটি গতিশীল ও শক্তিশালী কাস্টমস বন্ড গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন কমিশনার এসএম হুমায়ুন কবীরকে স্যারকে। তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার নেতৃত্বে বন্ড ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সে জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনিয়ম খুঁজে বের করার জন্য ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলো রাজধানীর পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছে।’

আর এসব অভিযানে ৩ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বন্ডেড অপব্যবহারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এর মধ্যে ৪ প্রতিষ্ঠানের বন্ডেড লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। ২২টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাসপেন্ড কার্যক্রম চলছে। এছাড়াও ২৮১টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাসপেন্ড ও বিআইএন লক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, কাগজে-কলমে কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে বেশির ভাগেরই কারখানা নেই। অথচ এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বন্ড সুবিধার আওতায় বিনা শুল্কে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করে আসছে।

কাঁচামালের মধ্যে সুতা, কাপড়, কাগজ, এক্সেসরিজ, পিপি দানা খোলা বাজারে বিক্রি করাই হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ। এক শ্রেণির অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তার সহায়তায় চক্রটি ফ্রি স্টাইলে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর নির্ধারিত বিভিন্ন স্পটে বন্ডের পণ্য দেদার বিক্রি করে আসছে। এ কারণে অসম প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে দেশীয় বস্ত্র শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

এদিকে ঢাকা কাস্টমস বন্ড লাইসেন্স চূড়ান্তভাবে বাতিলের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ব্যাংক হিসাব জব্দের মাধ্যমে পাওনা আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছে। শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির পর যে পরিমাণ গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করার কথা, তা যারা করেননি তাদের কাছ থেকে সমপরিমাণ পণ্যের ডিউটি আদায় করার প্রক্রিয়া চলছে।

সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে এসব প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে বন্ড সুবিধায় শূন্য শুল্কে কাঁচামাল আমদানি করলেও নিজস্ব কারখানা নেই উল্লেখ্য করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

অথচ শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাপড়সহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির পণ্য এনে পুরান ঢাকার ইসলামপুর, নয়াবাজার, বাবুবাজার, মতিঝিলের আরামবাগে বিক্রি করে ব্যাপক বাণিজ্য করে আসছিলেন অনেকে। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় বস্ত্রশিল্পের উদ্যোক্তারা।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর ৭০ ভাগের বেশি চোরা কারবারীর সঙ্গে জড়িত। মূলত দুইভাবে বন্ডের পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রথমত, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড লাইসেন্স খুলে পণ্য আমদানি করে। দ্বিতীয়ত, ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কাঁচামাল শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করে। আমদানি প্রাপ্যতা নির্ধারণ পদ্ধতির দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই এ কাজটি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

অনেক প্রতিষ্ঠানের রফতানি আদেশ যৎসামান্য থাকলেও কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে শুধু মেশিনের উৎপাদন ক্ষমতা অনুযায়ী প্রাপ্যতা নির্ধারণ করিয়ে নিচ্ছে। এভাবে আমদানি করা অতিরিক্ত কাঁচামাল তারা খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই কালোবাজারে শুল্কমুক্ত পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এ চক্রটি বন্ডের কাপড় চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে খালাস হয়ে ঢাকার আশপাশের পাইকারি বাজারে নিয়ে যায়। রাতের আঁধারে নারায়ণগঞ্জের সানারপাড়, চিটাগাং রোড, কাঁচপুর এলাকায় কাপড়বোঝাই গাড়ি আনলোড হয়।

এজন্য চিটাগাং রোডের অনেক বাসা-বাড়িতে অস্থায়ী গোডাউনও গড়ে উঠেছে। এসব গোপন গোডাউন থেকে সুবিধা মতো সময়ে কাপড় হাতবদল হয়। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা, পুরান ঢাকার ইসলামপুরে বন্ডের কাপড়, নয়াবাজারে কাগজ ও উর্দু রোডে পিপি দানা বিক্রি হয়।

আরও পড়ুন:

বন্ডেড ওয়্যার হাউজের অবৈধ ব্যবহারকারীদের ধরিয়ে দিন: সালমান

বাতিল হচ্ছে চেক পয়েন্ট সিস্টেমসের বন্ড লাইসেন্স

চেক পয়েন্ট সিস্টেমসের ৪০ কোটি কর ফাঁকি

বন্ড অপব্যবহারকারীর মুখোশ উন্মোচন করুন: এনবিআর চেয়ারম্যান

   

ইসলামী ব্যাংকের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০% ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে। ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম-এর সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২৫ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মে ২০২৪। এ ছাড়া সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সাথে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।

;

টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি বিকাশ পেমেন্টে ১৫% ক্যাশব্যাক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিকাশ অ্যাপ থেকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল-এর নির্দিষ্ট কোর্স নিয়ে পেমেন্ট করলেই গ্রাহকরা পাচ্ছেন ১৫% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক, সর্বোচ্চ ২০০ টাকা পর্যন্ত। বিকাশ অ্যাপের হোম স্ক্রিনের সাজেশনস সেকশন থেকে ‘টেন মিনিট স্কুল’ সিলেক্ট করে ৩০ জুন পর্যন্ত অফারটি গ্রহণ করা যাবে।

টেন মিনিট স্কুল-এর লাইভ কোর্স, স্পোকেন ইংলিশ, আইইএলটিএস, ফ্রিল্যান্সিং এর মতো ভাষা শিক্ষা ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্স, ইংলিশ মাস্টার্স, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো বান্ডেল কোর্স, বুয়েট, মেডিকেল, ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার কোর্স, এসএসসি-এইচএসসি প্রস্তুতি ও অনলাইন ব্যাচের জন্য একাডেমিক কোর্স, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ নানা ধরনের কোর্স নিতে পারবেন বিকাশ গ্রাহকরা এই অফারের আওতায়।

অফারের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে https://www.bkash.com/campaign/10minuteschool-bkash-offer লিংকটিতে।

 

;

এক দিনের ব্যবধানে ফের কমল সোনার দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে সোনার দামের উত্থান-পতন অব্যাহত আছে। একদিনের ব্যবধানে সোনার দাম ভরিতে ২ হাজার ১০০ টাকা কমছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৯ হাজার টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, ২৩ এপ্রিল সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর গত ২১ এপ্রিল ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;