পুরনো জাহাজের ব্যবসা বাংলাদেশ ও ভারতের নিয়ন্ত্রণে
চট্টগ্রাম: সারাবিশ্বে পুরনো জাহাজ কেনাবেচার আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ন্ত্রণ করে দুটি দেশ। একটি হলো বাংলাদেশ, অন্যটি হলো ভারত।
প্রতিবছর ৭০ লাখ টন পুরনো জাহাজ কেনাবেচা হয়। তার মধ্যে এই দুটি দেশ কেনে ৫০ লাখ টন। বাকি ২০ লাখ টনের মধ্যে ক্রেতা হলো পাকিস্তান, চীন ও তুরস্ক। অর্থাৎ পুরানো জাহাজের ৭২ শতাংশই কেনে বাংলাদেশ ও ভারত।
গত দুই মাসের ব্যবধানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন স্ক্র্যাপ বা পুরানো জাহাজে প্রতি টনে ৪০ ডলার কমে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ ডলারে। পুরানো জাহাজ থেকে লোহার পাত দিয়ে তৈরি করা হয় রডসহ বিভিন্ন লৌহজাত সামগ্রী। প্রতিটি জাহাজ কেটে ৯০ শতাংশ লোহার পাত পাওয়া যায়।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার অন্যতম কারণ হলো- বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুম ও রমজান। ভারত ও পাকিস্তানেও মৌসুমী বায়ু এবং রমজানের প্রভাবে কমছে চাহিদা।
এ প্রসঙ্গে পিএইচপি শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন, ‘দুই মাস আগেও স্ক্র্যাপ জাহাজের দাম ছিল প্রতি টন ৪৮০ ডলার। বাংলাদেশ ও ভারতের বাজারে চাহিদা কমার কারণে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ ডলারে। ’
এ বিষয়ে গোল্ডেন আয়রণ ওয়ার্ক্স লিমিটেডের পরিচালক সরোয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ইয়ার্ড মালিকরা জাহাজ কেনে সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ের ব্রোকারেজ হাউস থেকে।’
তারা দুজনে জানান, আগে একটি জাহাজ স্ক্র্যাপ হতো ২৫ বছর পর। এখন ১৬-১৭ বছর পরই স্ক্র্যাপ ঘোষণা করে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউএই ও সিঙ্গাপুরের মার্কেটে এসব পুরানো জাহাজ কেনাবেচা হয়।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড উপকূলে সচল ৬০টি ইয়ার্ডে এনে কাটা হয় এসব পুরনো জাহাজ। ইয়ার্ডে কাটার পর এসব লোহা প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হয় রডসহ বিভিন্ন লোহার সামগ্রী। টিএমটি ৭৫ গ্রেডের রডের দাম প্রতি টনে ১০ হাজার কমে এখন দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ হাজার টাকা।