ব্যাংকের শেয়ার লেনদেনে খড়া!
ঢাকা: পুঁজিবাজারে লেনদেনে এক সময় নেতৃত্ব দিলেও বর্তমান ব্যাংকের শেয়ার লেনদেনে খড়া যাচ্ছে। পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন ধরে মন্দা অবস্থা বিরাজ করায় ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না ব্যাংকের শেয়ার।
বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি ও প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর আয় কমায় বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে এর প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেনে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত সোমবার (৪ জুন) মোট লেনদেনে ব্যাংকিং খাতের অবদান ছিল মাত্র ৬ শতাংশ। ওইদিন ডিএসইতে ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি টাকার। এর আগের দিন (৩ জুন) মোট লেনদেনের মাত্র ৫ শতাংশ ব্যাংক শেয়ারের দখলে ছিল। ওই দিন ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি টাকার। অথচ এক সময় লেনদেনে ব্যাংকিং খাত শীর্ষ স্থান দখল করে থাকতো। গত এক বছরের মধ্যে মে মাসের মাঝামাঝি ব্যাংকের শেয়ারে বড় ধরনের পতন হয়েছে। তখন বাজারে লেনদেনেও বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকিং খাত সামান্য ঘুরে দাঁড়ালেও লেনদেনে খড়া কাটানো সম্ভব হয়নি।
তথ্যমতে, সোমবার (৪ জুন) সিটি ব্যাংকের প্রতিটি শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা ৭০ পয়সায়। চলতি বছরের প্রথম কার্যদিবসে ব্যাংকটির শেয়ার বিক্রি হয়েছিল ৫২ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ গত পাঁচ মাসে ব্যাংকটির শেয়ার দর প্রায় ৩৮ শতাংশ কমেছে। অপরদিকে, সোমবার ডাচ-বাংলা ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি হয় ১১৭ টাকা ৪০ পয়সায়। চলতি বছরের প্রথম দিন ব্যাংকটির শেয়ার বিক্রি হয় ১৪৮ টাকা ৯০ পয়সায়। পরবর্তীতে এ ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়ে সর্বোচ্চ ১৫৩ টাকা ৮০ পয়সা লেনদেন হয়। তবে পরবর্তীতে এ ব্যাংকের শেয়ার দাম প্রায় ২২ শতাংশ কমে যায়।
শুধু সিটি বা ডাচ-বাংলা নয় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ার দরেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আর শেয়ার দরের এই খড়া কাটিয়ে উঠতে পারছে না ব্যাংকিং খাত। উল্লেখ্য, বর্তমানে ৩০টি ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত।
ব্যাংকের শেয়ারের দরপতন সম্পর্কে জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি এবং প্রথম প্রান্তিকে অধিকাংশ ব্যাংকের আয় কমায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন না। ফলে ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন খড়া যাচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ-২০১৮) ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপী ঋণের পরিমান ছিল ৭৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা।