চট্টগ্রাম বন্দর ‘তিন’ বছর ভুল পথে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের আগামীর বন্দর হিসেবে পরিচিত বে টার্মিনাল। নগরীর ইপিজেডের পেছন থেকে দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় সাগরের ভেতরের অংশে ২৩০০ একর ভূমিতে গড়ে উঠতে যাচ্ছে বে টার্মিনাল। দিন রাত ২৪ ঘন্টা নেভিগেশন সুবিধার সম্ভাবনার এই টার্মিনালের ভূমি বরাদ্দ প্রক্রিয়া ঘুরছে তিন বছর ধরে। ২০১৫ সালে ভূমি বন্দোবস্তের আবেদন করার পর এখন আবার তা অধিগ্রহণের আওতায় যাচ্ছে।

বন্দোবস্ত হিসেবে আবেদনের তিন বছর পর একই ভূমি বরাদ্দের জন্য আবার অধিগ্রহণে কেন যেতে হচ্ছে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াসের কথা।

দীর্ঘদিন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হিসেবে কর্মরত থাকা মোহাম্মদ ইলিয়াস চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনালের জন্য ভূমি বরাদ্দের জন্য আবেদন করা বন্দোবস্তের পরিবর্তে অধিগ্রহণের আওতায় আবেদন করার পরামর্শ দেন।

এবিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জুলফিকার আজিজ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনালের জন্য ৬৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। কিন্তু আরো ৮২০ একর ভূমি বন্দোবস্তের মাধ্যমে বরাদ্দ পেতে আবেদন করা হয়েছিল। এখন এই ভূমিও অধিগ্রহণের আওতায় আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের পরামর্শে আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছিলাম, মন্ত্রণালয়ও অনুমোদন দিয়েছে অধিগ্রহণের মাধ্যমে আবেদন করার জন্য।’

কিন্তু তিন বছর পর আবার প্রথম থেকে শুরু করতে কেন হলো জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, বে টার্মিনালের এই জায়গাটি আগে অনেককে ইজারার মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এসব জায়গা নিয়ে মামলাও রয়েছে। তাই ভূমি আইন অনুযায়ী এগুলো বন্দোবস্তে যাওয়ার সুযোগ নেই। এজন্য বন্দোবস্তের পরিবর্তে অধিগ্রহণে গেলে দ্রুত ভূমির বরাদ্দ পাওয়া যাবে। এজন্য অধিগ্রহণের মাধ্যমে বরাদ্দ পেতে বন্দরকে বলেছিলাম।

এদিকে বন্দর সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নৌ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে। জেলা প্রশাসন তা বরাদ্দের অনুমোদনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এখন ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটিতে বিষয়টি উত্থাপিত হবে।

জানা যায়, ২২ বছর আগে পতেঙ্গা থেকে দক্ষিণ কাট্টলী পর্যন্ত সাগরের উপকূলের খাসজমিগুলো প্রায় ৫০টি ব্লকে ভাগ করে জেলা প্রশাসন বরাদ্দ দিয়েছিল। ১৯৯৬-৯৭ সালের দিকে রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে চিংড়ি চাষের জন্য ৯৯ বছরে মেয়াদে ইজারা হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয় এসব ভূমি। কথা হয় বরাদ্দপ্রাপ্তদের মধ্যে ১০ একর জায়গা বরাদ্দ পাওয়া মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সাথে।

তিনি বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়ে সরকারের কাছ থেকে ভূমি বরাদ্দ নিয়েছি। সরকার রেজিস্ট্রি দলিলের মাধ্যমে আমাদেরকে তা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন এই জমি জেলা প্রশাসন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে কিভাবে বরাদ্দ দেবে? এক জমি কি দুই জায়গায় বরাদ্দ দেয়া যায়?’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশের উন্নয়নে বন্দরকে বরাদ্দ দেয়া হলে আমাদের আপত্তি নাই। তবে বর্তমান মৌজামূল্যে আমাদেরকে ভূমির মূল্যবাবদ অর্থ বুঝিয়ে দেয়া হউক।‘

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হালিশহর ও দক্ষিণ কাট্টলী উপকূলে এধরনের প্রায় অর্ধশত লোককে এসব ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। কাউকে পাঁচ একর আবার কাউকে ১০ একর করে ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়। পরবর্তীতে সাগরের ভেতরের এসব ব্লকেই গড়ে তোলা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের মাছের খামার।

এবিষয়ে কথা হয় ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ( অধিগ্রহন-১) মির্জা তারিক হিকমতের সঙ্গে। উদাহরন হিসেবে তিনি বলেন,‘ সরকারের কোনো একটি সংস্থার জন্য এক হাজার একর ভূমি প্রয়োজন। যদি এই এক হাজার ভূমির সবটা সরকারের খাস জমি হয় তাহলে তা বন্দোবস্ত প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ নিতে হবে। আর যদি ৯৫০ একর জমি খাস ও ৫০ একর জমি ব্যাক্তি মালিকানাধীন, অথবা অল্প পরিমান জায়গাও ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকে তাহলে পুরো জায়গাটি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ নেয়ার সুযোগ রয়েছে।’

তাহলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বে টার্মিনালের জন্য ৮২০ একর জায়গা প্রথমে বন্দোবস্ত ও এখন অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যাচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানকার কিছু জায়গা জেলা প্রশাসন ৯৯ বছরের ইজারা দলিলের মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়েছিল। তাই এখন আর এখানে বন্দোবস্ত হবে না, এই ভূমি বরাদ্দ পেতে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।’

এদিকে বে টার্মিনালের নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপের কার্যক্রম শেষ করে জার্মানির হামবুর্গ পোর্ট কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান বন্দরের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্রেক ওয়াটার নির্মাণের মাধ্যমে বে টার্মিনাল গড়ে তোলবে। বে টার্মিনালে তিনটি টার্মিনাল থাকবে। একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও দুটি কনটেইনার টার্মিনাল। প্রাথমিকভাবে সবার আগে বে টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনারগুলো ডেলিভারি দেয়ার জন্য স্পেস তৈরি করা হবে। এতে বন্দরের জেটিতে প্রবেশ করা প্রতিদিন প্রায় ছয় হাজার ট্রক নগরীতে প্রবেশ করতে হবে না।

উল্লেখ্য, ইপিজেড থেকে দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট পর্যন্ত সাগরের ভেতরের প্রায় ২৩০০ একর জায়গায় নির্মিত হবে বে টার্মিনাল। জোয়ার-ভাটা, দিন-রাত, বাঁকা চ্যানেল কিংবা ড্রাফটের বিবেচনা কর্ণফুলী নদীর জেটিতে জাহাজ ভিড়তে হলেও বে-টার্মিনালের ক্ষেত্রে সেই সীমাবদ্ধতা নেই। বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর জেটিতে পৌছাতে একটি জাহাজকে ১৫ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে তা শূন্য কিলোমিটারের মধ্যেই বার্থিং করতে পারবে।

বে টার্মিনাল নির্মাণ হলে যেকোনো দৈর্ঘ্য ও প্রায় ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। বিপরীতে বর্তমান চ্যানেলে মাত্র ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ কর্ণফুলীতে প্রবেশ করতে পারে। সেইক্ষেত্রেও জাহাজকে দুটি বাঁক অতিক্রম করতে হয় এবং দিনের মাত্র চার ঘন্টা সময় পাওয়া যায়। কিন্তু বে টার্মিনালে ২৪ ঘন্টা জাহাজ পরিচালনা করা যাবে। বিদ্যমান জেটিতে একসাথে ১৬টি জাহাজ বার্থিং করা গেলেও বে-টার্মিনালে গড়ে প্রায় ৫০টি জাহাজ একইসাথে বার্থিং করা যাবে। বন্দরের জেটির দৈর্ঘ্য চার কিলোমিটার হলেও বে টার্মিনালের দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ল্যান্ড লর্ড পদ্ধতিতে চালু হতে যাওয়া বে টার্মিনাল চট্টগ্রামের গভীর সমুদ্র বন্দরের অভাব গোচাবে বলে বন্দর সংশ্লিষ্টদের ধারনা।

পতেঙ্গা ইপিজেডের পেছন থেকে দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট পর্যন্ত সাগরের অংশে ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে বে টার্মিনাল। এই বে টার্মিনালের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৬৮ একর ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ পেতে এবং ৮২০ একর ভূমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়য় বরাদ্দ পেতে ২০১৫ সালে আবেদন করা হয়েছিল। বন্দর কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৬৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটি অনুমোদন দেয়। সরকারের বিধি অনুযায়ী মৌজা মূল্যের তিনগুণ মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে এই ভূমি বরাদ্দ পাবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সে অনুযায়ী ফিল্ড বুক তৈরির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু টাকা পরিশোধের চিঠি ইস্যু বাকি রয়েছে। কিন্তু আটকে থাকে বন্দোবস্ত প্রক্রিয়ায় আবেদন করা ৮২০ একর ভূমির বরাদ্দ পেতে।

   

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিচ্ছে ৩ মেগা প্রকল্প



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন মেগা প্রকল্প বাংলাদেশের জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে বদলে দিতে যাচ্ছে। মেগা প্রকল্প তিনটি হলো, এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং), বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্প এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প।

এর মধ্যে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন ইতোমধ্যেই অপারেশনে এসেছে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন চলতি বছরেই শেষ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

এখন ভোক্তার হাতে জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বহুঘাট ঘুরতে হবে না। আবার বৃষ্টি-বাদল কিংবা হরতাল, ধর্মঘটেও জ্বালানি তেল সরবরাহ থাকবে নির্ভার। শুধু কী নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চয়তা, তাও নয়, এক এসপিএম বছরে সাশ্রয় করবে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি টাকা! কমে যাবে জ্বালানি তেলের সিস্টেম লসও।

জ্বালানি তেল পরিবহনের খোলনলচে পাল্টে দিচ্ছে মেগা তিন প্রকল্প

এজন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপন করা হয়েছে, এসপিএম উইথ ডাবল পাইপলাইন। এতদিন আমদানি করা জ্বালানি তেলের জাহাজ গভীর সমুদ্রে নোঙর করতো। সেখান থেকে লাইটার জাহাজে করে রিফাইনারি ট্যাংকে পৌঁছাতে সময় লাগত ১১, ১২ দিন। এসপিএম হওয়ায় সমপরিমাণ তেল পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। এতে করে মাদার ভেসেলের ওয়েটিং চার্জ এবং লাইটারেজ জাহাজের পরিবহন খরচ আর থাকছে না।

মহেশখালী দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে গভীর সমুদ্রে স্থাপন করা হয়েছে, ভাসমান বয়া। সেই বয়া থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের পৃথক দুটি পাইপলাইন পৌঁছে গেছে স্টোরেজ ট্যাংক টার্মিনালে। একটি ক্রড অয়েল সঞ্চালনের জন্য। আরেকটি দিয়ে সফলভাবে ডিজেল পরিবহন কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে বয়াতে এসে নোঙর করবে মাদার ভেসেল। সেখান থেকে পাাইপলাইনের মাধ্যমে কয়েক ঘণ্টায় তেল পৌঁছে যাবে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেলের প্রধান স্থাপনায়।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেল ব্যবস্থাপনা সাশ্রয়ী ও টেকসই করতে এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) কার্যকরী অবদান রাখবে। প্রকল্পটি চালু হলে বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ২শ ২০ কিলোমিটার পাইপলাইনে পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ৬টি বিশালাকৃতির স্টোরেজ ট্যাঙ্ক; যার মাধ্যমে বাংলাদেশের তেল মজুত সক্ষমতা পৌঁছে গেছে নতুন এক উচ্চতায়।

এসপিএম প্রকল্পের পরিচালক শরীফ হাসনাত বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বড় জাহাজ থেকে তেল খালাস করতে অন্তত ১১ দিন সময় লাগে। কখনো কখনো এই তেল খালাস করতে আরো সময় লেগে যায়। বিশেষ করে সমুদ্র উত্তাল হয়ে পড়লে তখন খালাস করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। জাহাজ মালিকদের সঙ্গে চুক্তির চেয়ে বেশি সময় লাগায় কখনো কখনো জরিমানা গুণতে হতো। এসপিএম প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ায় ২৮ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করা সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন জাহাজ ভাড়া কমে আসবে, অন্যদিকে তেল পরিবহনে সিস্টেম লস ও নানান ধরনের চুরিও প্রতিরোধ সম্ভবপর হবে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল উৎপাদন করে না। গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে প্রাপ্ত কনডেনসেট থেকে পেট্রোল এবং ৪০ শতাংশের মতো অকটেন জোগান আসে। বিপুল পরিমাণ ডিজেলসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করে জোগান দেওয়া হয়। বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানি করা হয়, নদীপথে। কিন্তু নদী বন্দরগুলোতে নাব্যতার অভাবে বড় বড় জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারে না। সে কারণে নির্ভর করতে হয় লাইটারেজ জাহাজের ওপর।

মেগা প্রকল্প বদলে দিচ্ছে জ্বালানি তেল পরিবহনের ব্যবস্থা

মাদারভেসেল থেকে লাইটার বা ছোট জাহাজে করে তেল আনা হয়, বিপিসি’র (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ডিপোতে।

বিপিসি থেকে আবার জাহাজে করে তেল দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া হয়। ক্ষেত্র বিশেষে রেলের ওয়াগন এবং ট্যাংকলরিতে করেও তেল পৌঁছাতে নানান রকম ঝাক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। বিষয়টি ছিল সময়সাপেক্ষ ও অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল। সেখানেও পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।

অবশেষে, ঢাকা-চট্টগ্রাম তেলের পাইপলাইন করার কাজও প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে প্রাক-সমীক্ষা শেষ হলেও নানা কারণে নির্ধারিত গতিতে চলতে পারেনি প্রকল্পটি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অর্থায়নে গৃহীত এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ২শ ৩৭ কিলোমিটার, কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার, ফতুল্লা থেকে থেকে গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। পাইপলাইনটি চালু হলে বছরে ৬৫ কোটি টাকা পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে বলে আশা করছে বিপিসি।

প্রকল্পের আওতায় ২শ ৩৭ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চট্টগ্রাম ডেচপার্স টার্মিনাল ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রিসিভিং পয়েন্টের ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। ডিসেম্বরের আগেই পাইপলাইনটি চালু করার বিষয়ে আশাবাদী জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ।

অন্যদিকে, দেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের জ্বালানি পরিবহন ব্যবস্থা ছিল খুবই জটিল ও বহুঘাট, হাত ঘুরে। লাইটারেজে করে তেল নেওয়া হতো। এছাড়াও ট্যাংকলরি, আরেকটি রুট হচ্ছে রেলওয়ের মাধ্যমে পৌঁছানো। এখন সেখানেও পরিবর্তন এনেছে, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন।

দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে জ্বালানি সরবরাহের জন্য ২০১৮ সালে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩ হাজার ৬শ ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ ৩১.৫০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের সময়কাল ছিল ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই পাইপলাইনটি চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত এই পাইপলাইনের কারণে উত্তরাঞ্চলের দৈনিক অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি মজুত সক্ষমতা বৃদ্ধি হবে। সহজে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করা, উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় কম খরচে এবং দ্রুততম উপায়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে এই পাইপ লাইনের কারণে।

;

বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে বাণিজ্য জোরদারে প্রতিষ্ঠিত হলো ‘জেবিসি’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত ও জোরদার করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিলের (জেবিসি) প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এ উপলক্ষ্যে চুক্তি সই করেছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কাতারের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কিউসিসিআই)।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং কিউসিসিআই চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। মূলত বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মধ্যে বাণিজ্য জোরদার করতে এই চুক্তি স্বাক্ষ্যরিত হয়।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে জেবিসি প্রতিষ্ঠা দুই দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। এ চুক্তির আওতায় কাতারের ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি বাংলাদেশী ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের পক্ষেও কাতারের রপ্তানি বাজার ধরা আরও সহজতর হবে এবং কাতার থেকে জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি সহজ হবে। একইসঙ্গে জেবিসির মাধ্যমে কাতারের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই ও কিউবিসিসিআই’র মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও কাতারের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর, সেবা এবং অন্যান্য শিল্প খাতে বাণিজ্য কার্যক্রম জোরদারের একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল।

এফবিসিসিআই এবং কিউসিসিআই উভয়ই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং পরিষেবা সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে উপকৃত হবে। পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসায়ীক তথ্যের আদান-প্রদান, সংশ্লিষ্ট সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দেওয়া, প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে জেবিসি।

এছাড়া উভয় পক্ষই বাণিজ্য উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য যৌথ বৈঠক আয়োজন করতে পারবে। চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনে এফবিসিসিআই ও কিউসিসিআই সাব-কমিটি ও টাস্কফোর্স গঠন করতে পারবে।

 

;

সোনার দাম কমেছে ভরিতে ৩১৩৮ টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মাসে তিন দফা বৃদ্ধির পরে দেশের বাজারে সোনার দাম ভরিতে ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়েছে। তাতে ভালো মানের, অর্থাৎ হল-মার্ক করা ২২ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকায়। নতুন এ দাম আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে কার্যকর হবে ।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে খাঁটি সোনার দাম কমেছে, সে জন্য সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৯৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৬ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২১ এপ্রিল একদিনের ব্যবধানে ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা সেদিন বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হয়েছিল।

তার আগে, ২০ এপ্রিল সোনার দাম ক‌মিয়ে‌ছিল বাজুস। যা ওইদিনই কার্যকর হয়। ওই দাম অনুযায়ী রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ছিল ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা।

;

বোয়িং

৬ ড্রিমলাইনার নিয়ে শঙ্কা, কী আপডেট বিমানের



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

বিশ্বের সর্বাধুনিক উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৮৭ ‘ড্রিমলাইনার’-এর নির্মাণে ত্রুটিপূর্ণ রয়েছে বলে দাবি করে এই মডেলের সব উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বোয়িংয়ের সাবেক প্রকৌশলী স্যাম সাহেলপৌর সম্প্রতি এ কথা বলায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ওই প্রকৌশলী অভিযোগ করেছেন, বোয়িং ৮৭৮ ড্রিমলাইনার ছাড়া বোয়িং ৭৭৭ অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে সব উড়োজাহাজের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের ঝুঁকি বিপর্যকর মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে।

স্যাম এটাও বলেন, আমি কখনোই উড়োজাহাজের এমন গুরুতর অবস্থা দেখিনি। তাই, কখনোই আমার পরিবারের সদস্যদের বোয়িং ড্রিমলাইনারে উঠতে দেবো না।

এই ঘটনার পর বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

এরপর বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিউল আজিম জানিয়েছেন, এ বিষয়ে বিমানের পক্ষ থেকে বোয়িংয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কোনো আপডেট পেলে মন্ত্রীকে জানাবো।

পরবর্তীতে মন্ত্রী বলেছেন, বিমানের বহরে থাকা ‘ড্রিমলাইনার’ উড়োজাহাজগুলো নতুন হওয়ায় আপাতত কারিগরি সমস্যা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বোয়িংয়ের সঙ্গে দ্রুত কথা বলে বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। কারণ, বাংলাদেশ সরকার ও বিমানের কাছে যাত্রীদের নিরাপত্তাই মুখ্য বিষয়।

ড্রিমলাইনার কতটা নতুন
বিমানমন্ত্রী ফারুক খান বোয়িংয়ের ত্রুটির বিষয়ে ত্বরিত নির্দেশনা দিয়েছেন। এটি যেমন প্রশংসিত, তেমনি তিনি বলেছেন, ‘ড্রিমলাইনার’-এর উড়োজাহাজগুলো নতুন হওয়ায় এর কারিগরি ত্রুটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

বোয়িং কোম্পানির উড়োজাহাজ, ছবি- সংগৃহীত

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ২০১৮ সালের আগস্টে দেশে প্রথম ড্রিমলাইনার অবতরণ করে। এরপর একে একে বিমানের বহরে যুক্ত হতে থাকে ‘ড্রিমলাইনার’-এর উড়োজাহাজগুলো। সর্বশেষ, ‘ড্রিমলাইনার’টি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। সে হিসাবে এসব উড়োজাহাজ পুরোপুরি নতুন নয়।

দুর্ঘটনা পিছু ছাড়ছে না বোয়িংকে
মাঝ আকাশে আলাস্কা এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের দরজা খুলে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে তোলপাড় হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় এলো একই কোম্পানির ‘ড্রিমলাইনার’ মডেলের উড়োজাহাজগুলো।

‘ম্যাক্স’-এর ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭-৮০০ উড়োজাহাজের জানালায় ফাটলের ঘটনায় জাপানের তোয়ামা বিমানবন্দর থেকে নিপ্পন এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজটি ছেড়ে গিয়ে দ্রুতই আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসে। দুটি ঘটনাতেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় উড়োজাহাজ দুটি। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে বোয়িং ৭৪৭-এর একটি উড়োজাহাজে মাঝ আকাশে আগুন লাগে।

কেন বিমানের ড্রিমলাইনারের উইন্ডশিল্ডে ফাটল
বোয়িংয়ের উড়োজাহাজের দুর্ঘটনার ঝাপটা এসে লেগেছে বিমানেরও। গত জানুয়ারিতে বিমানের বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজের উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেয়।

দাম্মামগামী উড়োজাহাজটি দুই ঘণ্টা ফ্লাই করার পর ফের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরে আসে। বোয়িংটির পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন তানিয়া রেজা। উড়োজাহাজটি ২৮৫ জন যাত্রী নিয়ে ফের ঢাকায় অবতরণ করতে সক্ষম হয়।

এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণ করে। ওই উড়োজাহাজের উইন্ডশিল্ডেও ফাটল দেখা দিয়েছিল। যদিও সেটি বিমানের নিজস্ব উড়োজাহাজ নয়। এটি লিজে আনা হয়েছিল।

উইন্ডশিল্ডে ফাটলের বিষয়ে এক বৈমানিক বলেন, উইন্ডশিল্ডে ফাটল সচরাচর ঘটে না। মাঝ আকাশে উইন্ডশিল্ডে ফাটল অবশ্যই ভীতিকর। উইন্ডশিল্ড ভেঙে গেলে উড়োজাহাজের ভেতরে চাপ কমে তা ভারসাম্যহীন হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

বিমানের প্রকৌশল পরিদপ্তরের পরিচালক এয়ার কমোডর মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, চার বছরের মাথায় সাধারণত উড়োজাহাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা না।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
এ বিষয়ে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘বোয়িং ম্যাক্স’ দুর্ঘটনার পর বোয়িংয়ের নিরাপত্তা ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এবার আবার নতুন করে ‘ড্রিমলাইনার’-এর নিরাপত্তার ইস্যুটি সামনে এলো। তাই, এটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে উত্থাপিত বিষয়টির সুরাহা করা উচিত।

 

;