২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন হবে তো?
ঢাকা: এই শিশুটি জানে না, সারাদেশে ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা নিরূপণে জরিপ হবে। মাত্র কদিন আগে ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের খবরও জানা নেই এই শিশু শ্রমিকের।
শুক্রবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর শ্যামলী রিং রোডের হক সাহেবের গ্যারেজ এলাকার শিশুটির মতো হাজার হাজার শিশু-কিশোর বিভিন্ন স্থানে নিয়োজিত আছে বিপজ্জনক পেশায়। মোটর গ্যারেজ, ওয়েলডিং, কামারশালা, গ্রিল ও লেদ মেশিন পরিচালনায় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে অসংখ্য শিশু-কিশোর। কিন্তু সরকারের কাছে শিশু শ্রমিকের মোট সংখ্যা বিষয়ে কোনও তথ্য নেই।
ফলে সবার মধ্যে প্রশ্ন, ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন হবে তো? কারণ, নানা রিপোর্ট ও গবেষণায় জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার বাস, টেম্পু পরিচালনায় কিংবা পুরনো ঢাকার নানা কারখানায় মারাত্মক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে অসংখ্য শিশু-কিশোরদের।
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে জাহাজ ভাঙা এবং অন্যান্য বড় শিল্পে শিশু-কিশোরদের কাজ করতে দেখা যায়। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে নানা ধরনের বিপদ ও ঝু্ঁকি বহুল কাজে শিশু-কিশোরদের নিয়োগ দেওয়া এখনো বন্ধ করা যায় নি। একই পরিস্থিতি চলছে দেশের প্রায়-সর্বত্র।
বাংলাদেশে শিশুশ্রম ও বিপজ্জনক কাজে শিশু- কিশোরদের নিয়োগ প্রতিরোধে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে জানান, ' ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা জানতে জরিপ কার্যক্রম নেয়ার জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) অনুরোধ করবে শ্রম মন্ত্রণালয়।'
তিনি বলেন, ‘যে কোনো উপায়ে ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে সরকার দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। এ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার ২৮৫ কোটি টাকার তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা যায়, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসন করা হবে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নানামুখী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।'
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের পর সরকারিভাবে শিশু শ্রমের ওপর কোনো জরিপ হয়নি। ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে হালনাগাদ তথ্যের প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে সারাদেশে ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কী পরিমাণ শিশু নিয়োজিত, সেই বিষয়ে একটি জরিপ কার্যক্রম গ্রহণে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে নিয়ে কাজ করতে চায় মন্ত্রণালয়। ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসনের লক্ষ্যে গৃহীত হবে আরও কিছু কার্যক্রম।